পুড়ছিল ওই শ্মশান ভরে কাঠের রাশি, পুড়তে আমি ভালোবাসি, ভালোইবাসি। লন্ডনের নিউহ্যাম বরা'র কাউন্সিলের সাথে আমার অনেক দিনের সম্পর্ক। ৩ বছর আমি অইখান কার একজন অবেতনভুক ভলান্টিয়ার ছিলাম । মুলত অটিস্টিক বাচ্চাদের সাথে কি ধরনের আচরণ করা যায় , তাদের কিভাবে সমাজের একজন করা যায় , এই ব্যাপারটায় আমার দীর্ঘদিনের যুদ্ধের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমার সন্তান কে আমি বিদেশে রেখে হয়তোবা আরো উন্নত করতে পারতাম , কিন্তু কেনো দেশের মাঝে রেখে , তাকে মানুষ করার চেষ্টা করছি , সে কাহিনী অন্য দিনের জন্য তোলা রইলো ।
আমার বিদেশের অভিজ্ঞতা এখন অনেক বাচ্চাদের জন্য কাজে দিচ্ছে কিনা ,অথবা তাদের বাবা মাকে সচেতন করছে কিনা জানি না , তবে আমি চেষ্টা তো করে যাচ্ছি । বিদেশে আমি হয়তো স্বার্থপরের মতন নিজের মাহিনের কথাই ভাবতাম , কিন্তু এই একটি জায়গায় আর স্বার্থপর থাকলাম না। নেত্রকোণার ৬ বছরের কোন এক শিশু অটিজমে ভুগছে , কিন্তু তার বাবা মা এই শব্দটিও জানে না , এখন আর কিছু না হোক , এই শব্দ টি তাদের জানতে পারছি , অন্তত বলতে পারছি , আপনারা এইখানে যান । উন্নত বিশ্বের কথা আমরা সবাই জানি , কিন্তু অনেক খুঁটিনাটি জিনিশ গুলা জানি না , যা সমাজ তাদের এই শিশুগুলোর জন্য করে ।
এই স্কুলটি স্বাভাবিক বাচ্চাদের জন্য স্কুল , স্বাভাবিক এই অর্থে , যাদের অটিজম ,ডাউন সিনড্রম কিনা সেরিব্রাল পলসি নেই ।
কিন্তু এই স্কুল টি তাদের সমাজ সচেতনার অংশ হিসাবে , কোন এক শনিবার দিন অটিস্টিক আক্রান্ত দের জন্য কিছু অনুষ্ঠানের উদযোগ করলো। আর সেইখানে দরকার ছিলো , কিছু স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ভলান্টিয়ার , যাদের বিনা টাকায় কিছু সহযোগিতা পাওয়া যাবে। বরাবরের মতো এই সব কাজে আমি নাম লিখাই সব সময় । একদম বিনা মূল্যে নয় , বিনিময়ে আমিও কিছু জানবো, এইটাই আমার উদ্দেশ্য।
ওদের জন্য কিছু সুন্দর প্ল্যাক্যার্ড দেখুন ।
।
কাজের কিছু অংশ দেখুন , হাতে কলমে কাজ দেখানো হচ্ছে ।
রনপা নিয়ে আরো একজন ভলান্টিয়ার হাজির , অটিস্টিক বাবুদের অনেক উঁচুতে উঠতে হবে , আকাশের মতন উঁচুতে , যেখানে গেলে সে সমাজের একজন একজন এক্সেপ্টেড বাসিন্দা হবে , নিচের ছবিকি সেই কথা বলছে ?
উনি একা নন , সাথে আমিও আছি এদের সাথে , আজীবন , অন্তত শেষ নিশ্বাস থাকা পর্যন্ত ।
ভালো কথা , আমার বন্ধু দের কিন্তু কোন বয়স ভেদ নেই , নিচের ছোট্ট ডেভিড ও আমার বন্ধু , দেখুন কি নিষ্পাপ চেহারা , অথচ সে কারো সাথে ভালো ভাবে কমুনিকেট করতে পারে না
আমার এই দোস্তের নাম টা ভুলে গেছি , সে আমাকে বারবার বলতে চাইছিলো , তুমি আমার সাথে থাকো সব সময় , সারা ক্ষণ, আমি ওকে কখোন ও ভুলবো না
আমার ছোট্ট বন্ধু কিন্তু কম নেই আরোও আছে , যারা এখনো আমাকে ফোন দেয় , কিছু কথা বুঝি , কিছু বুঝি না ,কিন্তু তাদের ভালোবাসাটা ৭০০০ মাইল দূর থেকে ,আমার মননে ছোঁয়া ফেলে যায়
নিচের বাবুটির নাম জন , সে ভাল করে হাট টে ও পারে না , ভাল করে দেখুন , কেনো আমরা সৃষ্টিকর্তার সব অনুগ্রহকে অস্বীকার করবো , তিনি তো আমাদের হাত দিয়েছেন , পা দিয়েছেন, দিয়েছেন মাথায় কিছু বুদ্ধি , দিয়েছেন মুখে ভাষা । অথচ এতো অনুগ্রহ নিয়ে আমরা আজকে সারাটি দিন কি করলাম , প্লীজ
একবার রাত্রে চিন্তা করুন , কিছু সময় এদের কে না হোক , কিছু মানুষ কে দিন , মরেই তো যাবেন একদিন , ধর্মের কথা না হোক , মানবতার কথা চিন্তা করুন , কারণ আপনার স্বাভাবিক জীবনের কিছু অংশ সমাজের অবেহেলিত অংশ প্রাপ্য ।
দেখুন বড়বোন কিভাবে যুগের পর যুগ ধরে এই ভাবে ছোটবোনের সেবা করছে , স্বর্গ কি এইখানে নয় ??
রনপা শুধু উঁচুতেই অবস্থান করেন তা কিন্ত নয়, তিনি জানেন এদের মন কিভাবে ভালো করতে হয়, এদের কিভাবে ভালবাসতে হয়
এরা মেতে রয়েছে আপন ভুবনে, এরা এই পৃথিবীর অংশ, এরা বোঝা নয়
আমি কিন্তু এদের জন্য খুব কোন কাজ করতে পারিনি , কারণ আমার ছিলো কিছু জানার তৃষা, তবেও আমি ছিলাম এদের সাথে , কোন এক স্বপনের দিনে
সাথে ছিলো নাম ভুলে যাওয়া , নাইজেরিয়ান এই বালক টি , যে এদের অসীম মমতা করে
যে আমাকে এদের ভালোবাসতে শিখিয়েছে , প্রেম বিলাতে উদবুদ্ধ করেছে , তার ছবি
না দিলে , অনেক কষ্ট পিছন পথে রয়ে যাবে । এই পৃথিবীতে আসলাম, জানি আসাটা সফল হয়নি , খুব একটা কোন কাজ ও করে যেতে পারিনি ,ধীরে ধীরে গন্তব্যে পৌছার সময় ও চলে আসছে , প্রতিটা দিন যায় , আর আমার জীবন পাতা হতে খসে পড়ে একটি মুল্যবান দিন । আমি অস্থিরতার সাথে ভাবি কোন কাজ কি রয়ে গেলো বাকী?
জানি না , জীবনের অনেক অসমাপ্ত কাহিনীর মতোন আমার এই প্রশ্নের উত্তর পাবো কিনা , তবে উপরের দিকে তাকিয়ে থাকি সর্বদা , নিশ্চয়ই তিনি আমার সকল অক্ষমতাকে ক্ষমা করবেন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।