আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
গত বছর ২০১১ সালে লন্ডনে মার্ক ডুগান নামক এক কৃষ্ণাঙ্গ পুলিশের গুলিতে নিহত হলে সেখানে ভয়াবহ দাঙ্গা, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের কথা আমরা জানি। উক্ত দাঙ্গায় সমগ্র ইংল্যান্ড ২-৩ দিনের জন্য স্থবির হয়ে পড়লে ও অবস্থা আতংকজনক হলেও মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কতো দূর সেখানে ফেসবুক, ব্লগ ব্লক করা হয় নি। উক্ত ঘটনার দুটি দিক আছে একে যারা এই সকল সামাজিক ও ইন্টারনেটের মাধ্য ঘটনার প্রতিবাদ করছে এবং আরেক দল সুযোগ সন্ধানী অসৎ ব্যাক্তি ও গোষ্ঠী অহেতুক দাঙ্গা ও লুটপাট করছে। বৃটিশ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা এগুলোর উপর নজর রেখে তাদেরই গ্রেফতার করছে যারা অপরাধ করেছে এবং করতে উস্কানি বা উপদেশ দিয়েছে। কিন্তু কোনমতেই পুলিশ, সরকার ও প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরুনের কঠোর সমালোচনাকারীদের কিছু বলেনি।
এখানে সূনির্দিষ্ট ভাবে ফৌজদারী আইনানুযায়ী ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য ক্যামেরুনের রক্ষণশীল তথা টরি দলের বর্তমান শাসনামলের শুরু হতেই বৃটিশ নাগরিকদের ব্যাপক সুবিধা কাট-ছাট, ছাত্রদের শিক্ষায় অতিরিক্ত ফি ধার্য, এমন কি পুলিশ সদস্যদেরও ছাটাই করা হয়েছে। অনেকে এই দাঙ্গার জন্য সরকারের ভ্রান্ত বা বিতর্কিত পদক্ষেপকে দায়ী করে কঠোর ভাষা এমনকি গালি দিয়ে পোষ্ট কিংবা মন্তব্য ফেসবুক সহ বিভিন্ন সাইটে করলেও কাউকে পুলিশ গ্রেফতারতো দূর কারো একাউন্ট-মন্তব্য মুছে দেওয়া এবং ই-মেইলেও সতর্ক করে নি।
উপরের পৃথিবীর অন্যতম সভ্য-গণতান্ত্রিক দেশ বৃটেনে সাইবার জগত যেমন উন্মূক্ত তেমনি কোন অপরাধ, হুমকি এবং সরাসরি অপরাধ সংগঠনে উস্কানি দিলে তাকে শাস্তি তথা জেল-জরিমানার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা গেছে বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আইন নিজেদের স্বার্থে অপব্যাবহার ও অপপ্রয়োগ করেছে।
তবে সবচেয়ে খারাপ নজির হচ্ছে এই আওয়ামীলীগ, বাকশাল এবং পরবর্তীতে হাসিনার মতলবী। যেমন ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন। তারপর বাকশাল যা ১৯৭৫ সালে মাত্র ১৩ মিনিটে পাশ করে একই বছর ১৬ই জুন মাত্র চারটি সরকারী সংবাদপত্র রেখে বাকী সব নিষিদ্ধ করা হয়। উদ্দেশ্য একটাই মুজিব ও তার দলের অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিরোধতো দূর প্রতিবাদও যেন করতে না পারে। কিছু উদাহরণ দেই;
(১)১৯৭৪ সালের ৩০ শে মার্চ গার্ডিয়ান পত্রিকা লিখেছিল,“আলীমুদ্দিন ক্ষুধার্ত।
সে ছেঁড়া ছাতা মেরামত করে। বলল, যেদিন বেশী কাজ মেলে,সেদিন এক বেলা ভাত খাই। যেদিন তেমন কাজ পাই না সেদিন ভাতের বদলে চাপাতি খাই। আর এমন অনেক দিন যায় যেদিন কিছুই খেতে পাই না। ” তার দিকে এক নজর তাকালে বুঝা যায় সে সত্য কথাই বলছে।
সবুজ লুঙ্গির নীচে তার পা দু'টিতে মাংস আছে বলে মনে হয় না।
ঢাকার ৪০ মাইল উত্তরে মহকুমা শহর মানিকগঞ্জ। ১৫ হাজার লোকের বসতি। তাদের মধ্যে আলীমুদ্দিনের মত আরো অনেকে আছে। কোথাও একজন মোটা মানুষ চোখে পড়ে না।
কালু বিশ্বাস বলল,“আমাদের মেয়েরা লজ্জায় বের হয় না-তারা নগ্ন। ” আলীমুদ্দিনের কাহিনী গোটা মানিকগঞ্জের কাহিনী। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাহিনী,শত শত শহর বন্দরের কাহিনী। এ পর্যন্ত বিদেশ থেকে ৫০ লাখ টনেরও বেশী খাদ্যশস্য বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু যাদের জন্য পাঠানো হয়েছে তারা পায়নি।
”
(২)১৯৭৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তারিখে লন্ডনের নিউ স্টেট্সম্যান লিখেছিল,“বাংলাদেশ আজ বিপদজনক ভাবে অরাজকতার মুখোমুখি। লাখ লাখ লোক ক্ষুধার্ত। অনেকে না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। .. ক্ষুধার্ত মানুষের ভীড়ে ঢাকায় দম বন্ধ হয়ে আসে। .. বাংলাদেশ আজ দেউলিয়া।
গত আঠার মাসে চালের দাম চারগুণ বেড়েছে। সরকারি কর্মচারিদের মাইনের সবটুকু চলে যায় খাদ্য-সামগ্রী কিনতে। আর গরীবরা থাকে অনাহারে। কিন্তু বিপদ যতই ঘনিয়ে আসছে শেখ মুজিব ততই মনগড়া জগতে আশ্রয় নিচ্ছেন। ভাবছেন, দেশের লোক এখনও তাঁকে ভালবাসে;সমস্ত মুসিবতের জন্য পাকিস্তানই দায়ী।
আরো ভাবছেন,বাইরের দুনিয়া তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসবে এবং বাংলাদেশ উদ্ধার পাবে। নিছক দিবাস্বপ্ন.. দেশ যখন বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে,তখনও তিনি দিনের অর্ধেক ভাগ আওয়ামী লীগের চাইদের সাথে ঘরোয়া আলাপে কাটাচ্ছেন। .. তিনি আজ আত্মম্ভরিতার মধ্যে কয়েদী হয়ে চাটুকার ও পরগাছা পরিবেষ্টিত হয়ে আছেন। …সদ্য ফুলে-ফেঁপে ওঠা তরুণ বাঙালীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের শরাবখানায় ভীড় জমায়। তারা বেশ ভালই আছে।
এরাই ছিল মুক্তিযোদ্ধা- বাংলাদেশের বীর বাহিনী। .. এরাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বাছাই করা পোষ্য। আওয়ামী লীগের ওপর তলায় যারা আছেন তারা আরো জঘন্য। .. শুনতে রূঢ় হলেও কিসিঞ্জার ঠিকই বলেছেনঃ “বাংলাদেশ একটা আন্তর্জাতিক ভিক্ষার ঝুলি। ”
(৩)১৯৭৪ সালে ২রা অক্টোবর,লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় জেকুইস লেসলী লিখেছিলেন,“একজন মা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে,আর অসহায় দৃষ্টিতে তার মরণ-যন্ত্রণাকাতর চর্মসার শিশুটির দিকে তাকিয়ে আছে।
বিশ্বাস হতে চায় না, তাই কথাটি বোঝাবার জন্য জোর দিয়ে মাথা নেড়ে একজন ইউরোপীয়ান বললেন, সকালে তিনি অফিসে যাচ্ছিলেন,এমন সময় এক ভিখারি এসে হাজির। কোলে তার মৃত শিশু। ..বহু বিদেশী পর্যবেক্ষক মনে করেন বর্তমান দুর্ভিক্ষের জন্য বর্তমান সরকারই দায়ী। “দুর্ভিক্ষ বন্যার ফল ততটা নয়,যতটা মজুতদারী চোরাচালানের ফল”-বললেন স্থানীয় একজন অর্থনীতিবিদ। .. প্রতি বছর যে চাউল চোরাচালন হয়ে (ভারতে) যায় তার পরিমাণ ১০ লাখ টন।
”
(৪)১৯৭৪ সালের ২৫ অক্টোবর হংকং থেকে প্রকাশিত ফার ইস্টার্ণ ইকোনমিক রিভিয়্যূ পত্রিকায় লরেন্স লিফসুলজ লিখেছিলেন,“সেপ্টেম্বর তৃতীয় সপ্তাহে হঠাৎ করে চাউলের দাম মণ প্রতি ৪০০ টাকায় উঠে গেল। অর্থাৎ তিন বছরে আগে -স্বাধীনতার পূর্বে যে দাম ছিল - এই দাম তার দশ গুণ। এই মূল্যবৃদ্ধিকে এভাবে তুলনা করা যায় যে,এক মার্কিন পরিবার তিন বছর আগে যে রুটি ৪০ সেন্ট দিয়ে কিনেছে,তা আজ কিনছে ৪ পাউন্ড দিয়ে। কালোবাজারী অর্থনীতির কারসাজিতেই এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।
১৯৭৪ সালে বহু লোক না খেয়ে মরলেও মুজিব তার দলের লুটেরাদের জন্য এই অবস্থা তিনি তা মানতে নারাজ।
দেশীয় সাংবাদিকরাতো বটেই সরজমিনে দূরাবস্থা দেখা আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন পত্রিকার সাংবাদিকদেরও মিথ্যাবাদী বলতেন মুজিব(এন্টার প্রাইজ,রিভার সাইড,ক্যালিফোর্নিয়া, ২৯/০১/৭৫)।
কৃতজ্ঞতাঃ
জাহাঙ্গীর হোসেন দিপু
Click This Link
***********************
হাসিনা ও তার দলের অতীত দর্শন হতে দেখা যাচ্ছে যে তারা দেশে লুটপাট, দুঃশাসন এবং ভারতের তাবেদারী করলেও তারা কখনই নিজেদের দোষ স্বীকার করত না। এই কারণেই ৪টি রেখে বাকী সব বন্ধ করে দিয়েছিল। আর হাল আমলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া ও অবাধ তথ্য প্রবাহে এবং দিন বদলে বিশ্বাসী ইত্যাদি মুখোরোচক-চটকদার শ্লোগান ও ওয়াদা করে এলেও এখন বিপরীত কাজ করছে। বলেছিল ১০ টাকা/কেজি চাল, বিনামূল্যে সার দিবে যা এখন হাসিনাতো বটেই কৃষিমন্ত্রী মতিয়াও অস্বীকার করে।
ভাবখানা এমন যে হাসিনা কোনদিনও এই কথা বলেনি। কিন্তু ইন্টারনেটের কল্যাণে আমরা ইউটিউবে এর প্রমাণ রেখে দিয়েছি। ২০০৯ সালের শুরুতেই সাইবার জগতের উপর নগ্ন ও স্বৈরাচারী হস্তক্ষেপ হয়। পিলখানা বিডিআর বিদ্রোহের পর সেনাকুঞ্জে হাসিনা ও সেনা সদস্যদের কথোপকথন রেকর্ড করে কেউ ইউটিউব, ইস্নাইপস সহ কয়েকটি সাইটে আপলোড করে। কোন সদস্য বা কার কারণে রেকর্ড হয়েছে সেটা বের না করে ইউটিউবকেই ব্লক করে দেওয়া হল কয়েকদিনের জন্য।
যদিও এটা অবৈধ ভাবে রেকর্ড করা হয়েছে কিন্তু আলোচনার বিষয় গুলোর প্রকাশ কোন অন্যায় নয়। বরং হাসিনা ও তার দলের পিলখানা বিদ্রোহের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলে। যেখানে হাসিনা সময় থাকতেও পিলখানায় আর্মিকে এ্যাকশনে যেতে বলেনি। এই ইউটিউব ব্লক করলেও পরে বহু লোক এই আলোচনা ঠিকই শুনেছে। বর্তমান আধুনিক যূগে কোন সরকার দেশের কতটুকু ভাল-মন্দ কাজ এবং কতটা উন্নয়ন বা অবনতি ঘটাল তার ভুল, দোষ-অন্যায় প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সত্য তথ্যের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।
আমরা দেখেছি ২০০৯ সালে দেশের অর্থনীতির সাথে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়(জ্বালানি গ্যাস-কয়লা, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ খাত) সময় মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। সিংহভাগ ক্ষেত্রেই সরকার র্দূনীতি, অনিয়ম, অব্যাবস্থাপনা এবং অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। আর ১৯৯৬ সালে ৩০ বছর মেয়াদী ফারাক্কা চুক্তির মত ক্ষতিকার বিভিন্ন চুক্তি হাসিনা ২০১০ ও পরবর্তীতে করেছে। ১৯৭৪ ও ৭৫ এর মত বাংলাদেশ দেউলিয়া হওয়ার অবস্থা। দেশের সিংহভাগ মানুষ র্দূভোগের মধ্যে আছে।
তাই বিভিন্ন বেসরকারী টিভি চ্যানেলে টকশো ও মতামত অনুষ্ঠানে সরকারের যথাযথ সমালোচনা করলেও শাসক গোষ্ঠী চোখ রাঙিয়েছে। এখন হাসিনা ও তার দল ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও ব্লগ সমূহকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে যথাযথ সমালোচনামূলক লেখনী, মন্তব্য এবং এগুলোর লেখককে কিভাবে রুখা যায় তার জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপনস টিম সংক্ষেপে CSIRT চালু করেছে;
Click This Link
সেই ১৯৭৪ এর বিশেষ ক্ষমতা আইন, দুদক, বিচার বিভাগ এবং রাষ্ট্রপতি জিল্লুর সবাই বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন র্দূনীতি, অন্যায়, অপকর্ম চলতে দিয়ে বিরোধী দল ও ভিন্নমত পোষণকারীদের নির্যাতন সহ নানা ভাবে হয়রাণি করছে। যেমন পদ্মা সেতুতে ১০০০ কোটি টাকার র্দূনীতি হলেও(বিশ্বব্যাংক নিশ্চিত) দুদক ঘোষণা দিয়েছে আবুল হোসেন কোন র্দূনীতি করেনি। কিন্তু ট্রাষ্টি মামলায় খালেদা সাড়ে ৩কোটি টাকার র্দূনীতির খোজ পেয়েছে। শাওন এমপির গাড়ীতে ও তারই পিস্তলের গুলিতে আলীগ কর্মী নিহত কিন্তু এমপি নাকি তাতে জড়িত নন খোদ পুলিশ কমিশনারের সাফাই।
তারপর বিএনপির গামা(নাটোর) খুনী ও লক্ষীপুরে খুনী বিপ্লবকে মৃত্যুদন্ড হতে মাফ করে দিল জিল্লুর। নরসিংদীর মেয়র লোকমান খুন হলে আসল খুনীরা বেশী দিন জেলে না থাকলেও বিএনপির খায়রুল কবির খোকনকে এক সপ্তাহেরও বেশী জেলে থাকতে হয়েছে। দেখা যাচ্ছে হাসিনা আমলে একই রাষ্ট্রের আইন বৈষম্যমূলক ও অপব্যাবহার হয়েছে। এখন CSIRT চালু করে হাসিনা ও তার মহাজোট সরকারের ন্যায্য সমালোচনা করলে তাকে গ্রেফতার, জেল-জরিমানা এবং তাকে লেখা-মন্তব্য হতে বিরত রাখার আশংকা প্রবল। স্পষ্টতই ইন্টারনেটে বাকস্বাধীনতার জন্য হুমকি! আমরা দেখি যে ছাত্রলীগ, যুবলীগ সহ ক্ষমতাসীন দলের লোকজন বিভিন্ন ঘটনায় প্রকাশ্যে ধারাল ও আগ্নেয়াস্ত্রর ব্যাবহার করে কিন্তু তাদের সরাসরি কেউ রুখাতো দূর প্রতিবাদও করতে পারে না।
এখন CSIRT করে সাইবার মাস্তানি করার সুযোগ হল। আমাদের দেশ প্রায়ই গুরুত্বপূর্ণ আইন জনগণের মতামততো দূর সংসদেও আলোচনা হয় না। এখানে ব্যাক্তি বিশেষ প্রভাব ও ক্ষমতা খাটিয়ে অগণতান্ত্রিক আইন করে তাই সাধারণ মানুষ এর উপকারের বদলে ক্ষতির শিকার হয়। আমাদের সংবিধানে আছে জনগণই রাষ্ট্রের মালিক। দেশ কি ভাবে চলবে না চলবে তার সিদ্ধান্ত জনগণ দিবে।
বাস্তবতা হচ্ছে এটা কাগুজে বাঘ। গণতন্ত্রের মুখোশ পরে কিভাবে প্রতারণা করে নিজের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করা যায়। আজকে চাপাইয়ের হাবিবকে ভারতীয় বিএসএফ অসভ্য জংলী কায়দায় নির্যাতন করাতে দেশের মানুষ যখন ভারতীয় পণ্য বর্জনে সোচ্চার তখনই তথাকথিত সেনাবিদ্রোহের অজুহাত দেখিয়ে এই CSIRT গঠন করে সাধারণ ব্লগারদের আতংকে রাখা হল। কয়েকদিন ধরেই শুনছি বিভিন্ন ব্লগারের আইপি ও অবস্থান ট্রেস করে কারা কোথায় থাকে জেনে নিচ্ছে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে কেউ আলীগ, বিএনপি, জাপা, জামাত, ইসলামী দল, বামপন্থী সহ বিভিন্ন দলের সমর্থক।
কাজেই ফেসবুক-টুইটার সহ বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্লগে তাদের কম-বেশী উপস্থিতি থাকবেই। এখন সরকারের কোন অন্যায়ে যদি বিরোধী দলের সমর্থক সহ নিরপেক্ষ মানুষ এগুলো স্থানে প্রতিবাদ করে তাকে(সামাজিক যোগাযোগ) বিরোধী তথা কোন দলের কাতারে ফেলার কোন যৌক্তিকতা বিবেকবান মানুষ পায় না। কেউ চুরি করল কিন্তু আপনি তাকে চোর বলতে পারবেন না। আর এই সমস্ত সামাজিক যোগাযোগ ব্যবাস্থা গুলো কিন্তু সরকারী ও অথবা শাসকগোষ্ঠীর সমর্থকদের জন্য বন্ধ নয়। তারাও কিন্তু লিখছে।
কিন্তু ২/১জন অসৎ ছাড়া বেশীর ভাগেরই বিবেক আছে যে তারা সরকারের অন্যায়ে প্রতিবাদ না করলেও লজ্জায় চুপ থাকে। তখন মনে হয় যে এই সামাজিক মাধ্যম গুলো একতরফা তথা ইচ্ছে করেই অসৎ ও স্বৈরাচারী শাসকগণ পক্ষপাত দুষ্টতার অভিযোগ আনে। ২/১ বিচ্ছিন্ন পোষ্ট ছাড়া সরকারের বিভিন্ন অন্যায়কে সমর্থন করে পোষ্টও দেখা গেছে। তাই বেশীর ভাগ সরকারী সমর্থকগণ যদি সরকারের ভুল ও অন্যায় আচরণে নিজেদের গুটিয়ে রাখে তাহলে সামাজিক মাধ্যম গুলো এর দায় নিবে কেন? আমরাতো কেউই ফেসবুক-টুইটার ও ব্লগ হতে কোন অর্থ পাই না অথবা পেশাদার লেখক-সাংবাদিক নই। কেউ যোগাযোগ মাধ্যম হতে অর্থের বিনিময়ে লিখলে একটা কথা ছিল।
তাও অপরাধ সংগঠন, মিথ্যা ও অন্যায় তথ্য মানুষের ক্ষতি করে এমন লেখনী ছাড়া বাকী লেখনীর বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নেওয়া সভ্য জগতের পরিপন্থী। কেউ ভাল হলে যদি অন্যায়ও করে সে সমালোচনায় শুধরে নিয়ে ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু যে প্রকৃত অসৎ সে কখনও সমালোচনা সহ্য করতে পারে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কে কি লিখল(ফৌজদারী অপরাধ ব্যাতীত) সেটা বেশীর ভাগ পাঠকের পড়ে ভাল লাগলে সেটা নাম করবে তা না হলে সেটা বেশী কেউ জানবে না অথবা জনপ্রিয় হবে না। কিন্তু কারো মতামত প্রকাশে কেন বাধা দেওয়া হবে? তাহলে দেশের চা খানার আড্ডা, হোটেল, রাস্তা ঘাটে মানুষের মতামত ও সমালোচনাও বন্ধ করে দেওয়া হৌক! এভাবে কোন গনতান্ত্রিক দেশকে কারাগার বানানো স্বৈরাচার ও একনায়কতন্ত্র শাসকগোষ্ঠীকেই মানায়।
কিন্তু অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ হয় না। তাই আমাদের যার যে অবস্থান হতে এই CSIRT এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। স্বাধীন বাংলাদেশে এই আলীগ-বাকশাল ও হাসিনার গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত হয়েও স্বৈরাচার ও একনায়কীয় কায়দায়(জনমত ও সংসদে আলোচনা ব্যাতীত) আইন প্রনয়ণ ও প্রয়োগ অগণতান্ত্রিক, বৈষম্যমূলক জুলুম ও হয়রাণির শিকার হওয়ার কথা মাথা রেখে শুরু হতেই সচেতন হতে হবে। তাই আমি এই CSIRT এর বিরুদ্ধে তথা অগণতান্ত্রিক ও মতামাত প্রকাশে বাধা না হয়ে দাড়ায় তার জন্য Stop CSIRT নামে একটি অনলাইন পিটিশন তৈরি করেছি;
Click This Link
যারা মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাকে(ফৌজদারী অপরাধ ব্যাতীত) ভালবাসেন ও সম্মান করেন এবং সরকারের অন্যায়-অবাঞ্চিত হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে তাদের প্রতি অনুরোধ এখানে আপনার সমর্থন দিন। আমাদের মনে রাখতে হবে সমালোচনা তথা অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং ভাল উদ্যোগের পক্ষে না দাড়ালে একটি দেশে সিংহভাগ জনগণকেই র্দূভোগ পোহাতে হয়।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হৌক এটাই দৃঢ় ভাবে কামনা করি। ধন্যবাদ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।