আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিজয়ের মাসের ভাবনা, হতাশা ও রাজনীতিবিদদের নিলজ্জ ভন্ডামী

সত্য যেখানে অসহায় আমি সেখানে হতে চাই সহায় ও সঙ্গী। বাচাল, ভন্ড, ধর্মব্যাবসায়ীরা, মিথ্যাবাদী, সত্য গোপনকারী, অন্ধ দলীয় সমর্থকরা আমার ঘৃনার পাত্র। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। অনেক ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্যদিয়ে অর্জিত হয়েছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা। দীর্ঘ ৯ মাসের সেই ভয়াল স্মৃতি আজও অনেককে ডুকরে ডুকরে কাঁদায়।

আর আমরা যারা নতুন প্রজন্ম তারা অনেকেই হয়ত তখনকার বাস্তব অবস্থা বুঝতে পারছিনা বা কেউ কেউ বুঝার নুন্যতম চেষ্টাও করছিনা। আজ আমাদের মহান এই স্বাধীনতা হতে চলছে তামাশা ও হাস্য-রসের বস্তু ! কেউ বলছেন অতীত আঁকড়ে ধরলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। যেমনটা আমাদের দেশের বর্তমান বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত মহা-সচিব মির্জা ফখরুল তাঁর একটি লেখায় প্রচার করেছিলেন। ঐ বিষয়ে বিস্তারিত নিয়ে সামনে কোন এক লেখায় আসব। আবার কেউ বলছেন স্বাধীনতার এত বছর পরও এগুলো নিয়ে বিতর্ক করে দেশকে গৃহ যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ! কেউ আবার নিজেকে মহান দেশ প্রেমিক সাজিয়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের পক্ষে কৌশলে প্রচার করে বেড়াচ্ছেন আর দেশের চিন্হিত সব স্বাধীনতা বিরোধীদের রসদ দিয়ে যাচ্ছেন।

বিভিন্ন গোল টেবিল বৈঠক করে তাদেরকে নির্দোষ ও হিরো বানানোর কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। কত টাকার বিনিময়ে তারা এসব প্রজেক্ট নিয়েছেন তা হয়ত ভবিষৎ কোন সময়ে আমরা দেশবাসী জানতে পারব। কারন সত্য ও বাস্তব কোনদিন চাপা থাকেনা। সেটা আপনা-আপনিই প্রকাশ হয়ে যায়। এটাও হবে।

আমি ঐসকল রাজনীতিবিদ, জ্ঞানী, সুবিধাবাদী দেশ-প্রেমিক, পেইড বুদ্ধিব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের এতটুকই শুধু বলতে চাই, "প্রস্তুত থাকুন সেই সময়ের জন্য, যখন আপনাদের মুখোশ জাতীর কাছে উম্মোচিত হবে। সেদিন না পারবেন কাউকে নিজের ঐ নোংরা মুখখানা দেখাতে আর না পারবেন পালিয়ে বেড়াতে। জবাব আপনাদের দিতেই হবে। " এবার আসি আমরা কি পেলাম আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ ৪০ বছরে ? অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে আমাদের দেশে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ( আমি প্রকৃত শব্দটা এখানে এজন্য ব্যবহার করেছি যে, বর্তমানে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছে যারা রাজনৈতিক সুবিধায় সার্টিফিকেটধারী মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন, আবার অনেক আছে যারা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের হয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ছিল কিন্তু তারা আমাদের দেশের স্বাধীনতার জন্য কোন কাজ করে নাই, উপরোন্ত সকল গোপন খবর পাক হায়েনাদের জানিয়ে দিত আর স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধা উপাধী নিয়েছে। আবার অনেক আছে নামকাওয়াস্তে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক সুবিধায় বিভিন্ন পদবীতে ভুষিত হয়েছে।

তাই ওরা আর সত্যিকার অর্থে যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন তাঁরা কি এক হতে পারেন ?) যুদ্ধ করেছিলেন। তাঁদের স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন দেশ। স্বাধীন অর্থনীতি। স্বাধীন রাজনীতি ইত্যাদি। আমরা কি পেয়েছি ? আমরা কি প্রকৃত অর্থে স্বাধীন দেশ পেয়েছি ? পাইনি।

আমরা কি স্বাধীন ও মুক্ত রাজনীতি পেয়েছি ? না পাইনি। আমরা কি স্বয়ং-সম্পূর্ন অর্থনীতি পেয়েছি ? না পাইনি। আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবিদের চিন্তা-চেতনা কি দেশের উন্নয়নের গন্ডিতে আবদ্ধ ? মোটেই না। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থ্যা কি স্বাধীন ও স্বয়ং-সম্পূর্ন হতে পেরেছে ? না পারে নাই। এভাবে হাজারো প্রশ্নের উত্তর হবে শুধুই না, না এবং না।

আমাদের অর্থনীতি চলে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসক্রিপশনে। আমাদের রাজনীতি চলে বিদেশী প্রভুদের ইশারায়। আমাদের দেশের রাজনীতি মানে হলে ক্ষমতার চেয়ারে বসার জন্য, সেবার জন্য নয়। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আজ বিদেশী অনুকরনের চলছে। তবে বর্তমানে একটু আশার আলো পাওয়া গেছে নতুন শিক্ষা নীতি হওয়ার কারনে।

আমাদের আদালত চলে সেই ঘুনে ধরা ব্রিটিশ আইনে। যে আইন স্বাধীন বাংলাদেশের আদলে হলে আরোও বেশী সুফল বাংলাদেশের মানুষ পেত। এটাই কি স্বাধীনতার চাওয়া ছিল ? আজ যখন দেখি ক্ষমতার স্বাদ পেতে বিদেশে গিয়ে প্রভুদের কাছে অভিযোগের ফিরিস্তি দিয়ে আসে আমাদের বিরোধী নেত্রী। দেশে কোন কুটনীতির স্বাক্ষাত পেলেই প্রথমেই নালিশ। এ যেমন বাবার কাছে ছেলে-মেয়ের আবদার।

এর পর বাবা এসে দুই সন্তানকে কিছু শর্ত দেয়। যে সন্তান বেশী সংখ্যক শর্ত মানতে রাজী পরবর্তী ক্ষমতা তার জন্য নিশ্চিত হয়ে যায়। এখানে একটা কথা আমরা সবাই জানি আর তা হলো যে ক্ষমতায় থাকে তার কাছে এটা সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি, আর যিনি বিরোধী দলে থাকেন তার জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার !!! হায়রে স্বাধীন দেশে। হায়রে অভাগা দেশ !! আর অভাগা দেশের অবহেলিত ও বঞ্চিত জনতা !!! আমরা স্বাধীনতার ৪০ বছরেও আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতাকারীদের কোন সাজা দিতে পারিনাই। উপরন্ত তাদের গাড়ীতে আমাদের সেই রক্তে রঞ্জিত লাল-সবুজের পতাকাকে উড়িয়ে পতাকার অপমান করতে দেখেছি।

দেখেছি ঐ সকর রাজাকরদের আস্ফাঁলন। আর সেই আস্ফাঁলন করার জন্য যিনি তাদের সুযোগ করে দিয়েছিলেন তিনি আর কেউ নন একজন মুক্তিযোদ্ধা !!! যিনি ওদের দেশে ডেকে এনে এদেশে রাজনীতি করার অনুমোদন দেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বিকৃত খুনিদের দিয়ে দল গঠন করানো হয়। এভাবে কতগুলো দেশদ্রহী ও খুনীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন তথা কথিত বহুদলীয় (!!!???) গণতন্ত্র (!!!)। আজ ওরা হৃষ্ট-পুষ্ট।

এরপরও থেমে নেই ওদেরকে শেল্টার দেয়া। আজ যখন ওদের দ্বারা সংগঠিত সেই ৭১ এর পৈচাশিকতার বিচারের আয়োজন করা হলো তখন বাংলাদেশের একদল ডুব দিয়ে থাকা বুদ্ধিজীবি নামের পাকিস্তান-আমেরিকার চরেরা এর প্রতিবাদে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুধু ঝাপিয়ে পড়েই খান্ত হয়নি তারা দেশে-বিদেশে যাতে এ বিচারকে প্রহসনে রুপান্তরিত করা যায় তার আপ্রাণ চেষ্টায় লিপ্ত। দেশে প্রতিদিন গোল-টেবিল বৈঠক নামে চালানো হচ্ছে অপ-প্রচার। এটাই কি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে আমাদের প্রাপ্য ? এই জন্যেই কি শহীদেরা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন ৭১-এর রণাঙ্গনে ? শুধু ঐ মুখোশধারীরাই নয়, দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও থেমে নেই।

সকল প্রকার অপ-প্রচার ও লবিষ্ট তারা দেশে ও বিদেশে চালিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী নেত্রী আগে ঐ কাজটি গোপনে করলেও আজ তা প্রকাশ্যেই করে যাচ্ছেন !!! তিনি সম্প্রতি জাতী সংঘের মহাসচিবের কাছে এ বিচার বন্ধে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন !!! এই কি আমাদের স্বাধীন দেশের রাজনীতিবিদেদের চরিত্র ? এরা কি স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ? কিছুদিন আগে মওদুদ আহম্মেদ বিএনপির পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিচার বন্ধের আহবান জানিয়েছেন !!! তারা এই ট্রাইব্যুনালকে অনাস্থা দিয়েছেন। বলছেন এটা নাকি আন্তর্জাতিক মানের নয়। অথচ আমাদের দেশের ট্রাইব্যুনালে অপরাধী হায়েনাদের জন্য যে সুযোগ-সুবিধা রাখা হযেছে বিশ্বের অনেক ট্রাইব্যুনালে সে সুযোগটিও ছিলনা বা নাই। এখানে আসামীর আপিলের ব্যবস্থা রাখা হযেছে যা অনেকে দেশের ট্রাইব্যুনালেই ছিলনা।

আমাদের দেশের মানবাধীকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড: মিজানুর রহমান যেখানে ষ্পষ্টই বলে দিয়েছেন, "ট্রাইব্যুনল সম্পূর্ন আন্তর্জাতিক মানের। " তাহলে কি স্বার্থে ও কাদের ইশারায় তারা এসব ষরযন্ত্রে লিপ্ত জাতী জানতে চায়। যারা অপরাধীদের বাঁচানোর জন্য হরতাল দেয়, প্রপাগান্ডা করে বেড়াচ্ছে, লবিষ্ট নিয়োগ দিচ্ছে তারা কি এদেশে বসবাস তথা রাজনীতি করার অধিকার রাখে ? প্রশ্নটা আমি জাতীর কাছে রাখলাম। একটু নীরপেক্ষ দৃষ্টিতে একবার ভালো করে ভেবে জবাব দিবেন আশা করি মুল পোষ্ট দেখুন: ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.