অহন থিক্কা সব শয়তানরে দৌরের উপর রাখুম। প্রতিবছর হজ্জে ‘জোড়া পবিত্র নগরী’ পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদিনা শরীফ-এ হাজী সাহেব উনাদের সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব হাজী সাহেব উনাদের স্থান সংকুলানের ব্যবস্থা করার অজুহাতে সউদী ওহাবী কর্তৃপক্ষ সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এসব বরকতময় স্মৃতিচিহ্ন বা নিদর্শন ধ্বংস করছে।
এই সম্প্রসারণ কাজ করতে গিয়ে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পবিত্র-বরকতময় প্রতœতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধ্বংস সাধন করছে। সউদী ওহাবী শাসকরা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার পবিত্র দুটি শহরে অবস্থিত সম্মানিত ইসলামী প্রতœতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি অনৈতিকভাবে অসম্মান প্রদর্শন করছে।
এই ওহাবী শাসকরা গত এক দশকে পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফ নগরীকে ইউরোপ-আমেরিকার অনুকরণে একটি আকাশচুম্বী বাণিজ্যিক মহানগরে রূপান্তর করেছে। এরই মধ্যে পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফ নগরদ্বয় ইউরোপ-আমেরিকার মডেলের অসংখ্য শপিং মল, বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ও পাঁচ তারকা হোটেলে ভরে গেছে। অর্থাৎ পবিত্র নগরদ্বয় উনাদেরকে ওহাবীরা বাণিজ্যিক ক্ষেত্র বানিয়ে ফেলেছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আধুনিকায়নের নামে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার হাজার বছরের পুরনো ৯৫ শতাংশ স্থাপনা কেবলমাত্র গত দুই দশকেই ওহাবীরা ধ্বংস করেছে, নিশ্চিহ্ন করেছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সূচনাকালের বরকতময় নিদর্শন মুবারকসহ কয়েক ডজন ঐতিহাসিক স্থান এরই মধ্যে মিশিয়ে দিয়েছে ওহাবীরা।
এছাড়া সম্প্রসারণ কাজের ধারাবাহিকতায় ‘বাইত-আল-মাউলিদ’ বা প্রিয়নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার বরকতময় স্থানটিও নিশ্চিহ্ন করে দিতে যাচ্ছে ওহাবীরা। (নাউযুবিল্লাহ!)
ওহাবী মাওলানারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণের ঘোর বিরোধী। ওহাবী মাওলানাদের দাবি, প্রিয়নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সম্পর্কিত নিদর্শনগুলো মক্কায় থাকার দরকার নেই (নাউযুবিল্লাহ!)। প্রিয়নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুশমন, শয়তানের শিং ‘ইবনে ওহাব নজদী’র বশংবদ, গুমরাহ সউদী ওহাবী সরকারের দাবি- “তারা বিশ্বনবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যুগ বা যামানা মুবারক উনার স্মারক স্থাপনা বা মুবারক স্মৃতিচিহ্নগুলো ধ্বংস করে সেগুলোর পূজা বন্ধের চেষ্টা করছে। ” (নাউযুবিল্লাহ!)
কিন্তু ওহাবীরা ফিকির করে না যে, সম্মানিত মসজিদুল হারাম শরীফ চত্বরে বরকতময় স্থান ও নিদর্শন চিহ্নিত করতে উসমানীয় ও আব্বাসীয় শাসনামলে স্থাপিত স্তম্ভগুলো অপসারণের ফলে ইসলামী ঐতিহ্য সম্পর্কে ভবিষ্যৎ মুসলিম প্রজন্ম নিরেট অজ্ঞ রয়ে যাবে।
রহমত-বরকত থেকে মুসলমানরা বঞ্চিত হবে এবং এর মাধ্যমে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। কারণ সম্মানিত মসজিদুল হারাম শরীফ উনার নির্দিষ্ট কিছু এলাকার স্মৃতি স্তম্ভের দারুণ তাৎপর্য ও গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে যেখানে প্রিয়নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বসতেন এবং নামায আদায় করতেন। অথচ এসব ঐতিহাসিক রেকর্ড মুছে ফেলা হচ্ছে। একজন নতুন মুসলমান কখনোই এমন কোনো সূত্র খুঁজে পাবে না, যাতে এসব জায়গা আবার খুঁজে বের করা যায়।
পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদিনা শরীফ সম্প্রসারণ করতে তো অনেক উপায় আছে, যাতে এসব ঐতিহাসিক ও বরকতময় স্থানও সংরক্ষিত ও চিহ্নিত রাখা যায়।
মূলত, সউদী ওহাবীরা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রকৃত বিধান উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং নিরেট গোঁড়ামির কারণে তারা সবখানেই মাত্রাতিরিক্তভাবে শিরক বা পূজার গন্ধ খুঁজে পায়। ওহাবীরা এতো গোঁড়া যে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ঐতিহ্যগত বিষয় বা বরকতময় স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাকেও তারা ইসলামবিরোধী বলে মনে করে। (নাউযুবিল্লাহ!)
উল্লেখ্য, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যুগে নির্মিত কয়েকটি বাড়ি ও মসজিদ এরই মধ্যে ধ্বংস করেছে ওহাবীরা। পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফ নগরীতে বাণিজ্যিক স্থাপনা বাড়াতে থাকায় তা এই সম্মানিত নগরীদ্বয়ের পবিত্র পরিচয় নষ্ট করছে বলে ধর্মপ্রাণ সুন্নী মুসলমানরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।