আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইনোসেন্স অফ ইসলাম এবং আমাদের বুদ্ধিভিত্তিক ব্যার্থতা

স্বাগতম আমার নষ্ট করা কাগজের ভীড়ে ।  বর্তমান সময়ের হটকেক "ইনোসেন্স অফ ইসলাম" নামের একটি চলচ্চিত্র । মাত্র ১৩ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি আঘাত হেনেছে লাখো কোটি মুসলিমের হৃদয়ে কারন প্রত্যক্ষভাবেই মুভিটিতে ইনসাল্টেড হয়েছেন মহানবী সাঃ । আর এর প্রতিবাদে রাজপথ উত্তাল করেছে মুসলিমরা । লিবিয়াতে খুন হয়েছে একজন ইহুদী রাষ্ট্রদূত ।

প্রতিবাদে আট আনাই পূরন হয়েছে তাতে । বাকিটাও পূরন হতো যদি ইউটিউব থেকে মুভিটাকে অপসারন করা যেত । কিন্তু তা আর হয় নি । কি আর করা ? ধর্মপ্রান মুমিনরা খুশিতে গদগদ হয়ে দেখল ইসলামিক (!) দেশগুলোতে ঘটা করা নিষিদ্ধ করা হলো ইউটিউব ,গুগল এবং জিমেইলকে । আহা ,কি আনন্দ আকাশে বাতাসে ! প্রথমত ,মুভিটিতে যা করা হয়েছে তা হল নগন্য মিথ্যাচার ।

মহানবীর জীবনচরিতটাকে বিকৃত করা হয়েছে এবং মেকাররা স্বীকার করেছেন তা মুসলিমদের আঘাত করতেই এটি তৈরি করেছেন । ফলে মুভিটি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মত এমনকি দাংগায় উস্কানীমূলকও বটে । এ ঘটনায় প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে এবং পরবর্তীতে কয়েকটা পশ্চিমা দেশেও । আগেই বলেছি ,লিবিয়ায় খুন হন একজন রাষ্ট্রদূত । প্রশ্ন হচ্ছে প্রতিবাদের এই রুপটা কতটুকু যৌক্তিক আর এর সাইড এফেক্টটা কি হতে পারে ? লিবিয়াতে রাষ্ট্রদূত খুন হওয়া সহ পুরো বিষয়টাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া চলছে পুরো বিশ্বে ।

এই ঘটনা আবারো ইসলামের বিরুদ্ধে কথিত "জংগীবাদি ধর্ম" ধারনায় জ্বালানী যোগাবে । ঐসব লোকই এখন সারা পৃথিবীর কাছে খারাপ মানুষে পরিনত হয়েছে যারা নবী সাঃ এর জন্য মনে দরদ পোষন করে । ইনোসেন্স অফ ইসলামে ইসলামকে হঠকারী ধর্ম হিসেবে প্রদর্শন করা হয়েছে । আর আমরা তা প্রমান করলাম রাষ্ট্রদূত হত্যা করে । অথচ ইসলাম নিজেও কাজটিকে কোনভাবেই সমর্থন দিচ্ছে না ।

আর এদিক থেকে বুদ্ধিগতভাবে আমরা মূর্খতার পরিচয় দিলাম । দ্বিতীয় একটা ফলাফল দেখা যাচ্ছে যেটা বলতে গেলে চক্রান্তকারীদের জন্যে বোনাস বলা যায় । ব্লগ ,সোশাল নেটওয়াকিং সাইটগুলোতে হানা দিন । আপনি দেখতে পাবেন পুরো কমিউনিটি স্পষ্টত দুইভাগে ভাগ হয়ে গেছে । একদল প্রতিবাদীদের পক্ষে আর অপরদল প্রতিবাদী হওয়া স্বত্বেও অহিংসার পক্ষে ।

তারা একে অপরকে যুক্তি দিয়ে মারছেন । বাইরে তারা বিক্ষোভ করছে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে আর ব্লগে ,ফেবুতে তারা লড়ছে স্বজাতীদের বিরুদ্ধে । গান্ধীজিকে এনেও ব্যাবহার করা হচ্ছে । বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হল ইউটিউব এবং গুগলকে । কারন তারা নিন্দিত চলচ্চিত্রটির ট্রেইলার সাইট থেকে সরায় নি ।

অথচ খুব সহজ কথা ,পর্ন যেমন আপনি না দেখতে চাইলেই দেখবেন না ঠিক তেমনি ইউটিউব কিংবা গুগলে দেখতে না চাইলে তা আপনাকে দেখাবে না । তাহলে কেন তাদেরকে বৃথা ব্যান করা ? শর্ষের ভিতরেই ভূত আছে । ঐ ভূতের কি করা ? প্রতিবাদের কার্যকরী উপায়টা বের করতে হবে । বিক্ষোভ হচ্ছে ,হোক । কিন্তু কোন সহিংসতার পক্ষে নই আমি ।

ইসলাম শান্তির ধর্ম এ কথাটা মাথায় রেখে প্রতিবাদের উপায় খুজঁতে হবে । আমাদের উচিত তাদের প্রোডাক্টগুলোকে বয়কট করা । এতে বেশ কয়েকটা উপকার হবে । যদি সকল মুসলিম দেশ একত্রে এ কাজটা করতে পারে তবে আমাদের ঐক্য উঠে আসবে পশ্চিমাদের সামনে । দ্বিতীয়ত ,তাতে প্রতিটি মুসলিম দেশে নিজস্ব প্রোডাক্টগুলোর প্রতি আস্থা সৃষ্টির সুযোগ হবে ।

তৃতিয়ত ,এতে করে হয়তো আমরা মুভিটির বিরুদ্ধে একশান নিতে বাধ্য করতে পারি । আমি জানি সবকিছু অত সহজ না । এর মাধ্যমে হয়ত ষোল আনা অর্জিত হবে না কিন্তু অর্জনের খাতাটা একদম শূন্যও থাকবে না । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.