পাইলস বলতে বোঝায় মলদ্বারের আশে পাশের রক্তনালী গুলো ফুলে ব্যথার সৃষ্টি করা। এটি মলদ্বারের ভিতরেও হতে পারে, বাইরেও হতে পারে। এতে ব্যথা, চুলকানি বা রক্তপাত হতে পারে।
কেন হয়?
1. যারা শাকসব্জী বা পানি কম খান তারা দীর্ঘদীন কোষ্টকাঠিন্য তে ভুগতে পারেন। তা থেকেই উতপত্তি হতে পারে পাইলস এর।
2. অতিরিক্ত ওজন ও পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
3. গর্ভাবস্থার শেষের দিকে অনেকে পাইলস এর সম্মুখীন হতে পারেন। বাচ্চার গ্রোথ এর সঙ্গে সঙ্গে মলদ্বারে চাপ পরে পাইলস হয়।
4. পায়ুপথে যৌনমিলনে অভস্ততা পাইলস এর সূত্রপাত ঘটাতে পারে।
5. বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পায়ুপথের পেষী গুলো দূর্বল হয়ে পরে।
যাদের পরিবারে পাইলস হওয়ার ইতিহাস আছে, তারা তাই বৃদ্ধ বয়সে পাইলস এর সম্মুখীন হতে পারেন। তাই আগে থেকেই হেলদি খাদ্যাভাস গড়ে তুলুন।
কি খাবেন?
1. প্রচুর শাকসব্জী খান। এতে থাকা আঁশ মলে পানি ধরে রেখে মলকে নরম করে। ফলে কোষ্টকাঠিন্য এর সম্ভাবনা থাকেনা।
2. ডাল জাতীয় খাবার খান। এক কাপ ডালে ১৫-১৬ গ্রাম আঁশ থাকে। দিনে অন্তত দুই কাপ ডাল খান।
3. খোসাহীন শস্যের চাইতে খোসা যুক্ত শস্য খান। সাদা চাল বা আটা এর বদলে লাল চাল বা আটা খান।
খোসা, প্রচুর পরিমানে আশ ও ভিটামিন সরবরাহ করে।
4. নিয়মিত দই খান। এতে থাকা উপকারী ব্যক্টেরিয়া কোষ্টকাঠিন্য রোধে সহায়তা করে।
5. দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি খান।
কি খাবেন না?
1. পাস্তা, ক্র্যাকার, ভাত, বিস্কিট, রুটি ইত্যাদিতে আঁশ অনেক কম।
ধরুন আপনি এক বেলার খাবারে নিয়মিত পাস্তা খান বা এক প্যাকেট বিস্কিট খান বা অল্প পরিমান সব্জী দিয়ে বা সব্জী ছাড়া প্রচুর পরিমাণে রুটি বা ভাত খান- এই ধরণের খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত থাকলে কিন্তু আপনার শরীরে আঁশ গ্রহণ কম হচ্ছে। ফলে দেখা দিতে পারে কোষ্টকাঠিন্য। মোটকথা কোষ্টকাঠিন্য তথা পাইলস নিরোধে কার্বোহাইড্রেটের সঙ্গে আঁশ এর অনুপাত ঠিক থাকতে হবে।
2. ফ্যাটি ও উচ্চ সুগার যুক্ত খাবার নিয়মিত গ্রহণের অভ্যাস ও কোষ্টকাঠিন্য তথা পাইলস ঘটাতে পারে। যেমন, গরুর মাংস, চীজ, মাখন, ফ্রাইড খাবার, চকোলেট, আইস্ক্রীম, কোমল পানীয় ইত্যাদি।
ব্যায়ামঃ
যাদের কোষ্টকাঠিন্য আছে তারা ব্যায়ামের মাধ্যমে কোষ্টকাঠিন্য কমাতে পারেন। ফলে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। মাটিতে সোজা শুয়ে পরুন, পা মাটিতে মেশানো থাকবে, পায়ের পাতা ছাদমুখী থাকবে। এবার পেটের পেষী ভিতরে দিকে টেনে ধরে আস্তে আস্তে শ্বাস নিন ও ডান পা টা আস্তে আস্তে দূরে নিন। যতদূর পারেন করুন, এরপর শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পা আগের জায়গায় আনুন।
এরপর বাম পা ব্যবহার করে একি ব্যায়াম করুন।
আয়ুর্বেদিক চিকিতসাঃ
এক চিমটি জিরা বা বিটলবন দিয়ে দুধের মাঠা খান।
পাইলস এর যত্নঃ
মলদ্বার ও প্বার্শবর্তী অঞ্চল যথাসম্ভব পরিষ্কার রাখুন। সুতী ও ঢিলেঢালা অন্তর্বাস পরিধান করুন। অন্তর্বাসের ভিতরে নরম কোন প্যাড ব্যবহার আপনাকে স্বস্তি দেবে।
মাঝে মাঝেই sitz bath নিন। এর অর্থ হলো পানিতে কোমর পর্যন্ত ডুবিয়ে বেশ কিছুক্ষন বসে থাকা। ডাক্তারের পরামর্শে পাইলস এর ক্রীম লাগান। পাইলস এ বরফ প্রয়োগ করতে পারেন মাঝে মাঝে।
(সংগৃহীত) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।