জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের যেসব অভিযোগ রয়েছে, তার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গণহত্যা (১২২৫ জন), চারজনকে হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও ১৩ জনকে নির্যাতনসহ শতাধিক বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠন করার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংস্থা।
আজ সোমবার ধানমন্ডির সেফ হোমে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আজহারুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, আজহারুল ইসলাম ১৯৭১ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। ওই বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি রংপুর শাখার ইসলামী ছাত্রসংঘের (জামায়াতের তত্কালীন ছাত্র সংগঠন) সভাপতি এবং রংপুর জেলা আল-বদরের কমান্ডার ছিলেন।
তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানি সেনাদের যোগসাজশে জামায়াতে ইসলামী ছাত্রসংঘ ও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের চক্রের সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তাকারী ও হিন্দু সম্প্রদায়সহ রংপুরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করে তাঁদের অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা ও গণহত্যার ষড়যন্ত্র এবং তা বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, একাত্তরের ১৬ এপ্রিল আজহারুল ইসলামের সহায়তায় রংপুর জেলার বদরগঞ্জের ধাপপাড়ায় ১৫ জন নিরীহ বাঙালিকে গুলি করে হত্যার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ৩০ এপ্রিল রংপুর কারমাইকেল কলেজের চারজন অধ্যাপক ও তাঁদের স্ত্রীকে ক্যাম্পাসের বাসা থেকে অপহরণ করে দমদমা ব্রিজের কাছে গুলি করে হত্যা করার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, আজহারুল ইসলাম ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর ও এর আশপাশের এলাকায় ছয়টি ঘটনায় নয় ধরনের অপরাধ করেছেন। এর মধ্যে অপহরণ, আটক, নির্যাতন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, গুরুতর জখম, হত্যা ও গণহত্যা রয়েছে।
তদন্তটি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস এম ইদরিস আলী। ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল এই তদন্ত শুরু হয়। শেষ হয় চলতি মাসের ৪ তারিখ। আজ তদন্ত প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির কাছে জমা দেওয়া হবে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারাধীন রয়েছে।
এ মামলায় ২৭ জনকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী করা হয়েছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।