কত কিছু যে করতে চাই, তবুও কিছু করতে না পারার দায়ে মাথা খুঁটে মরি ।
এইটা কোন রাজা বাদশার কাহিনী নয় বটে। কিন্তু এটা একটা মনীষীর কাহিনী। আমি যেদিন অনেক বিখ্যাত হয়ে যাবো, টিভিতে আমার সাক্ষাতকার নিবে, মহান বিজয় দিবসে আমার বীরত্বের এই কাহিনী সেদিন বইয়ে ছাপা হবে। এই কাহিনীতে আছে,
কীভাবে আমরা গেরিলা হলাম
কীভাবে কীভাবে কমান্ডো হলাম
কীভাবে বিশাল গ্রুপ ম্যানেজ করতে হয়
স্মৃতিসৌধে কীভাবে ফুল দেয়
কীভাবে আমরা মরুভূমি পাড়ি দিলাম
বিপদের সত্যিকারের সাহায্য কে করতে পারে
আর কীভাবে বিজয় দিবসে শহীদ হলাম
ভার্সিটি থেকে প্রতিবার বিজয় দিবসে ভোর পাঁচটায় বাস ছাড়ে।
“মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ত মনে আছেই, দেখানো কী দরকার। তার চেয়ে রাত্রে ঘুমাই” – সুলভ চিন্তা থাকায় কোন বারই আমার যাওয়া হয় নাই। হঠাৎ করে এবার বুঝলাম আরে, ভার্সিটি লাইফে আর ত ১৬ই ডিসেম্বর পাবো না। চল এইবার কোপাই, মানে পোলাপানকে ডাক দিলাম, “বন্ধুগণ, তোমাদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই নাই। থাকলে এভাবে ঘুমাতে পারতানা।
চেতনা দেখাইতে হয় না বটে কিন্তু এমনেই চোখ মুখ দিয়ে বের হয়। সুতরাং তোমাদের অতি অবশ্যই যেতে হবে। “
কেমতে কেমতে যেন পোলাপান সব রাজী। এর আগে ভার্সিটি থেকে এত পোলাপান কখনও গেছে কী না জানিনা তবে এইবার চরম হইছে। বড় বড় ৫টা বাস নিয়েও জায়গা হয়নি।
সব বাসে এত্তগুলা পোলাপান দাঁড়িয়ে গেছে।
যাক গা, আগের সিনের ফেরত আসি। ত প্ল্যান হল যেগুলা মেসে থাকে ওরা সারারাত তাস খেলবে ইয়ে দেখবে আর আড্ডা দিবে। যেগুলা অনেক দূরে থাকে তারা রাতে ভার্সিটির সামনে ঘুরঘুর করবে। আর সার্কেলের যেই একটা বাসা থেকে যাবে মানে কী না মনীষী আকাশ_পাগলা, সে ভোর চারটায় মিরপুর ১৪তে বাকিদের মেসে চলে আসবে।
ত ঘুম ত আর হল না। এমনিতেও প্রচুর কাজ ছিল সন্ধ্যায় ঘুমানোর সুযোগই নেই। টানা চারটা পর্যন্ত কাজ করছি। পোলাপান কল দিলো যেন না ঘুমাই, আমিও একটু পর পর সবাইকে কল দিয়ে বিরক্ত করি। অবশেষে যখন ভোর চারটা আমি পুরা রেডি তখন টের পেলাম দুনিয়া রেডি না।
আরে পুরা রাত তখন। কী করি !!
শীতের মধ্যে কানতে কানতে বের হলাম। আমার আব্বা মহান। রিকশা না পাওয়া পর্যন্ত আমাকে এগিয়ে দিলো। আব্বাকে উঠাতে হইছিল কারণ এত রাতে নিচের গেটের কয়েকশত তালা খুলার চাবি আমার কাছে নাই।
যাক গা, ঢাকা শহর একটা চিজ। এত রাতেও রাস্তা ঘাট খালি নাই। একটা না একটা মানুষ আছেই। আমি আর আব্বা কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাও করলাম, “ভাই এত রাতে কইত্তে আইলেন? কই যাবেন?” আহারে !! কত মানুষের কত কথা। কেউ যাবে দোকানে (মানে এই সময়েও তার বিক্রি হয়।
ব্যাটার দোকানটা আমার ইয়ের না ত !! ) আবার কেউ বলে, “এমনেই বাইরইছি। “ !!!
ত রাতের বেলা মিরপুর ১০ থেকে ১৪ যাওয়ার সিস্টেম পাচ্ছি না। সিএনজি বা চ্যাম্পিয়ন ভর্তি না হলে ছাড়ছে না। নিলাম একটা রিকশা। অতক্ষণে সাড়ে চারটা।
বাস ছাড়বে ৫টায়। মিরপুর ১৪ তে পৌঁছানোর আগেই ঝাড়ি খেয়ে অর্ধেক নেতায়া গেছি। যাক গা, আমরা সেখান থেকে কিছু না পেয়ে সবাই মিলে দিলাম একটা হাঁটা। আমরা ১০ জন।
হাঁটতেই আছি।
একসময় পেলাম একটা সিএনজি। তখন কী হল?
তখন এমন একটা জিনিস হল যেটার জন্য আমি ঠিক করলাম একটা ব্লগ এইটা নিয়ে লিখতেই হবে।
আমরা ১০ জন সেই সিএনজিতে উঠলাম। জ্বী, আমরা ১০ জন। ড্রাইভারসহ আমরা ১১ জন।
আমি বসেছি সামনে ড্রাইভারের বামে। আর আমার সাইজও ইয়ে মানে হইছে একরকম। ড্রাইভারের পাশে আরেকজন। পিছে ৩ জন। তাদের কোলে আরও ৩ জন।
আরেকজন ভিতরে পা দিয়ে বাইরে শরীর দিয়ে ঝুলতেছে। সামনে বসে আমি যা দেখলাম তা রোমহর্ষক। পুরা গ্লাস ঝাপসা। ওপাশের বন্ধুর থেকেও আমি নিশ্চিত হলাম। সামনের কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
অথচ সিএনজি ড্রাইভার দিব্যি চালিয়ে নিচ্ছে।
পুরানো একটা জোক্স মনে হল। এক লোক ড্রাইভারকে বলছে, “ভাই আস্তে চালান। নইলে ভয় লাগে। “ ড্রাইভার উত্তর দেয়, “বেশি ভয় লাগলে আমার মত চোখ বন্ধ করে রাখেন।
“
এখন আমরা বের হব সৈনিক ক্লাব দিয়ে বনানীতে। ক্যান্টনমেন্টের ভিতর দিয়ে যেতে হবে যেখানে প্রায়ই বাইকের পিছনে বসছে অথচ হেলমেট পড়ে নাই বলে পোলাপানকে নামিয়ে দাঁড়া করিয়ে রাখা হয়। থানায় দেয়া হয় সহ অন্যান্য ভাল কাজ করা হয় !!
সেইখানে আমরা একটা সিএনজিতে ১১ জন। যাই হোক, সামনে ব্যারিকেড বন্ধ করা। সাড়ে পাঁচটার আগে নাকি ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হতে দেবে না !! আরে আজব, আমরা ত ফাও চাল ডাল পাই না, আমাদের কাজ আছে না? সব নিয়মেরই একটা যুক্তি থাকে, কিন্তু এই আজগুবি নিয়মের কোন যুক্তিই পেলাম না।
এই কথা বলাতেই আমার কয়েক বন্ধু ক্ষেপে গেল, “ওরা যে ওদের এলাকার ভিতর দিয়ে যেতে দিচ্ছে এই ত বেশি!” যাক গা, যার দেশ সেই ত চালাবে। আমরা আর কী !!
ত আমরা ব্যারিকেডের সামনে অপেক্ষা করতে লাগলাম। আর সাত মিনিট। ওদিকে ভার্সিটি থেকে বাস ছাড়ার কথা ৫টায়। বাস শুধু আমাদের জন্যেই দাঁড়িয়ে আছে।
আচমকা সবাই সঠিক সময়ে পৌঁছে গেছে। স্যাররা পর্যন্ত চিল্লাইতেছেন বাস ছাড়তে।
ত সোলজার ভাই একটা একটা করে সামনে থেকে “স্টপ সাইন” সরাচ্ছেন, আর আমরা দাঁত কামড়ে বসে আছি। যদি ভিতরে দেখে কী যে হবে !! আপনারা ত জানেন, আমি একজন মনীষী। আর মনীষীদের মাথায় অনেক প্ল্যান থাকে।
ত আমি চট জলদি ড্রাইভার ভাইকে হিসাবটা বুঝিয়ে দিলাম। সোলজার ভাই যখন স্টপ সাইন সরাবে তখন নিশ্চয়ই আমাদের দিকে তাকিয়ে ডানে এক পা এক পা করে যাবে না। উনি স্টপ সাইনটা নিয়ে ডানে ঘুরবেন। এরপর সোজা হেটে সরাবেন। ত আমি টাইম সেট করে দিলাম।
শেষ স্টপ সাইনটা যখন সরানো হবে তখন সিএনজিটা আস্তে করে সামনে বাড়ছে। খুব আস্তে। যখন সোলজার ভাই ডানে ঘুরে গেল আর আমরা স্পিড কিছুটা বাড়িয়ে তার পিছে দিয়ে বেরিয়ে এলাম।
কিন্তু না, এখনও বিপদ শেষ হয় নি। সামনের মোড়েই চেক হচ্ছে।
আমরা আবার স্লো করে দিলাম স্পিড। দুটা সিএনজিকে আগে যাবার সুযোগ দিলাম। এরপর হঠাৎ করে গতি বাড়িয়ে দুটার মাঝে চলে আসলাম। এরপর ফাকাতালে পার হয়ে আসলাম।
ভাই রে, পুরা লারা ক্রফট মনে হচ্ছিল !! কঠিন পাজল।
কিছু করার নাই বিজয় দিবসে ফুল দিতে গেলে একটু কষ্ট ত করতেই হবে। যাক গা, ওদিকে স্যাররা তুমুল বকাবকি করছেন ক্লাসমেটদের যে কারও জন্য ৫টা বাস থেকে থাকতে পারে না। কিন্তু ওদিকে ক্লাসের খুব ভাল একটা ছেলে স্যারকে বুঝালো যে স্যার বাসের তার কাটছে। একটু সারতে সময় লাগবে। হেন তেন।
আর আমিও নিজেই প্রথম জানলাম যে ভোরে ক্যান্টনমেন্টে বের হতে দেয় না। সুতরাং স্যাররাও জানেন না। আর যেই বন্ধুকে আমরা কৈফিয়ত দিলাম (যে বাস দেরী করালো) সে নিজেও মনে হয় বিশ্বাস করলনা আমাদের কথা।
যাক গা, বাসে ত শুরু হল তুমুল শয়তানি। পুরা রাস্তা জুড়ে একটূ পর পর ভার্সিটির পোলাপান উঠতেছে।
কপাল ভালো হোক বা খারাপ, আমাদের পুরা ব্যাচে কোন মেয়ে নাই। মানে, ৪৪০ জনের মাঝে ৩টা। সুতরাং বাসে ত যেমনে পারি যত পারি ইয়ে করলাম।
অবশেষে আমাদের বুদ্ধিমান ম্যানেজমেন্ট (চাচা চৌধুরীর বুদ্ধি কম্পুটারের চাইতেও প্রখর, সালঃ ১৭৫২ ইং)ঙ্গামাদের নামিয়ে দিল সাভারের অনেক আগে বাইপেলে। সাভার থেকে মোটামুটি ৫ কিলোমিটার দূরে (একুরেট জানিনা।
সবাই তাই বলল)। এখন বাকিটা হাঁটতে হবে। মোটামুটি আমরা ৩৮০ জন। বিরাট কাফেলা। রাস্তার এই মাথা থেকে ওই মাথা শুধু আমরা আর আমরা।
আস্তে আস্তে যাইতেছি। লাইন মেন্টেইন করা হচ্ছে সুতরাং হাঁটার গতি আরেকটু বাড়লেই আমরা শামুকের গতি পাবো এমন অবস্থা। হঠাৎ করে “মনীষী আকাশ এন্ড ফ্রেন্ডস” গং এর খেয়াল হল, পিছে থাকলে ত ফটোতে আমরা থাকবো না। অতএব জোরে হেঁটে একেবারে সামনে যেতে হবে। সুতরাং শুরু করলাম হাঁটা।
অতক্ষণে পিছনের পোলাপান ধরে ফেলছে ব্যাপারটা। আমরা আগে যাই, ওরা আমাদের আগে যায়। আমরা তার আগে যাই, পোলাপান আমাদের আরও সামনে যায়। এভাবে কীভাবে কীভাবে যেন চট করে আমরা অনেক দূর চলে এসে একেবারে স্মৃতি সৌধে ঢুকে বুঝতে পারলাম যে ব্যানার আর আমরা ত ভীড়ের মাঝে ঢুকে গেছি, কিন্তু পিছনের অর্ধেক পোলাপান এক কিলোমিটার পিছে।
শুধু তাই না, দেখি গেটের কাছে কত গাড়ি।
আর আমাদের ম্যানেজমেন্ট গাড়ি থামাইছে সেই মঙ্গল গ্রহে। আর এতক্ষণ ফাও হাঁটলাম। আসছি সেটা ত বুঝলাম, কিন্তু যেতেও ত হবে। তখন?
এখন কাফেলা অর্ধেক। এই ভীড়ের মধ্যে অবস্থা খুব খারাপ।
মনীষী এন্ড ফ্রেন্ডস গং এ আবার একজন মূর্তিমান বুদ্ধিজীবী আছেন। উনার অত্যাচারে আমার প্রাণ যায় দশা। উনার ডায়গল, “দেখ দোস্ত আমি কিন্তু মন থেকে আসছি, তোরা এরকম ফাজলেমি করবি না। “ এবং “রাজাকারের বাচ্চা এত নড়বি না। তোরা ত আসতেই চাস না।
” – টাইপ।
জাকারিয়া পার্টি ফুল দিয়ে বেরিয়ে আসছে। প্রায় ৫ মিনিট ধরে ওদের কাফেলা চলছে। শেষ আর হয়ই না। এত মানুষ সত্যি সত্যি ওদের ভোট দিলেও ত দেশটা অদেরই।
আমি ত পুরা অবাক। যাই হোক, এদের পতাকা হল পাকিস্থানের পতাকা + দুইটা অতিরিক্ত স্টার। আবার আরবী লেখা পতাকা। কিন্তু এত শত সাপোর্টারের মাঝে একটাও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নাই। সত্যি রে ভাই, একটাও নাই।
প্রায়ই মনে চাইলো যে ওদেরকে আমাদের থেকে একটা ধার দেই।
এমন সময় সরকারী দল আসল। ফুল দিয়ে যেই রাস্তা ধরে বের হবার কথা সেই রাস্তা দিয়ে ওরা সোজা ঢুকে গেল। ফুল দিয়ে বেরিয়ে এলো। আমরা হা করে দাঁড়িয়ে দেখলাম।
যাক আস্তে আস্তে আমরা প্রায় কাছাকাছি চলে আসছি। এমন সময় দেখি মূলের অর্ধেক কাফেলা মানে প্রায় ২০০ জন থেকে এখন আমরা ৩৫ থেকে ৪৫ জন। আরে! বাকিরা কই গেল? আমরা ত ছবি তুলার জন্য সামনে সামনে ছিলাম, কিন্তু বাকিরা দেখি অমুক মিছিলে তমুক বন্ধুকে দেখে হেন্ডশেক করতে চলে গেছে। মিছিলের বাইরে ঝিলের ধারে ভেটকি মেরে ফটো তুলতেছে। কয়েজন দেখি মহিলা হল থেকে আসা মিছিলের আসে পাশে ঘুরতেছে।
ওরে বাবা, তাই বসে ২০০ থেকে ৪৫?
প্রতিটা গাণিকিত ইকোয়েশন আসলে ভবিষ্যত বলে। সহজ কথায়, এক্স + ২ = ৩ বলে দেয় যে, দুটার সাথে আরেকটা ইয়ে মিলালে আমাদের কাছে ৩টা ইয়ে হবে। ত আমার বন্ধু এই সমস্যার এক অমোঘ ইকোয়েশন দিলো। গেট দিয়ে কয়জন ঢুকবে আর কয়জন বের হবে তা কনস্টান্ট। আর মনীষী ডাল্টন চাচা ত আগেই বলেছেন, ”ভিতরের অস্থির অণুরা পাত্রের পুরা জায়গা দখল করবে সেটাই স্বাভাবিক ও শাশ্বত।
“
পোলাপান বাণী দিচ্ছে, “ঐ সামনের দলরে আমাদের ফুল দিয়ে দে। ওরা আমাদের হয়ে দিয়ে দিবে। “
সামনে থেকে ফটো তোলার জন্য এত যে কষ্ট, সেই অমোঘ মুহূর্তে হুড়োহুড়ির চাপে আমি পিছে পরে গেলাম। আর ফটোতে আমি নাই !!
ধূর শ্লা।
ত আমরা যখন বের হওয়ার দিকে এগুচ্ছি, যতই আগাই পিছে দেখি আমাদের লাইন ততই বড় হয়।
যত আগাই ততই বড় হয়। অবশেষে আমরা ২০০ জন্য লাইন ধরে বের হলাম। বের হয়েই বাকি ১৮০ জনের সাথে দেখা। উনারা মাত্র পৌছাইছেন।
আফসুস, ফটোতে আর ক্যামেরা তে দেখা গেছে আমরা ব্যানারের পিছে ৪৫ জন ম্যাক্সিমাম।
যাক গা, এখন ফেরত যেতে হবে। এই বড় রাস্তা !! হায়রে। শুরু করলাম হাঁটা যে যত দ্রুত পারি। পরে কী হল? আবার হারালাম। অবস্থা এমন যে পুরা রাস্তা শুধু গাড়ি আর গাড়ি যায়।
কেউ হাঁটে না। আমি একা ঠিক মত চিনিও নাই। হাঁটি আর হাঁটি।
অবশেষে এক ক্লাসমেটের সাথে দেখা। তার বুদ্ধি আবার বাড়ন্ত।
যতবারই বলি, “চলো গাড়িতে উঠি”, ততবারই সে বলে, “আরে সামনেই ত আমাদের গাড়ি। “
বহুক্ষণ পরে যখন একদম বসে যাব তখন দেখি চলে আসছি। পোলাপান বিপদের সত্যিকারের সাহায্য যে করতে পারেন, তার সাথে চলে এসেছে। জ্বী, উনারা হলেন রিকশাওয়ালা ভাই। পোলাপান রিকশায় চলে আসছে।
সবাই ১ ঘণ্টা আগে পৌঁছাইছে।
যাক, এখন বাসে দাঁড়িয়েই না হয় যাওয়া লাগবে। দেখি, এক বন্ধু কোন ভাবে একটা সিট রাখছে আমার জন্য। বসলাম। বহু লোক আর আমরা সিনিয়ার।
তাই ব্রেকফাস্ট সিনিয়াররা এক প্যাকেট দুজন শেয়ার করে খেলাম।
ভার্সিটি আসলাম বেলা ১১টায়। এখন বাসায় আসার পালা। উঠলাম বাসার বাসে। এরপর কীভাবে কী হল মনে নাই।
যতদূর মনে আছে, এমন আরামের ঘুম !! আহারে !! যাক বাস এখন যেখানেই থাকুক মিরপুর ১০ এ একসময় না একসময় ত যাবেই। ত আমি টাইট হয়ে বসে রইলাম। এরপর সম্ভবত আবার ঘুম আর আবারো ১০ নাম্বার মিস করলাম।
যাক গা, কিছু দূর সামনে গেছিলো মাত্র। নেমে আরেকটা বাস ধরে বাসায় চলে আসলাম।
ঘড়িতে তখন বিকাল ৪টা।
পরদিনের প্রজেক্টের কাজও হল না। ল্যাব রিপোর্টও লেখা হল না। ক্লায়েন্টের কাজ ছিলো তাও শেষ হল না। হাতে কিছু কাজ ছিলো তাও হল না।
ফুল দিতে যেয়ে fool হয়ে ফেরত আসলাম। আচ্ছা, বিকাল বেলা ফুল দেয়া যায় না? সবাই খালি সকালে যায় ক্যান?
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা। পোলাপানের সাথে বাসে করে সাভার যাইতেই আমার ঠেলা বের হয়ে গেছে। আর মানুষ তখন এর চেয়ে বেশি মানুষের সাথে বেশি ঝামেলা করে গাট্টি বস্তা সাথে নিয়ে দেশের বাইরে গেছে। কষ্টটা আন্দাজ করতে পারছি।
© আকাশ_পাগলা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।