আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ২১%

গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের খুচরা দাম গড়ে দুই ধাপে ২১ দশমিক ২৮ শতাংশ বাড়িয়ে ৪ টাকা ১৬ পয়সা থেকে ৫ টাকা ২ পয়সা নির্ধারণ করেছে বিইআরসি। বর্ধিত দাম প্রথম দফায় ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর ধরা হচ্ছে এবং দ্বিতীয় দফায় আগামী বছরের ১ ফেব্র“য়ারি থেকে কার্যকর হবে। এ নিয়ে চলতি বছরেই দুই দফায় খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়লো। বৃহস্পতিবার কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেন। কমিশনের সদস্য মো. ইমদাদুল হক ও সেলিম মাহমুদ এতে উপস্থিত ছিলেন।

দাম বাড়ানোর বিষয়ে বিইআরসির চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন বলেন, “দেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্ক ছাড়িয়ে গেছে। কারণ ভর্তুকি বাড়লে মূল্যস্ফীতিও বাড়তে থাকে। এজন্য ভর্তুকি কমাতে লাইফ লাইন রেট (১০০ ইউনিট পর্যন্ত) সেচ সংযোগ এবং অনাবাসিক (ধর্মীয়, সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ) গ্রাহকের দাম বাড়ানো হয়েছে। ” প্রথম দফায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ১৬ পয়সা থেকে ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ বাড়িয়ে ৪ টাকা ৭১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এক্ষেত্রে দাম বাড়লো ৫৫ পয়সা। এই দাম ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হচ্ছে। দ্বিতীয় দফায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ৭১ পয়সা থেকে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ টাকা ২ পয়সা। এক্ষেত্রে দাম বাড়ছে ৩১ পয়সা। এই দাম ১ ফেব্র“য়ারি থেকে কার্যকর হবে।

এর আগে আবাসিক গ্রাহকদের ১০০ ইউনিট পর্যন্ত, সেচ সংযোগ এবং অনাবাসিক (ধর্মীয়, সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ) গ্রাহকের জন্য দাম না বাড়ানো হলেও এবার এইসব গ্রাহকদের ক্ষেত্রে দুই দফায় পাঁচ শতাংশ করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর এর আগে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিলো গত ফেব্র“য়ারিতে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের খুচরা দাম অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৪ টাকা ১৬ পয়সা করা হয়েছিলো। দ্বিতীয় দফা দাম বাড়ানোর জন্য গত এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিতরণকারী সব সংস্থার গণশুনানি হয়। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) গড়ে ১২ দশমিক ৯৭ শতাংশ, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ১৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ২১ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ২১ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়।

এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে ১৮ দশমিক ০৩ শতাংশ আরইবি, ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ ওজোপাডিকো, ২২ দশমিক ৬৫ শতাংশ ডেসকো, ২৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ ডিপিডিসি এবং ২১ দশমিক ২৮ শতাংশ পিডিবির দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দফায় আরইবি’র ক্ষেত্রে ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ, ওজোপাডিকো’র ১২ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ডেসকো’র ১৪ দশমিক ১৬ শতাংশ, ডিপিডিসি ১৫ দশমিক ০২ শতাংশ এবং পিডিবি’র ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ দাম বাড়বে। এটা ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। দ্বিতীয় দফায় আরইবি’র ক্ষেত্রে ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ, ওজোপাডিকো’র ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ডেসকো’র ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ, ডিপিডিসি ১৫ দশমিক ০২ শতাংশ এবং পিডিবি’র ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ দাম বাড়বে। এটি ১ ফেব্র“য়ারি থেকে কার্যকর হবে।

বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “আরইবি মূলত পল্লী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। তাই এই সংস্থাটি বাদে বাকি চারটি সংস্থার মূল্য হার একই ধরা হয়েছে। এতে গ্রাহকদের মধ্যে মনঃকষ্ট থাকবে না। ” পিডিবি, ডেসকো, ডিপিডিসি ও ওজোপাডিকোর বর্ধিত দাম প্রথম দফায় আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত ২ টাকা ৭৩ পয়সা, ১০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত ৩ টাকা ৮১ পয়সা, ৪০০ ইউনিটের ওপরে ৬ টাকা ৮৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সেচে ২ টাকা ৩ পয়সা, অনাবাসিক বাতির ক্ষেত্রে ৩ টাকা ৫২ পয়সা এবং রাস্তার বাতি ও পানির পাম্পের জন্য ৪ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় দফায় আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত ২ টাকা ৮৭ পয়সা, ১০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত ৪ টাকা ৪ পয়সা, ৪০০ ইউনিটের ওপরে ৭ টাকা ৪৩ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সেচে ২ টাকা ১৩ পয়সা, অনাবাসিক বাতির ক্ষেত্রে ৩ টাকা ৬৯ পয়সা এবং রাস্তার বাতি ও পানির পাম্পের জন্য ৫ টাকা ২৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আরইবির বর্ধিত দাম প্রথম দফায় আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত ২ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে ৩ টাকা ১৮ পয়সা, ১০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত ৩ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৭৩ পয়সা, ৩০১ থেকে ৫০০ ইউনিট পর্যন্ত ৫ টাকা ২১ পয়সা থেকে ৫ টাকা ৫৪ পয়সা এবং ৫০০ ইউনিটের ওপরে ৬ টাকা ৮৭ পয়সা থেকে ৮ টাকা ১৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সেচে ২ টাকা ৭৩ পয়সা থেকে তিন টাকা ২০ পয়সা, অনাবাসিক (দাতব্য প্রতিষ্ঠান) ৩ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৫২ পয়সা এবং রাস্তার বাতির জন্য ৪ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত ২ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৩৪ পয়সা, ১০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত ৩ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৯৫ পয়সা, ৩০১ থেকে ৫০০ ইউনিট পর্যন্ত ৫ টাকা ৬৩ পয়সা থেকে ৫ টাকা ৯৮ পয়সা এবং ৫০০ ইউনিটের ওপরে ৭ টাকা ৪২ পয়সা থেকে ৮ টাকা ৮৩ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া সেচে ২ টাকা ৮৭ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৩৬ পয়সা, অনাবাসিক (দাতব্য প্রতিষ্ঠান) ৩ টাকা ৬২ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৭০ পয়সা এবং রাস্তার বাতির জন্য ৫ টাকা ২৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.