আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ভাষায় ২৩শে ডিসেম্বর সিনেমাখোর আড্ডা....কিছু কথা আর কিছু ছবি।

আমি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। মনে হয় না এর থেকে বেশী কিছু চাওয়ার আছে। আর.এইচ.সুমনের তোলা ছবি পুরো মাস জুড়েই মনে এক চরম উত্তেজনা নিয়ে অপেক্ষায় ছিলাম। প্রথমে ডাক দিয়েছিলেন পুশকিন ভাই। সিনেমাখোরদের একটা আড্ডা হয়ে যাক।

আগে কখনো এরকম হয়নি। ২ বছর হলো সামুতে আছি। বেশিরভাগ সময়েই সিনেমা নিয়ে পোষ্ট দিয়েছি। কাউকে কখনো সামনা-সামনি দেখিনি। তাই মনের মাঝে খুব ইচ্ছা ছিলো একটা আড্ডায় বসে সবার সাথে দেখা করার।

নিজের লেখায় যাদের কমেন্ট পেতাম তাদের কেন জানি সবসময় খুব আপন বলেই মনে হতো। ফেসবুকের সিনেমাখোরদের গ্রুপে রাতভর চলা মজার আড্ডায় সবাইকে খুব আপন মনে হতে লাগলো। অপেক্ষার পালা শেষ হলো। এলো ২৩শে ডিসেম্বর। আমি ও রিফাত টিএসসিতে গিয়েই দেখি এলাহি কারবার।

সিনিয়র ব্লগাররা এসে বসে আছেন। পুশকিন ভাই সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। জিশান ভাই, হেলাল ভাই, নষ্ট কবি ভাই, গুরুজী ব্রো, ফারজুল আরেফিন ভাই, চয়ন, ইভান, অপরিনিতা, নিশাত আপুসহ আরো অনেকে বসে ছিলেন। আর.এইচ.সুমনের তোলা ছবি অনেকটা ঘোরের মাঝেই দাড়িয়ে সবার সাথে পরিচিত হলাম(আফসোস...মনে হলো কেউই নাম শুনে আমাকে চিনতেই পারেননি)। একে একে আরো অনেক ব্লগার আসছেন আস্তে আস্তে।

তারপর এলেন আমাদের প্রিয় দারাশিকো ভাই(নাম শুনে ভয় পাবার দরকার নেই। উনি উনার নামের মতো ওজনদার নন)। জায়গাটা অনেক ভিড় হয়ে যাচ্ছিলো। তাই আমরা সবাই মিলে শিখা অনির্বানের মাঠের দিকে হাটতে লাগলাম। এদিকে পুশকিন ভাইয়ের মোবাইলে তখন অবিরাম কল আসছে।

আর যারা সাথে ক্যামেরা এনেছিলেন উনাদের ক্যামেরা চলছে সমানতালে। সবাই হাটছি গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। হাটতে হাটতে পরিচিত হলাম এইচ.আর. সুমনের সাথে। মন তখন উত্তেজনায় শেষ। কারণ আমাদের সিনেমাখোর গ্যাং এর কাউসার রূশো ভাই, আরজু আপা, মুভিগুরু স্নিগ ভাই, ফেলুডার চারমিনার ভাই, তন্ময়, দিপ, স্বর্ণমৃগ আলামিন, মুনতাসির, বাদ দেন ভাই(ভাই অনেকের নাম বাদ গেছে...পরিচয় কিন্তু সবার সাথেই হয়েছি।

কিন্তু এখন মনেই পড়ছে না। মাফ করে দিয়েন। ) এবং আড্ডার প্রধান আকর্ষণ আমাদের সবার প্রিয় ‘দূর্যোধন’ ভাইদের সাথেই এখনো দেখা হলো না। একে একে খুব প্রিয় মুখ রূশো ভাই, তন্ময়, স্বর্ণমৃগ, মুনতাসির সবার সাথেই দেখা হলো। কিছুক্ষণ বাদেই আরো কিছু প্রিয় মুখ ফেলুডার চারমিনার, আলামিন, দিপ, সাকিব এদের সাথেও দেখা হলো।

বাদ দেন ভাই কেন জানি আসলেন না। তারপর আরজু আপুর সাথেও দেখা হলো। উনি আমাকে দেখে বড় বেরসিকের মতো একটা কথা বলে বসলেন। উনাকে মাইনাস। আর.এইচ.সুমনের তোলা ছবি তখনো আড্ডা শুরু হয়নাই।

আমরা এমনি বসে ছিলাম পার্কে। হঠাৎ পুশকিন ভাইকে দেখি আমাদের সবার প্রিয় ‘মোস্তফা সরয়ার ফারুকী’কে নিয়ে হাজির। এটা নাকি আড্ডার জন্য একটা চমক। স্বীকার করতেই হবে বেশ ভালো একটা চমক। ফারুকী ভাই অনেক আন্তরিকভাবেই আমাদের সাথে কথা বললেন এবং ফটোসেশনের সময় হাসিমুখে দাড়িয়ে সবার সাথে ছবি তুললেন।

নষ্ট কবির তোলা ছবি ছাইরাল হেলাল ভাই এর চমৎকার উপস্হপনায় আমাদের আড্ডা শুরু হলো। উনার বলার পর সবাই একে একে দাড়িয়ে নিজেদের পরিচয় দিতে লাগলেন। এত ব্লগাররা আসবেন সেটা কল্পনাই ছিলো না। অনেকের মজার মজার সব কথায় বেশ হাস্যরসের সৃষ্টি হলো এইসময়। এদিকে আবার পার্কের অধিকাংশ মানুষই আমাদের ঘিরে দাড়িয়ে হাসতে হাসতে আমাদের আড্ডাকে উপভোগ করতে দেখলাম।

এই ২টা আর.এইচ.সুমনের তোলা ছবি এই ২টা নষ্ট কবির তোলা ছবি সিনেমাখোরদের বাইরে ব্লগের আমার প্রিয় মুখ জিশান ভাই, হেলাল ভাই, নষ্ট কবি ভাই, গুরুজী ব্রো, ফারজুল আরেফিন ভাই, চয়ন, ইভান এদের সাথে তো আগেই পরিচয় হলো। এইবার নিজেই হেটে হেটে জাহাজী ভাই, রাষ্ট্রপ্রধান ভাই(আমার ফুটু কই?), ফয়সাল তূর্য ভাই, শিপু ভাই, রাজসোহান সবার সাথে দেখা করতে লাগলাম। নিশাচর ভবঘুরে ভাই, মিরাজ ইজ ভাই, তাশফী ভাই এবার হলো না। পরেরবার হবে। আমাদের সবার প্রিয় পিচ্চি/কিউটি আশকরির সাথেও দেখা হলো।

এইখানে আমি অনেকের কাছে আবার ক্ষমা চাইলাম। পরে শুনলাম আরো অনেক বিখ্যাত ব্লগাররা এসেছিলেন। কিন্তু উনাদের সাথে কেন জানি পরিচয় হবার সুযোগ পেলাম না। হাসান মাহবুব ভাই, সৌম্য এনাদের সাথে অনেক দেখা হবার ইচ্ছা ছিলো। পারলাম না।

তবে একটা মজার জিনিষ লক্ষ্য করলাম। সব সব ব্লগারাই খুব আন্তরিক, মিশুক, গল্পবাজ মানুষ মনে হলো। বয়সের কোন ব্যবধানই কারো মাঝে নেই। এখানে সবাই আপন। কি সুন্দর আমরা সবাই মিলে একে অপরদের সাথে গল্প করছি.....মজা করছি দেখতেই খুব ভালো লাগলো।

আর.এইচ.সুমনের তোলা ছবি এই ২টা নষ্ট কবির তোলা ছবি অবশেষে সামনে পেলাম স্নিগ ভাইকে। এইখানে একটা ক্রেডিট নেই। উনাকে আড্ডায় আমিই প্রথম আবিষ্কার করেছিলাম। উনার সাথে কথা বলে অবাক হয়ে গেলাম। উনি যে এত অমায়িক/মিশুক হবেন সেটা কল্পনাই করিনি।

সিনেমাগুরু দারাশিকো ভাইয়ের পর আরেকজন গুরু স্নিগ ভাইকে পেয়ে সিনেমাখোর সবাই দেখা করতে হামলে পড়লো। সব ব্লগারকেই দেখলাম সবাই সবার সাথে হইচই, আনন্দ আর ফূর্তির মাঝে এক জম্পেস আড্ডায় মেতে উঠলেন আবার কেউ ল্যাপটপ বের করে মুভি নেবার জন্য ঝাপিয়ে পড়লেন। সবাই মাঠেই আড্ডা দিতে দিতে চা খেলাম। আর ক্যামেরার ফ্ল্যাশের কথা বলে লাভ নাই। খালি ১০/১২ সেকেন্ড পরপর ঝিলিক মারছে।

আমিও সুযোগ পেয়ে বিয়ের সময় পাত্রীপক্ষকে দেখানো যাবে ভেবে ডেকে ডকে অনেকগুলো ছবিও তুলে ফেললাম। নষ্ট কবির তোলা ছবি আর.এইচ.সুমনের তোলা ছবি এরপর সবাই মিলে পিঠা খাবার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। অনেক ভোগান্তি হয়েছে এই সময়। ৪০/৫০জনের গ্রুপ এক বিশাল মিছিলের মতো সামনে এগিয়ে যেতে লাগলাম। অবশেষে ৫/৬মিনিটের রাস্তা ৩০মিনিটে পার হয়ে পিঠার দোকানে সবাই ঝাপিয়ে পড়লাম।

পিঠার বিল আসলে কে দিলেন জানলাম না!!! যতটুকু শুনলাম সিরিয়র ভাইয়ারা দিয়েছেন। উনাদের অনেক ধন্যবাদ। আবারো হইহল্লা হাসিঠাট্টা করে সবাই মিলে পিঠা খেতে লাগলেন। পুরো রাস্তাটাই ব্লক হয়ে গেলো। আর.এইচ.সুমনের তোলা ছবি জাহিদুল হাসানের তোলা ছবি আমি আর দেরি করলাম না।

তন্ময় এর মুভি কালেকশন আর স্নিগ ভাইয়ের ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। আড্ডাটা মিস করেছি এইসময়। ৮টা থেকেই মিলনমেলা ভাঙ্গতে লাগলো। বিদায় নিয়ে একে একে সবাই চলে যেতে লাগলেন। ৯টার সময় পুলিশের ঝাড়ি খেয়ে সবাই পার্ক থেকে বেরিয়ে গেলাম এবং এরপর শেষ ব্যাচটাও চলে গেলো।

কিন্তু মনের মাঝে খুতখুত করছে। তাই আমি, স্নিগ ভাই, তন্ময়, ফেলুডার চারমিনার, রিফাত, প্লিওসিন অথবা গ্লসিয়ার থেকে গেলাম। হাটতে হাটতে সবাই শাহবাগের রাস্তার পাশেই এক ফুচকার দোকানে বসলাম। প্রচন্ড ঝাল ফুচকা খেতে খেতে আমরা তুমুল সিনেমা আড্ডায় মেতে গেলাম। সেই আড্ডা চললো একদম রাত ১০.৩০টা পর্যন্ত।

শীত কাহাকে বলে এবং কত প্রকার ও কি কি সবাই এই সময় টের পেয়েছি। আড্ডার পুরোটা সময় চোখ দূর্যোধন ভাইকে খোজে বেরিয়েছে। কিন্তু উনাকে আগে দেখি নাই। বিকালে পরিচয়পর্ব চলাকালে সব ব্লগাররা যখন নিজেদের পরিচয় দিলেন তখন দেখি উনি নাই। তাই আমি ধরেই নিলাম উনি এসেছেন কিন্তু পরিচয় প্রকাশ করছেন না।

উনি বেশি সিগারেট খায় বলে জানতাম। তাই আমি একজন সিগারেট খাওয়া ভদ্রলোককে অনেকক্ষণ ধরে নিশানা বানিয়ে রেখেছিলাম। দারাশিকো ভাইকেও আমার সন্দেহের কথা জানালাম। উনিও মনে মনে সায় দিলেন। কিন্তু পিঠা খাবার পরই শুনলাম আমাদের প্রিয় দূর্যোধন ভাই এসেছেন।

কিন্তু উনাকে দেখে একদম টাস্কি খেয়ে গেলাম। প্রায় দৌড়ে গিয়ে উনার সাথে হাত মিলালাম। উনি আমার নাম শুনে কেমনে জানি আমাকে চিনে ফেললেন এবং সাথে সাথে বড় বেরসিক মানুষের মতো পচিয়ে দিলেন। অনেক সময় নিয়ে কথা বলার-আড্ডা দেবার ইচ্ছা ছিলো আপনার সাথে। কিন্তু এত মানুষ আপনাকে ঘিরে রয়েছে তাই সরে আসলাম।

মনে আফসোস রয়ে গেলো। তারপরও যে আপনি কথা দিয়ে কথা রাখলেন সেজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। যাইহোক পুশকিন ভাইকে অনেক ধন্যবাদ এরকম আড্ডার আয়োজন এবং রূশো ও দারাশিকো ভাইকে অনেক ধন্যবাদ উনার সাথে থাকার জন্য। জিশান ভাই, হেলাল ভাই, শিপু ভাই উনাদেরও অনেক ধন্যবাদ আমাদের উৎসাহ এবং সম্পূর্ণভাবে একাত্ম হয়ে আড্ডার দেখভাল করার জন্য। আবারো এবং আরো আড্ডাইতে চাই।

(এই ধরণের লেখা আমি লিখতে চাইনা। কারণ অনেক প্রিয় ব্লগারদের নাম ভুলে বাদ যায়। তখন উনারা মন খারাপ করে কমেন্ট করেন যে উনাদের নাম নেই কেন?? খুব লজ্জা পেয়ে যাই তখন। এখানেও ভুলে অনেকের নাম বাদ পড়ে গেছে। কি করবো বলুন?? সত্যি কথা এই মূহুর্তে আমার একদম নাম মনে আসছে না।

প্লীজ আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। ) আর.এইচ.সুমন এবং নষ্ট কবি আমার ক্যামেরা ছিলো না....তাই আপনাদের ব্লগ থেকে ছবি নিতে হলো। ***গোপন সূত্রে খবর পেয়েছি আমাকে ফেলে একটা গ্রুপ কাচ্চি বিরিয়ানী খেতে গিয়েছিলো....সেই গ্রুপকে মাইনাস। ***  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।