সাপের শরীর হয়ে আঁধারের গাছ/ কুয়াশার বন্যায় ডুবো দেবী মাছ! তপতী ভয়ে ভয়ে থাকে। সাধারন থেকে আরো সাধারন হবার ভয়ে সে হিংসে গুলোকে বুকের ভেতর পোষে ছোট্ট পাখির খাঁচায়। তপতী আদর গুলোকে বোঝে লাল পাখির ঠোঁট! পুরোনো সেই টিয়েটার কথা খুব মনে হয়। বারান্দার এক কোনে যে রোজ দুলতো কানের ছোট্ট ফুলের মত! নিচ দিয়ে কাগজ ওয়ালার ডাক শুনলেই সে মিহি সুরে ডাকতো কাগজ...এইইইইই...কাগজ....!
তপতী তার মন খারাপটাকে ফেরীওয়ালার ডালির ভেতর ছেঁড়া আর পুরোনো পাতা ভাবে। হলুদ বিবর্ণ! মন খারাপের পাতাটাকে কুড়িয়ে নেয় গাছের তলা দিয়ে যাবার সময়।
তারপর তাতে শব্দের কালি মাখাতে থাকে। হাত ঘোরাতে থাকে স্বরবর্ণ আর ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে। অরন্য থাকে অনেক দূরে! পৃথিবীর ওপিঠের সে অরন্যটাকে রোজ স্বপ্নে দেখে ডাল পালা গজাতে। যখন সে দারুন রাতের প্রিয় জঙ্গুলে চাঁদ।
জঙ্গলের ধারে মিঠে পানির খাল।
পচা পাতারা ইচ্ছে মত বাড়ি বানায়! সন্তান জন্ম দেয়। ও পানিতে বনের হরিন জল খেতে আসে। তপতী হরিনটাকে ভালবাসে। তপতি জলের তলে নেমে পড়ে মাছ হয়ে। সোনালী ঠোঁটে জলের বুদবুদ নিয়ে ঘুরে বেড়ায় জলময়।
হরিন মুখ ডোবালেই জলের মাছে কাছে এসে ঘুরে ঘুরে মরে।
তপতীর ভাল লাগা রোগ সেরে গেছে যদি। ভাল না লাগা রোগটা এখন অনেক বেশি আপন। ভাল না লাগা গুলো ঘরময় বেলুনের মত ওড়ে। বাবুলের মত ফেনার ভেতর থেকে না থাকা গুলোকে সে ছোট্ট তারের ভেতর ভরে।
তারপর গাল ভরে ফুঁ! উড়ে যায় ফেটে যায় মন খারাপেরা। একেকটা বাবুলের সাতরং হরিনের গায়ের ছিটেফোঁটা দাগ। তপতী খুব সাধারনের মত হরিন কে বলে ফেলে না বলা কথা গুলো। হরিন সারা বন খুঁজে ফেরে হাতি। তারপর সে রোদ্দুরে হয়ে যায় অরন্য সবুজ।
ঘুরপথে অরন্য জলে নেমে মাছের গলায় পরিয়ে দেয় হাতির লকেট। চা পাতার রঙ গলে গলে যায় জলে! ছোট্ট শিশুর তুলতুলে গালে আইসক্রিমের এঁটো,শিশুর হাসি নাগরদোলা জলমিতির তলে! মাঝে মাঝে অরন্য পকেটে রাখে হাত। হাতির লকেট জলের তলায় গলে যায় সারারাত।
তপতী দিন দিন শিশু! দিন দিন কাঁদে ঘোর। শনপাপড়ি গালে পুরে বিবাদ বড়জোর।
তপতী আকাশ দেখে। মেঘের মালা। উড়োজাহাজের ডাক! তপতী মানে আকাশ ভেঙে নীল নিলীমার স্বপ্নালু স্কেচ খুব নিরামিষ। গভীর রাতে শুকনো বাঁশের পাতায় হেঁটে হেঁটে তপতী চলে যেতে পারে জোনাকীদের গোপন বৈঠকে। ওরা তপতীকে খুব আপন করে নেয়! ঘুরে ঘুরে আলো জ্বলে তপতীর চারপাশে।
ওরা তপতীকে জোনাকি বলে আদুরে গলায়।
-এ কি
জোনাকি
তুই কখন
এলি
বলতো!
তপতী বাড়ি ফিরে এলে তার মন খারাপেরা হয় অবুঝ গোলাপ। ডাকবাক্সটাকে লাগে কঠিন খোক্কসের মুখ। হাত ঢুকালেই দাঁতে কেটে যায় ছিঁড়ে যায় তপতীর হাত। দূর থেকে কাছে আসে সে শূণ্য সময়টাকে মেরাজের রাত মনে হয়।
দীর্ঘ কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। তপতীর ঘোর ভাল লাগে। তপতীর জ্বর ভাল লাগে। কঠিন উপত্যকায় ওঠা নামা তার প্রিয় খেলা। তপতী জ্বরের ঘোরে ঘোরে ভাবে ভালবাসাটা পৃথিবীর ছাদ!
অ:ট: সিমন্তিকে নিয়ে একটা লেখা ছিল আমার।
এ লেখাটা যখন লিখছি মাথায় সারাদিন তপতী! রিক ভাইয়ার জন্মদিনে আমার পক্ষ থেকে ছোট্ট উপহার। কখনো যেন কষ্ট তাকে স্পর্শ না করে। আমি জানি তপতীকে সে কষ্ট পেতে দেবেনা। তার তপতী ভাল থাকুক তাকে নিয়ে। তবে হ্যা তপতী তো দূরত্বের কষ্ট পায়! তাই ভাইয়াটা আয়নাতে এয়ারপোর্ট দেখতে চায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।