ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছ থেকে সরকারের পাওনা ৪৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য আদালতে তুলে ধরতে কর কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করেছেন মহা হিসাব নিরীক্ষক।
মহা হিসাব নিরীক্ষকের (সিএজি) দপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড নিয়ম অনুযায়ী সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) পরিশোধ না করায় সরকার ৪৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বৃহৎ করদাতা ইউনিটে (এলটিইউ) জমা দেওয়া এ প্রতিষ্ঠানের ২০০৫-০৬ অর্থবছরের হিসাব বিবরণী, মূল্যভিত্তি ঘোষণাপত্র ও সংশ্লিষ্ট তথ্য পর্যালোচনা করে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউনিলিভার তাদের পণ্য প্রস্তুত ও বাজারজাত করার ক্ষেত্রে প্রথমে প্রস্তুতকারক ও পরবর্তীতে ব্যবসায়ী হিসেবে ভ্যাট দিয়েছে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে বিক্রির জন্য আবার মূল্য ঘোষণা করে ১৫ শতাংশ ভ্যাট এড়িয়েছে।
বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের ৬০ দশমিক ৭৫ শতাংশের মালিকানা ইউনিলিভারের এবং ৩৯ দশমিক ২৫ শতাংশের মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের।
নিরীক্ষায় দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রামের ফ্যাক্টরিতে বিভিন্ন প্রসাধন সামগ্রী উৎপাদন করে গাজীপুরের টঙ্গীতে তাদের নিজস্ব কেন্দ্রীয় গুদামে বিক্রি দেখিয়ে উৎপাদক হিসেবে ভ্যাট দিয়েছে। আর গুদাম থেকে ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে বিক্রির জন্য আবারো মূল্য ঘোষণা করে তার বিপরীতে ভ্যাট দিয়েছে তারা।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, “প্রতিষ্ঠানটি একটি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় তাদের শুধু একটি টিআইএন অ্যাকাউন্ট ও একটি বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন হয়।
“নিয়ম অনুযায়ী, উৎপাদনস্থলেই পণ্যের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে সে পর্যায়েই সব কর পরিশোধ করতে হয়। ”
“তারা (ইউনিলিভার বাংলাদেশ) উৎপাদনস্থলে সে কর দেয়নি।
এতে সরকার প্রাপ্য সম্পূরক শুল্ক থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ সরকার ৪৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। ”
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ রাজস্ব ফিরে পাওয়ার জন্য ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডকে একটি নোটিস দিলে ২০০৯ সালে তার বিপরীতে আদালতে একটি রিট আবেদন করে।
আইনি কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে সরকারের প্রাপ্য এ অর্থ ফিরে পাওয়ার বিষয়টি ত্বরান্বিত করতে আদালতে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরার জন্য সুপারিশ করেছেন নিরীক্ষক।
বাংলাদেশে সাবান ও বিভিন্ন প্রসাধন সামগ্রী প্রস্তুত ও বাজারজাত করে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড এবং দেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি ঘরে ইউনিলিভারের এক বা একাধিক পণ্য ব্যবহার করা হয়।
দেশের প্রায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ ইউনিলিভারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং সরবরাহকারী, বিতরণকারী ও সেবাদাতা হিসেবে কর্মরত আছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।