আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্রাহক পাচ্ছে না বিটিসিএল

দফায় দফায় সংযোগ ফি, লাইন রেন্ট, কল রেট কমিয়েও নতুন গ্রাহক পাচ্ছে না বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট আর সামাজিক যোগাযোগ সাইটের দাপটে ল্যান্ড ফোননির্ভর যোগাযোগ অনেকটাই গুরুত্ব হারিয়েছে। তাই টেলিফোনের (ল্যান্ড ফোন) প্রতি আগ্রহ নেই গ্রাহকদের। ফলে, একসময়ে চাহিদার তুঙ্গে থাকা এ টেলিফোন ব্যক্তি পর্যায়ে আর গ্রাহক টানতে পারছে না। শুধু সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলোয় নতুন সংযোগ নেওয়া হয়।

গত পাঁচ বছরে ঢাকায় বিটিসিএলের নতুন গ্রাহক বেড়েছে মাত্র ২৬ হাজার, বছরে ৫ হাজারের কিছু বেশি। তবে বিদ্যমান গ্রাহকের কাছ থেকেও আগের মতো বিল পাচ্ছে না বিটিসিএল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে টেলিফোনের ধারণক্ষমতা প্রায় ১৩ লাখ। এর মধ্যে সংযোগ আছে মাত্র প্রায় ৯ লাখ।

প্রায় ৪ লাখ সংযোগ খালি রয়েছে। বিটিসিএলের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ঢাকার পাঁচটি জোনে মোট ধারণক্ষমতা হচ্ছে ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৩১৩টি। এর মধ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুধু রাজধানী ঢাকায় টেলিফোনের গ্রাহক আছে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ২৬৪ জন। ঢাকার চারটি জোনের গ্রাহকসংখ্যার গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়_ ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রাহক ছিল ৫ লাখ ২৮ হাজার ৫৮৩; ২০০৯ সালের একই সময়ে ছিল ৫ লাখ ৪১ হাজার ৫৮৭; ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে ৫ লাখ ৫২ হাজার ২০; ২০১১ সালে এসে হয় ৫ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৭ এবং ২০১২ সালে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫৫ জন। এ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়_ পাঁচ বছর ধরে প্রতি বছর মাত্র ৫ হাজার নতুন গ্রাহক পেয়েছে বিটিসিএল।

বিটিসিএলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যোগাযোগের ক্ষেত্রে মানুষ এখন চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না। এ কারণেই তাদের ল্যান্ড ফোনের প্রতি আগ্রহ আগের তুলনায় একেবারেই কম। অধিকাংশ গ্রাহকই তার যোগাযোগমাধ্যমটি নিজের সঙ্গে রাখতেই পছন্দ করেন; যার ফলে ল্যান্ড ফোনের প্রতি আগ্রহ কমছে। অন্যদিকে এ জায়গাটি দখল করছে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো। বিটিসিএল নানারকম সুযোগ-সুবিধা দিলেও গ্রাহক বাড়ছে না।

এরই মধ্যে বিটিসিএল তাদের ল্যান্ড ফোনের নতুন সংযোগের চার্জ (মূল্য) কমিয়েছে। ঢাকায় (গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ) নতুন সংযোগ পেতে একজন গ্রাহককে খরচ করতে হচ্ছে মাত্র ২ হাজার টাকা। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে সংযোগ মূল্য মাত্র ১ হাজার টাকা। আর সবচেয়ে কম খরচ হচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে দেশের অন্যান্য বিভাগীয়, জেলা এবং উপজেলা শহরে। এসব এলাকায় নতুন সংযোগের জন্য গ্রাহককে দিতে হয় মাত্র ৬০০ টাকা।

কল রেটও খুব সহনশীল পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে বিটিসিএল। লোকাল কলের ক্ষেত্রে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রতি মিনিট ৩০ পয়সা এবং রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ১০ পয়সা। আর বিটিসিএল থেকে অন্যান্য অপারেটরে কল করলে প্রতি মিনিটে মাত্র ৮০ পয়সা। একইভাবে মাসিক লাইন রেন্টও কমিয়ে দিয়েছে বিটিসিএল। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় প্রতি মাসে গ্রাহককে লাইন রেন্ট দিতে হবে মাত্র ১৬০ টাকা।

আর ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগীয় ও জেলা শহরে লাইন রেন্ট হচ্ছে ১২০ এবং উপজেলা ও গ্রোথ সেন্টারের গ্রাহকদের জন্য মাত্র ৮০ টাকা। এত সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরও গ্রাহক বাড়ছে না দেশের সবচেয়ে পুরনো টেলিফোন-ব্যবস্থার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক, তার, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডাক, তার, টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবুবকর সিদ্দিক বলেন, আমরা গ্রাহক বাড়ানোর জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। রেট কমিয়েছি। ভালো সার্ভিস দেওয়ারও চেষ্টা করছি।

রেট কমানোর ফলে আমাদের কস্টিংটাও উঠছে না। তার পরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, কারও ওপর তো কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া যায় না।

 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.