সবকিছু অন্ধকার হতে শুরু , অন্ধকারেই শেষ... আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বাংলাদেশে কিছু লোক আছে যারা কিছু না বুঝেই পাব্লিক সেন্টিমেন্টের সাথে মাথা দুলাতে শুরু করে, কিন্তু ভিতরটা তলায় দেখে না!
ওহ ভুলেই গিয়েছিলাম এই জন্যে বাঙ্গালীকে বলে "হুজুগে বাঙ্গালী", খেয়াল করবেন কিন্তু কোন জাতিকেই কিন্তু এই শব্দে ভুষিত করা হয়ে না, শুধুমাত্র বাঙ্গালী কেই।
প্রমান চান এই নির্মম সত্যের?
আরে আপনি গত ৬ মাসের ফেসবুক দেখলেই প্রমান পেয়ে যাবেন! যা কিছু নিয়ে ঘটনা হয়েছে, সেইটা নিয়েই পাব্লিক হুজুগে ফাল পাড়সে! পজিটিভ ঘটনা মূহুর্তে হয়ে গেছে নেগেটিভ! সবার চোখের মনি হয়ে গেছে জাতীয় শত্রু!
আমি যেটা বুঝি ডঃ ইউনুস কে নিয়ে যে সমালোচনা সেটাও এই হুজুগে বাঙ্গালীর চিলে কান নিয়েছে টাইপ কর্মতৎপরতার ফল। দেশের যেই অংশ ডঃ ইউনুসের সমালোচনা করে, আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি সেই অংশ কোনদিন গ্রামীন ব্যাংক কি করেছে তা নিজে দেখা নাই। তাদের বৃহৎ অংশ গ্রামেই যায় নাই! তারা এমন কি জানে না হাট কি বা পানি সেচা কি বা কাকে বলে! কিন্তু তারা ফেসবুকের সামনে বসে থেকে দেশ উদ্ধার করে ফেলে, একজন স্কলারকে তুলাধুনা করে ফেলে যেনো তারা নিজেরা কোন MIT বা Harvard গ্রাজুয়েট! প্রকৃত পক্ষে তাদের কারো কারো মার্কশীট পাব্লিকের সামনে আনার মত নয়, কেউ কেউ তো ভার্সিটিতে পা ই রাখতে পারে নাই! অথচ আমার পর্যবেক্ষন বলছে, যারা দেশের বাইরে আছে বা বাংলাদেশী স্কলার তারা সর্বদা ডঃ ইউনুস কে খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখে, হয়তো তারা জানেন একেকটা একাডেমিক ক্রেষ্ট কত কষ্ট করে, কত রিসার্চ, থিসিস জমা দিয়ে নিয়ে আসতে হয়। এতো আর দেশের চিপা গলির প্রাইভেট ভার্সিটি না, যে সেমিষ্টার ফী টা যোগাড় হলেই সার্টিফিকেট দিয়ে দিবে বা রাজনৈতিক ক্যাডার হলেই ফর্ম ফিলাপ করতে দিবে!
বাংলাদেশে ঋন ব্যবস্থা খুবই আগোছালো একটা ব্যাপার।
এই ব্যপারটা একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া ও তৃনমূল পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলো গ্রামীন ব্যাংক। আপনি যে কোন ব্যাংকের সাথে, বিশেষত সরকারী ব্যাংকের সাথে তুলনা করুন, হাজারে হাজার ঋন খেলাপীর ভারে এত ন্যুজ্ব, অথচ গ্রামীন ব্যাংকের ঋনখেলাপী গ্রাহক যথেষ্টই কম! হ্যাঁ বলতে পারেন এরা পাওনা আদায় যথেষ্টই কঠোর, কিন্তু বিপরীত দিকটা কিন্তু কেউ দেখে না! গ্রামীন ব্যাংক থেকে কিন্তু ঋন পাওয়া তুলনা মূলক সহজ, এখন সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আপনি ঋন নিবেন, কিন্তু তা পরিশোধ না করে হাউজি খেলে বেড়াবেন, তা তো হয় না! প্রত্যেকটি কর্মেরই প্রতিফল আছে তাই না?বেশ কিছুদিন আগে আমি একটি ছেলে কথা জেনেছিলাম, সে কৃতজ্ঞ কারন তার বিদেশ যাবার অর্থ দিয়েছিলো গ্রামীন ব্যাংক, খুবই অল্প সময়ে। একবার ভাবুন তো কোন কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে এই অর্থ নিতে হলে আপনাকে ঠিক কত গুলো কাগজ দিতে হতো, সাথে কত গ্যারান্টি?
ফেসবুকে Arif R Hossain ভাই একটা কথা বলেছেন, খুবই সত্যি কথা, সেটা হলো "“খালি পেটে, দেশপ্রেম হয় না”। আমি স্বীকার করি গ্রামীন ব্যাংক কোন দাতা সংস্থা না, কিন্তু তাদের তো প্রতিষ্ঠান চালাতে হচ্ছে। তারা দেশের তৃনমূল পর্যায়ে কাজ করছে, মানুষের স্বনির্ভরতার জন্য কাজ করছে,আর এই পর্যায়ে তারা এসেছে ডঃ ইউনুসের দক্ষ পরিচালনায়।
আজ ১ বছরে মাথায় সরকার গ্রামীন ব্যাংক ভেঙ্গে ১৯ টুকরা করছে, একবার ভাবুন তাহলে গত বিশ বছরে সরকার একে কয় টুকরা করতো?
আমদের সমস্যা হলো, আমদের যখনই প্রয়োজন ফুরায়ে যায় আমরা যে কোন ব্যাক্তিকেই আস্তাকুরে ছুড়ে ফেলতে খুবই পারদর্শী! যুগে যুগেই সেই পারদর্শীতা আমরা দেখিয়ে এসেছি, এখন এই মনোভাব থেকে আমদের বের হয়ে আসা দরকার। যদি না পারি, তাহলে আমরা নিজের দায়ী করাও সুযোগ পাবো না! তার আগেই ইতিহাস পুরা বাংলাদেশকেই আস্তাকূঁড়ে ঠাই দিবে! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।