আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার জানের বড় ভাইয়ের অবৈধ প্রেম ও আমার লজ্জা পাওয়া! (হিসু কাহিনী পার্ট ৩)

"মাসুদ পারভেজ মিঠু" দ্যা "পেক পেক পেক" বয়!!! ফার্ষ্ট ডেট উইথ এ হিসু কাহিনী! হিসু কাহিনীর পরের কাহিনী (ফার্ষ্ট ডেট উইথ এ হিসু কাহিনী - ২) তারপর আমার জীবনে এমন জিনিসগুলা ঘটে যাবে আমি কল্পনাও করি নাই। প্রথম ডেটে গার্লফ্রেন্ডের কাছে শরমিন্দা হব এইটা তো ঘুমেও সপ্ন দেখি নি। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে চেয়ে আল্লাহর রহমতে যখন গার্লফ্রেন্ডের রাগ ভাঙ্গলাম তখন মারলাম গার্লফ্রেন্ডের বড় ভাইকে। আমি নিশ্চিত ওইদিনের পর তার বড় ভাই তাকে বাংলা সিনেমার ভাইদের মত ঘরে তালা মেরে রেখেছে আর বলছে “তুই আরেকদিন ওর সাথে দেখা করতে গেলে কিন্তু আমি বিয়ে করে ফেলব!” কারন আমি জানি যে ওর ভাই বিয়ে করতে ভয় পায়। মেয়ে দেখলে নাকি ওর হাটুর বাটি নড়ে।

বিয়ে করার ইচ্ছে থাকলেও প্রকাশ করতে পারে না। সেহেতু আমার উপর রাগ করে ও একটা রিস্ক নিতেই পারে। কারন ও জানে যে আমার জান আমার সাথে দেখা করবেই। সেহেতু ওর বিয়ে করার একটা ভালো কারন পেয়ে গেল। মানুষ জিজ্ঞেস করলে বলবে “আরে বলিস না, আমার বোনের উপর রাগ করেই বিয়ে টা করা।

নাহলে আমি বিয়ে করতাম নাকি? তোরা জানস না বাসর ঘরের কথা চিন্তা করলেই আমার ভয় লাগে? কি আর করা একটা মাত্র বোন। বাদ দে। ” বাই দা ওয়ে, আমার জান আমাকে বলেছিল যে তার ভাই অনেক ভালো মানুষ। মেয়েদের দিকে সে তাকাইতেই পারে না। সে বিয়ের আগের প্রেমগুলাকে অবৈধ ঘোষনা দিয়েছে।

তার মতে মানুষ প্রেম করতেই পারে, কিন্তু প্রেম হতে হবে বিয়ের পরে। সে জন্য সে তার বোনকে প্রেম করতে দিবে না। কিন্তু সে যে কত্ত বড় লুলু আমি পরে টের পেলাম। আজ তার কথাই বলব। তার সাথে আমার মারামারি, দ্যা ফাইটিং, হবার কয়েকদিন পরের কাহিনী।

জানের বাবা ব্যবসার কাজে বাহিরে গেছে, মানে ঢাকার বাহিরে। মা ঘরে একা। সে ক্লাশের কথা বলে বের হলো। বের হয়ে আমাকে ফোন। “জান, তুমি কই? তোমারে দেখি না কতদিন হয়েছে।

আস না জান। দেখা করি। আমার চোখ দিয়া রক্ত না ঝরে ফ্রুটিঝার জুস ঝরতেছে। তুমি আইস জান। তোমাকে দেখে আমার মরুভুমিময় চোখে নায়াগ্রার পানি ঢালব।

” এই ধরনের কথা শুনেও যাদের মনে ভালোবাসা উকি দিবে না সে হয় মানুষ নাহয় রোবট। যেহেতু আমি রোবট না সেহেতু আমি ওর সাথে দেখা করার সিদ্বান্ত নিলাম। ওর সাথে কথা বলে আমরা ধানমন্ডি’র “পিৎজা হাটে” এ গেলাম। একটু নিরবতার জন্য। কারন জানের দেয়া তথ্যমতে ওর ভাই এইদিকে আসতেই পারে না।

খাবার অর্ডার করে ওয়েট করছি আর দুইজনে কথা বলছি। কথা বলতে বলতে চোখ পড়লো কিছুদূরে অবস্থান করা এক জোড়া কপোত-কপোতীর দিকে। কপোতীটাকে পাশ থেকে দেখে সুন্দরই লাগছিল। কিন্তু যখন কপোতের দিকে চোখ গেল আমার মনে হলো যেন ইলেকট্রিক শক খেলাম। কপোত ছিল আমার জানের বড় ভাই।

কি ক্লোজ হয়ে তারা বসে আছে! মধু! মধু! জানকে দেখাতেই সে যেন ভুত দেখার মত চমকে উঠলো। আমি বললাম “তোমার সাধু ভাই তো দেখি ভালই সাধুগিরি দেখাচ্ছে। চল একটু মজা নেই”। সে যেতে চাইল না। জোড় করে নিয়ে গেলাম।

হাজার হোক। নিজের প্রেমের নিরাপত্তা দেয়াটা জরুরী। উনাকে যদি হাতে নাতে ধরতে পারি তাহলে তো কথাই নাই। আমার রাস্তা পুরান ঢাকার রাস্তার মত একদম ফাঁকা হয়ে যাবে! ভাইয়ার দিকে হেঁটে যাচ্ছি আর ভাবছি যে অনেক বড় কিছু আবিষ্কার করে ফেলেছি। টম ক্রুজের মতো উনাদের টেবিলের সামনে এসে দাড়ালাম।

এই শেষ। উনার পাশে বসা কপোতীকে দেখে আমার জবান বন্ধ হয়ে গেল। আমাকে দেখে ওই কপোতীও যেন কেমন হয়ে গেল। উনি আমার ভার্সিটির শিক্ষিকা! - ম্যাডাম, আপনি? আসসালামুআলাইকুম। - আরে, শিহাব, তুমি? তুমি এইখানে কি কর? - না ম্যাডাম, এমনিতেই এসেছিলাম আরকি।

- তোমার না ক্লাশ আছে? আর আমাকে তো ফোন দিয়ে বলেছিলে যে তোমার পারিবারিক সমস্যার জন্য তুমি আজ আসতে পারবা না। (এই কথা বলে তিনি আমার জানের দিকে তাকালেন) - (মাথা চুলকাতে চুলকাতে)না মানে ইয়ে ম্যাডাম। (ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে) কেমন আছেন ভাইয়া? সেইদিনের জন্য স্যরি ভাইয়া। আমি আসলে বুঝতে পারি নাই। ব্যাথা তো দেখি এখনো কমে নাই! (ভাইয়া দেখলাম আমার দিকে রাগান্বিত হয়ে তাকিয়ে আছেন আর ইশারা করছেন আমি যাতে চলে যাই।

আমি ম্যাডামকে বাই বলে চলে যাব তখনি ম্যাডাম বলে বসলেন) - শিহাব, তোমার পাশের মেয়েটা কে? - (ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে সাহস করে বলে ফেললাম) আমার গার্লফ্রেন্ড! - ও যদি তোমার গার্লফ্রেন্ড হয় তাহলে ক্যাম্পাসে যার সাথে ঘোরাঘুরি কর সে কে? ম্যাডামের মুখে এই ধরনের কথা শুনে তো আমি থ! আমি ভাবতেই পারিনি ক্যাম্পাসে ম্যাডাম আমাকে ফলো করবেন। ম্যাডামের কথা শুনে দেখি আমার জান আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে। তোমার না কোন মেয়ে ফ্রেন্ড নাই? তুমি না ক্যাম্পাসে একা? তুমি না কোন মেয়েকে স্পর্শ কর নাই তাহলে ঘোরাঘুরি কার সাথে কর? তুমি আসলেই একটা ফ্রড। তোমার গার্লফ্রেন্ড হিসেবে পরিচয় দিতে এখন নিজেরই খারাপ লাগছে। এই কথা বলে সে চলে গেল।

যাওয়ার পরে আমি শুন্য চোখে ম্যাডামের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ম্যাডাম আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো। তার দেখাদেখি জানের বড় ভাইও একটা হাসি মারলো। আমি বুঝলাম না আমার দুঃখে তারা কিভাবে হাসতেছে। ক্যাম্পাসে আমি যাদের সাথে চলি ওরা তো আমার ফ্রেন্ড।

অন্য কিছু না। আমি তো আমার জানকেই ভালোবাসি। তার মানে কি তারা প্ল্যান করে এইগুলা করেছে? ভাইয়াকে কালার করতে এসে নিজেই কালার হয়ে যাব ভাবতেই পারিনি। তার উপর আমার ক্লাশের ম্যাডামের সামনে! ভাইয়া আর ম্যাডামের দিকে তাকাইয়া রইলাম আর মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম এর প্রতিশোধ নেয়ার। তার স্বকথিত অবৈধ প্রেম কেন তার নিজের কাছে বৈধ এই কথা ভেবে হাটা শুরু করলাম।

আমার জানের রাগ যে ভাঙ্গাতে হবে। আমার শান্তি আসলে লিখা নাই। একটা প্রেমই করি। এইটা নিয়া খালি দৌড়াইতেই আছি, দৌড়াইতেই আছি। কবে যে শেষ হলে আল্লাহ মালুম।

আগের গুলা ফার্ষ্ট ডেট উইথ এ হিসু কাহিনী! হিসু কাহিনীর পরের কাহিনী (ফার্ষ্ট ডেট উইথ এ হিসু কাহিনী - ২) ভালো থাকবেন সবাই। পেক পেক পেক ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.