এই আমি কতটা পেরেছি চিনতে এই আমাকে, আমি কি স্বার্থপর না স্বার্থের কারনে পরোপকারী !!! বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ধ্বংস স্তুপে পরিনত হওয়া যেসব স্হাপত্যের নিদর্শন আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে কুমিল্লার অদূরবর্তী, জেলা শহরের পাঁচ মাইল পশ্চিমে ময়নামতির কোটবাড়ীতে ময়নামতির আনন্দ বিহার অন্যতম, একটি বৃহৎ ধ্বংসাবশেষ।
বৌদ্ধযুগের দেব বংশীয় প্রভাবশালী রাজা আনন্দ দেব এই বিহার নির্মান করেন বলে এর নাম দেয়া হয়েছে আনন্দ বিহার। আনুমানিক ৮ম শতকের প্রথমার্ধে এটি নির্মিত বলে ধারনা করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এখানে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী অবস্থান করেছিল। ৮০ এর দশকে এর খনন কাজ সম্পন্ন হলে এখানে বৌদ্ধ সভ্যতার বহু নিদর্শন এবং আব্বাসীয় যুগের কয়েকটি মুদ্রা পাওয়া যায়।
বৃটিশ সামরিক বাহিনীর দ্বারা নির্মিত বর্তমানে বাংলার অন্যতম স্বনামধন্য সেনা নিবাস, আব্দুল হামিদ খান কর্তৃক নির্মিত বাংলাদেশের পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (BARD), সামরিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্যাডেট কলেজ, দক্ষ কর্মী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, কুমিল্লা পলিটেকনিকেল কলেজ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সোমপুর বিহাড়, লালমাই পাহাড় দ্বারা বেষ্ঠিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এক মনোরম পরিবেশের রচনা সৃষ্টি করেছে প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য।
রাজা আনন্দদেব কর্তৃক নির্মিত সু-সজ্জিত বহু কক্ষ বিভক্ত সেই বিহারটি এতই মনোরম , মনোমুগ্ধকর যা খুব সহজেই একজন প্রেতাত্মাকে প্রফুল্ল করে তোল।
বেশ কয়েকটি কক্ষে বিভক্ত । যেমন প্রধান ফটকে ঢুকেই অতিথি সেবাদান কক্ষ বা অতিথি বিশ্রামাগার মোটকথা বৈঠকখানা। রাজার নিদ্রাস্থান, রানীর সাজসাজ্জা, স্নানার, স্ত্রী-নিবাস প্রভৃতি বিশিষ্ট মূল স্থাপনাটি ছিল অত্যাধুনিক।
কায়েদী ও অস্ত্রাসক্ত বাহিনী বা নিরাপত্তা প্রহরীদের জন্য নির্মিত মূল স্হাপনার চতুর্দিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কক্ষ পরিবেষ্টিত।
প্রাচীন যুগের প্রথমার্ধে রাজা আনন্দদেবের শাসনামলে রাজস্থান হিসেবে পরিচিত থাকলেও তাদের ক্ষমতা হস্তান্তরের পরেই এটি ধ্বংস স্তুপ হিসেবে মহাকালের অতল গভীরে হারিয়ে যায়। হাজারো বছর পর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক এটি আবিষ্কৃত হলে তাদের ব্যবহার্য সকল প্রকার জিনিস পত্রই পাওয়া যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্বর্ণ -রুপার মুদ্রা, তালপাতায় ও পোড়ামাটির বুকে লিখিত সংবিধান ও দলিল। ঘরনীদের ব্যবহৃত ব্রুঞ্জও মৃৎপাত্র, হাড়িপাতিল, বাসন-বাটি, গামলা,বল,ব্রুঞ্জ ও মাটির নির্মিত পানির পাত্র।
শিল্প-পাটা,কুন্ডলীগুলো ছিল পাথরের তৈরী। লোহার ও পাথরের তৈরী বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র, দা, কাচি, খন্তে, পাথর ও মাটি দ্বারা নির্মিত বিভিন্ন প্রাণীর দেব-দেবী,পশু-পাখি, মূর্তি ছিল প্রতিটি দেয়ার মূল সৌন্দর্যের স্থাপনা।
প্রাচীন নিদর্শন ধরে রাখার জন্য ময়নামতির জাদুঘর নির্মিত হয়েছে এবং মাটির অতল গভীরে হারিয়ে যা্ওয়া রাজপ্রসাদ থেকে কুড়িয়ে পাওয়া ব্যবহৃত জিনিসপত্র সংরক্ষিত আছে এই মায়নামতি জাদুঘরে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।