আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসুন, আসমার পাশে দাঁড়াই

" Life is just like surfing ,sometimes up and sometimes down" শহরের বিমান বন্দর সড়কের এক পাশে কক্সবাজার কেজি অ্যান্ড মডেল হাই স্কুল। এই স্কুলের মেধাবী ছাত্রী উন্মে আসমাউল হুসনা (১৭)। আগামি ১ ফেব্র“য়ারি থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। লাখো শিক্ষার্থীর মত এই আসমারও হলে বসে পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। ছিল উচ্চ শিক্ষিত হয়ে নিজেকে প্রতিষ্টিত করার এক বুক স্বপ্ন।

কিন্তু স্বপ্ন পুরনে বাদসাঁধে নিয়তি। আসমা এখন চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল পয়েন্ট হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। চঠপটে, সদা হাস্যোজ্জল এই ফুটফুটে মুখটি হঠাৎ থমকে যাওয়াতে হতাশায় ফেলে দেয় আপন-পর সবাইকে। কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল পয়েন্ট হাসপাতালে ছুটে যায় সহপাঠী নাদিয়া রশিদ। উদ্দেশ্য প্রিয় বান্ধবীকে এক নজর দেখা।

বিপদে পাশে থাকা। নাদিয়া কক্সবাজার শহরের ঝাউতলা গাড়ির মাঠ এলাকার মরহুম হাজি রশিদ আহমদের মেয়ে। সেও ওই স্কুলের ছাত্রী। নাদিয়া এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেও আসমা নিচ্ছেনা-এজন্য তার মনটা খারাপ। তাই খারাপ মনকে সান্তনা দিতে চট্টগ্রাম ছুটে চলা।

হাসপাতালের বেডে আসমার পড়ে থাকার করুন দৃশ্য দেখেই কেঁদে ফেলে নাদিয়া। কক্সবাজার ফিরে এসে নাদিয়া জানায়, আঙ্কেল, হাসপাতালের বেডে আসমা মরার মত হয়ে পড়ে আছে। সে আমাকেও চিনতে পারছেনা। কানের কাছে মুখ রেখে যখন নিজের নাম বল্লাম, তখন চিনতে পেরে কান্নাকাটি শুরু করে দিল। টাকার অভাবে কাছের বান্ধবীকে হারাতে হবে-ভাবতে কষ্ট হচ্ছে।

মেধাবী এই স্কুল ছাত্রীটিকে যেকোন উপায়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তার চিকিৎসার জন্য আমরা স্কুলের বান্ধবীরা হাতচাঁদা তুলছি। আপনারাও কিছু একটা করুন। সমাজের বিত্তবান, হদয়বান ব্যাক্তিদের তার পাশে দাঁড়ানো উচিত। আসলে নাদিয়া ঠিকই বলেছে।

প্রতিদিন আমরা অপ্রয়োজন খাতে কত টাকাই না খরচ করে ফেলি। ব্যবসা বাণিজ্যে কত টাকা লোকসান দিই, হারিয়ে ফেলি। আবার প্রচুর টাকা লাভও করি। নিজের বোন, মা ভেবে আমরা সবাই যদি অসুস্থ্য আসমার পাশে দাঁড়াই, অন্তত একটি ফুলতো বাঁচানো যেত। উন্মে আসমাউল হুসনার বাবা এস এম ছৈয়দ আহমদ।

তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সহকারী নার্স (তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী)। তিন মেয়ের মধ্যে আসমা সবার ছোট। এস এম ছৈয়দ আহমদ জানান, গত ২৮ জুলাই আসমার মাথায় রক্তক্ষরন জনিত আঘাত (হেড ইনজুরী) অনুভুত হয়। এরপর তাকে চট্টগ্রাম সেন্ট্রাল পয়েন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কামাল উদ্দিনের তত্বাবধানে এপর্যন্ত তার মাথায় সাতবার অস্ত্রোপচার হয়েছে।

কিন্তু তারপরও আসমা পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠছেনা। এখন পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে আসমা বমি করছে। কথা বলতে পারছেনা। কাউকে দেখলে হা করে চেয়ে থাকে।

মেধাবী এই মেয়েকে নিয়ে পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল রে ভাই-এই বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। খুব কাছের, অনেক আদরের কেউ এভাবে মৃত্যুর পথযাত্রী হলে এমনটা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আসমার মা গৃহিনি হামিদা বেগম। তিনিও মেয়ের কথা ভাবতে ভাবতে অস্থির, ঘনঘন মূর্ছা যাচ্ছেন। মেয়ের জন্য বিলাপ করতে করতে হামিদা বেগম বলেন, এপর্যন্ত ধারকর্জ করে আসমার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১১ লাখ টাকা খরচ করেছি।

এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য আসমাকে ভারতে নিয়ে যেতে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন। না হলে নাকি আসমাকে বাঁচানো যাবেনা। এজন্য দরকার আরও ১০-১৫ লাখ টাকা। এত টাকা আমরা কোথায় পাব ? টাকার অভাবে আমার আদরের এই মেয়েটি কি মারা যাবে ? এই দেশে এমন কোন হদয়বান মানুষ কি নাই-যাঁরা অর্থসহায়তা দিয়ে আমার মেয়েটিকে সুন্দর এই পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রাখতে পারেন ? এই বলে হামিদা আবার মুর্ছা যান। সিভিল সার্জন ডা. কাজল কান্তি বড়–য়া হাসপাতালের ওই কর্মচারীর মেয়ে আসমার জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য অর্থসহায়তা চেয়ে সম্প্রতি কক্সবাজার জেলার সকল হাসপাতাল, ক্লিনিকের চিকিৎসক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।

বলেছেন, গরীব কর্মচারীর পক্ষে মেয়ের চিকিৎসার জন্য এত বিপুল পরিমান অংকের টাকা যোগাড় করা মোঠেও সম্ভব নয়। তাই মানবিক কাজে সবাইকে অংশ নিতে হবে। নইলে মেয়েটিকে বাঁচানো যাবেনা। কক্সবাজার কেজি স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাহেরা বেগম বলেন একই কথা। আসমা মেধাবী মুখ।

তার রোগমুক্তির জন্য আমরা সব সময় দোয়া করছি। এই ফুলটিকে আমাদের বাঁচাতে হবে। গত দুদিন ধরে আসমার জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়ে স্থানীয় বিভিন্ন দৈনিকে পরিবারের পক্ষ থেকে মানবিক সাহায্যের আবেদন প্রকাশ চোখে পড়েছে। এতে কেউ সাড়া দিচ্ছেন কিনা আমার জানা নেই। তবে বিচ্ছিন্ন অথবা বিক্ষিপ্তভাবে অনেকে সাহায্যের হাত সম্প্রসারণ করতেও পারেন।

কিন্তু এতে মেয়েটিকে বাঁচানো সম্ভব হবে বলে মনে হয়না। কারণ ওই মেয়েটিকে বাঁচাতে প্রয়োজন ১০-১৫ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে সামাজিক ও নাগরিক দায়িত্ববোধ থেকে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন এনজিও, সামাজিক সংগঠন, ব্যবসায়ী, সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী, আইনজীবি, চিকিৎসক, সাংবাদিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ সবাই এগিয়ে আসতে পারেন। যে যেভাবে পারেন। আমরা সবাই যদি একটু উদার মনে চোখ তুলে তাকাই কক্সবাজার শহর থেকেই ১৫ লাখ টাকা তিন দিনে সংগ্রহ করা যায়।

প্রশাসনে এমন কর্তারাও আছেন-যাঁরা একটু ভাবলেই এই টাকা এসে যায়। সমাজে এমন ব্যাক্তিও রয়েছেন-যাঁরা এরকম কয়েকটা আসমাকে বাঁচিয়ে তোলার দায়িত্ব বাঁধে নিতে পারেন। আমাদের পাশে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, বঙ্গোপসাগর। এর বিশালতায় আসুন, আমাদের মনটাও একটু বড় করি। দাঁড়াই, অসহায় আসমার পাশে।

সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা ঃ এস এম ছৈয়দ আহমদ, সঞ্চয়ী হিসাব নং-১০৭৪০, সোনালী ব্যাংক, কক্সবাজার শাখা। মোবাইল-০১৮১৬-২৪৪০৮২, ০১৮২৩-৯৭২২১২। সূত্রঃ Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।