পৃথিবীর কাছে তুমি হয়তো কিছুই নও, কিন্তু কারও কাছে তুমিই তার পৃথিবী" পছন্দের প্রার্থীর চাকরি না হওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদকে লাঞ্ছিত করেছে ছাত্রলীগ। এসময় ডেপুটি রেজিস্ট্রারসহ আরো ১২জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মারধর করা হয়েছে। পরে রেজিস্ট্রার, প্রক্টর দপ্তরসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। বিকাল ৩টায় ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ঘণ্টাব্যাপী অবরুদ্ধ করে রাখে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ কর্মকর্তা কর্মচারীরা কালোব্যাজ ধারণ করে দু'ঘণ্টা কর্মবিরতি পালনের কর্মসূচি দিয়েছেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ পরীক্ষার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। একটি পদের বিপরীতে ২২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে একজনকে নির্বাচিত করে নিয়োগ কমিটি। পছন্দের প্রার্থী নিয়োগ পাচ্ছে না এমন খবরে দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম আকন্দসহ পুরো কমিটির নেতারাসহ ছাত্রলীগের কর্মীরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। এক পর্যায়ে তাদের উপাচার্যের সঙ্গে বাকবিত-া শুরু হয়। এসময় ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন, তৌফিদুল ইসলাম বুলবুল, রফিকুল ইসলাম শ্রবণ উপাচার্যের কক্ষের চেয়ার টেবিল ছুড়ে ফেলে।
এ ঘটনার পর উপাচার্য ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গেলে ছাত্রলীগ তা-ব শুরু করে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী জাহিদ ও সেকশন অফিসার গাফফারকে মারধর করে। রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়ে তাকে না পেয়ে পুরো অফিস ভাংচুর করে। ওই অফিসের কর্মচারী শরিফ, মানিক, ইমরান, জাহাঙ্গীরকে মারধর করে। প্রক্টর দপ্তরে তার অনুপস্থিতিতে কর্মচারী ময়নাল, কনক ও জামালকে মারধর করে।
এরপর ডেপুটি রেজিস্ট্রারের অফিসে ঢুকে দরজা, জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এসময় ডেপুটি রেজিস্ট্রার রেজাউল করিমকে লাঞ্ছিত করে।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দুপুর ৩টায় ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এসময় ক্যাম্পাসে বাইরে যেতে দেয়া হয়নি। ঘণ্টাব্যাপী তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মারধরে আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম আকন্দ, ৬ জন যুগ্ম-আহ্বায়ক ওমর ফারুক, ইয়াসির হোসেন, নিজাম উদ্দিন, তৌহিদুল ইসলাম বুলবুল, ওবাইদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম শ্রাবণ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাৎক্ষণিক এক বৈঠকে এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ কালোব্যাজ ধারণ করার কর্মসূচি দেয়। সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, ছাত্রলীগ যাকে পেয়েছে তাকেই মারধর করেছে। এর পূর্বেও ভর্তিবাণিজ্য ও নিয়োগবাণিজ্য নিয়ে একাধিকবার কর্মকর্তা কর্মচারীরা ছাত্রলীগের হামলার স্বীকার হয়েছে।
পূর্বের ঘটনার বিচার না হওয়ায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম আকন্দ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত লোকজনদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে। সমপ্রতি দুর্নীতিবাজ একজনকে কলাঅনুষদের ডিন হিসেবেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব বিষয়ের প্রতিবাদ করেছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
বুধবার তিনি ক্যাম্পাসে ফিরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে জানান। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।