D:\Picnic-2010\503.jpg আমাদের দেশে অনিয়মটিই যেন নিয়মে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। যে যেখানে সুযোগ পাচ্ছে সব লুটিয়ে নিচ্ছে। সুযোগ পেলেই যেন অন্যকে ঠকাতে হবে, ধোকা দিতে হবে, নিজের মতো করে সুবিধা আদায় করে নিতে হবে। সেটি ন্যায় হোক কিংবা অন্যায় হোক, কেউ এর ধার ধারছে না। একবার নিজের বিবেককে প্রশ্নও করেনা আমি কী ঠিক করছি? না-কী বেঠিক করছি? আমাদের দেশ থেকে কী বিবেক নামক শব্দটি হারিয়ে যাবে? এদেশে সঠিক বিবেকসম্পন্ন লোকদের সংখ্যা কী দিনকে-দিন কমে যাচ্ছে? না-কী আমরা সচেতনভাবে/সুকৌশলে তাঁদেরকে অবহেলা করে কমিয়ে দিচ্ছি? এর কী কোন প্রতিকার হবেনা? এর থেকে কী আমরা মুক্তি পাবো না? আর, যদি আমরা এর থেকে মুক্তি না পেয়েই থাকি, তাহলে ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত প্রাণ-প্রিয় আমাদের এ দেশটির ভবিষ্যত কী? আমরা কী মুক্তি সংগ্রামে শহীদ জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের কাছে জবাব দিতে পারবো? আমরা কী আমাদের বিবেককে প্রশ্ন করতে পারিনা? আমরা কী সবসময় মুখে এক কথা বলব আর কর্মে অন্যটির প্রতিফলন ঘটাবো? এর থেকে আমাদেরকে অব্শ্যই বেরিয়ে আসতে হবে।
আমাদের দেশে অনিয়মগুলো দু'টি উপায়ে হয়ে থাকে, এর একটি হচ্ছে- বুদ্ধিভিত্তিক, আর অন্যটি হচ্ছে- আর্থিক। বুদ্ধিভিত্তিক অনিয়মটি আমার কাছে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মনে হয়। কারণ এ অনিয়মটি একটি সভ্য জাতিকে অসভ্যতে পরিণত কিংবা ধ্বংস করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। আর এ অনিয়মটি ঘটে নানান প্রতিষ্ঠানে এমনকি আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও এর বাইরে নয়। এ অনিয়মটি আমাদেরকে পিছনের দিকে ধাবিত করে।
সুতরাং জাতি হিসেবে আমাদেরকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত/অধিষ্ঠিত হতে হলে "বুদ্ধিভিত্তিক" অনিয়মের বিপক্ষে অবস্থান গড়ে তুলতে হবে। এখনোও যারা সুবিবেকসম্পন্ন লোক আছেন তাঁদেরকেই সবচেয়ে বেশী এগিয়ে আসতে হবে, কারণ জাতির জন্য তাঁদেরকে কিছু করতেই হবে। না হলে আমরা আমাদের শহীদদের রক্তের ঋণ কোনদিন শোধ করতে পারবো না। তারা আমাদের ক্ষমা করবেন না। আমি খুবই নিশ্চিত কিংবা আশবাদী এই ভেবে যে, আমাদের দেশে এখনো সৎ লোকের অভাব নেই।
এখানে উল্লেখ করা ভালো আমি সৎ লোক বলতে সেই লোকদেরকে বুঝাচ্ছি- যারা কর্মে নিষ্ঠাবান, আন্তরিক, জবাবদিহি এবং সৎ। সৎ বলতে শুধু দু-চারটা সত্য কথা বলাকে বুঝাচ্ছি না, অবশ্যই। আমি আশা রাখতে পারি- আমাদের দেশের সুশিক্ষিত, সুবিবেকসম্পন্ন লোক আমাদের জাতিকে রক্ষা করবেন। কারণ আশা নিয়েই আমরা বেঁচে থাকি।
আর্থিক অনিয়মটি সাধারণত আমাদের আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়ে থাকে।
সেটি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব। আমি এ অনিয়মকে কম গুরুত্ব দিচ্ছি না। সেটি অব্শ্যই অনিয়ম। তবে বুদ্ধিভিত্তিক অনিয়মটি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে অবশ্যই আর্থিক অনিয়মটিও কমে আসবে এবং একসময় অনিয়ম বলে কিছুই থাকবে না। সে শব্দটিই হয়তো জাদুঘরে বা অভিধান খুললে চোখে পড়তে পারে।
আমাদের মা, মাতৃভূমি এবং মাতৃভাষা'র এই প্রাণ প্রিয় দেশটিকে গড়ে তুলতে হলে অবশ্যই বুদ্ধিভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে। আর বুদ্ধিভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই "বুদ্ধিভিত্তিক" কারখানাগুলোকে সঠিক নিয়মের মধ্যে ফিরিয়ে আনতে হবে। আর বুদ্ধিভিত্তিক কারখানাগুলো ঠিক করতে পারলেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসবে জাতির শ্রেষ্ট সন্তানগুলি, যারা সকল অনিয়মকে পিছনে ফেলে দেশটাকে দূর্ণীতিমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, শিক্ষিত ও সমৃদ্ধশালী জাতি তথা ডিজিটাল সোনার বাংলা উপহার দিবে। আমরা সেই দিনটির অপেক্ষায় রইলাম।
সবশেষে- সঠিক স্থানে সঠিক লোকের মূল্যায়ন এবং তোষামোদকারীদের অবমূল্যায়ন কামনা করে শেষ করছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।