নতুন পৃথিবীতে সবাইকে স্বাগমতম!
১৬ ডিসেম্বর এমনিতেই আমাদের মহান বিজয় দিবস! আর এই বিজয়ের দিবসে আমাদের যোগ হলো আরেকটি বিজয়ের আনন্দ! কারণ, ভার্চুয়াল জগতে পরিচিত, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে অপরিচিত (ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে), একই পরিবারের (সামহোয়ারইনব্লগ পরিবার) এমন অনেক জানা, অথচ অচেনা অনেক বন্ধুদের সাথে একদিনে একই সময়ে দেখা হওয়াটাকে আমি অবশ্যই একটি বিজয়ের সাথেই তুলনা করবো।
সত্যি বলতে গেলে, অনেকের মনেই একটি আশঙ্কার আভাস ছিলো যে, নানারকম সীমাবদ্ধতার কারণে আসলে এমন একটি গেট-টুগেদার কতটুকু সফল হবে! তাছাড়া কতজনই বা সাড়া দেবেন? কিন্তু আরো সত্যি বলতে গেলে এটা না বললে অন্যায় হবে যে, উপস্থিত ব্লগারদের অদম্য ইচ্ছা, নিখাঁদ আন্তরিকতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ও বন্ধুদের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার কারণে শত সীমাবদ্ধতার মাঝেও সফল হয়েছে সামহোয়ারইনব্লগ পরিবারের সদস্যদের এমন অভাবনীয় মিলন-মেলা! তবে, অত্যন্ত কঠিন এই বিষয়টিকে অনেকটাই সহজভাবে উপস্থাপনের জন্য সবার ওপরে ছিলো সুগঠিত পরিকল্পনা, যেটির জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ পাবে রিজভী রহমান এবং একরামুল হক শামীম। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সামহোয়ারইনব্লগের সকল ব্লগারদের জন্য এটি তাদের সারপ্রাইজ গিফট!
যতটুকু প্রত্যাশা ছিলো, তারচেয়ে হাজারগুন আনন্দ এখানে হয়েছে। উপস্থিত সবার প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক আমি কেবল একজনের কথাই উল্লেখ করবো, ব্লগারদের মধ্যে সারপ্রাইজ প্যাকেজ ছিলেন কালপুরুষ। ব্রাউন কালারের মোজার সাথে কালার ম্যাচিং করে পড়া অক্সফোর্ড ক্যাটেগরির শু, ঝমলমে রয়েল ব্লু কালারের পার্টি শার্ট, এবং চোখে সোনালী ফ্রেমের চশমা যেন তার মনের আনন্দেরই বহি:প্রকাশ ঘটাচ্ছিলো! নিজ নিজ স্টাইলে প্রত্যেকের চোখেই ছিলো আনন্দের বহি:প্রকাশ।
আসলে কারোরই যেন মনে হয়নি যে, অনেকের সাথে প্রথমবারের মতো দেখা হচ্ছে; মনে হয়েছে অনেক দিনের পরিচিত বন্ধুদের সাথেই অনেকদিন পরে দেখা হলো!
খুব মজার একটি বিষয় ছিলো মাহবুব মোর্শেদ ভাইর একটি ডায়লগ। পরিচয় পর্বে নিজরে পরিচয় দেবার সময় মাহবুব মোর্শেদ বললেন, আমি মাহবুব মোর্শেদ এবং আমি এই আগুনটা জ্বালাইছি! সবার মধ্যে তখন পড়ে যায় হাসির রোল। উল্লেখ্য, আগুনটি ছিলো ঐতিহাসিক সেই ক্যাম্পফায়ারের আগুন।
ব্লগারদের গোল হয়ে বসা এবং মাঝের রোমান্টিক ক্যাম্পফায়ার যেন বিশেষভাবে প্রস্তুত হয়ে ছিলো আরিল এবং তার স্ত্রী জানা'সহ তার টিমকে বরণ করে নেবার জন্য। এর চেয়ে ভালো ওয়েলকাম অনার বোধহয় তাদের জন্য হতে পারতো না! এবং আরিলও খুব অল্প সময়ের ভেতরেই সবাইকে যেন আপন করে নিলেন!
ব্যক্তিগতভাবে আমি এসেছিলাম বিকেল ৫ টার সময়, সাথে দু'জন গেস্ট নিয়ে।
টঙ্গী গিয়েছিলাম ব্যক্তিগত প্রয়োজনে, সেখান থেকে ফিরতে দেরি হয়ে গিয়েছিলো। আমার আরেকটি নীরব সঙ্গী ছিলো, সেটি হলো- আমার দুই টনসিলের দারুন ব্যথা; তবুও সবার সান্যিধ্যে সেটিও ভুলে গিয়েছিলাম! আমার গেস্ট দু'জন এই আয়োজন দেখে দারুনভাবে মুগ্ধ এবং তারা বেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ব্লগে যোগ দেবার।
এই মিলনমেলার মাধ্যমেই ৫ বছরেরও বেশি সময় পর দেখা হলো আমার কলেজ জীবনের বন্ধু ব্লগার রাকিবের সাথে। তার সাথে দীর্ঘদিন পরে দেখা হওয়াটা আমার আনন্দে যোগ করেছিলো বিশেষ মাত্রা।
অনিবার্য কারণেই গত দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে আমি ব্লগে থাকতে পারিনি।
তাই ব্লগে ফিরে আসার জন্য এরচেয়ে ভালো উপলক্ষ বোধহয় আর কিছু হতে পারতো না! যাদের সাথে কথা হয়ছে, তাদের সবাইকেই ভালো লেগেছে; যাদের সাথে হয়নি, তাদের সাথে পরবর্তীতে কথা হবার প্রত্যাশা রইলো।
আয়োজনের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলো সেলিব্রেশন কেক, ভাপা পিঠা, সিংগারা/পনির এবং সারপ্রাইজ অফার আনলিমিটেড চা! উল্লেখ্য, চা-টিও ছিলো এক্সক্লুসিভলি মেড এবং শুধু এক কাপ চা খেয়েছেন, এমন কেউ আছে বলে আমার মনে হয় না।
তবে অসাধারণ এই আয়োজনকে সফল করার জন্য সবচেয়ে বেশি অবদান উপস্থিত ব্লগারদেরই; কারণ, তারা না এলে এই আয়োজন হয়ে যেত বৃথা, এই আয়োজন হতো হতাশার। এবং এই আয়োজনে উপস্থিত থাকতে পেরে নিজেকে অবশ্যই ধন্য মনে করছি।
আর এই আয়োজন থেকে আমরা যে লাকি সেভেন এক্সক্লুসিভ তথ্য আমার চোখে ধরা পড়েছে, সেগুলি হলো:
১. সকল ব্লগারই আন্তরিক, বন্ধুসুলভ, এবং রূচিশীল।
২. ব্যক্তির ব্লগের ব্যক্তিত্ব এবং বাস্তব ব্যক্তিত্ব অনেক ক্ষেত্রেই আলাদা এবং টাচিং।
৩. রিজভী ও শামীম খুব ভালো অর্গানাইজার।
৪. আরিল ভালো বাংলা বলতে পারেন।
৫. নির্ঝর ভাই এখনো তার শালটি সামলাতে শেখেননি (যে কারনে তিনি বসতে বারবার দ্বিধা বোধ করছিলেন)!
৬. মাহবুব ভাই ভালো ক্যাম্পফায়ার জ্বালাতে জানেন।
৭. একটি আন্তরিক উদ্যোগ এবং প্রত্যেকের নিরলস সহযোগিতায় যে কোন কিছু করা সম্ভব!
তবে খুব মন খারাপ লাগছে, নানা সীমাবদ্ধতার কারণে যারা আসতে পারেননি তাদের জন্য; বিশেষ করে যখন তাদের আফসোসপূর্ণ কমেন্ট দেখছি।
তারা যদি ভেবে থাকেন, তাদের কথা আমরা আয়োজনে মনে করিনি, তাহলে অনেক বড় অন্যায় হবে। আমি বিশ্বাস করি, স্থান-কাল-পাত্রভেদে সামহোয়ারইনব্লগের সবাই মিলে একটি বড় পরিবার, যে ভাই-বোনটির সাথে এবার দেখা হলো না, হয়তো আগামীবারই সেটি হয়ে যাবে!
আর বিনীতভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যে, অনিবার্য কারণেই এই পোস্টে ছবি দিতে পারলাম না। তবে, খুব শিঘ্রই এবং হয়তো আজ রাতের মধ্যেই ছবির একটি পোস্ট দিতে পারবো। তবে সবচেয়ে এক্সক্লুসিভ ছবি আমরা পাবো সম্ভবত নির্ঝর ভাইর কাছ থেকে।
সবাইকে অনেক অনেক আন্তরিক ধন্যবাদ!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।