পথ বাঁধতে চেয়েছিল বন্ধনহীন গ্রন্থি...
এই মুহুর্তে হঠাত ইচ্ছা করছে আমার নিজের ছোট্টবেলার কিছু ছবি আপনাদের দেখাই...কয়েকটা ছবিতে আমার সাথে আমার আরেকটা জানের টুকরা আছে...আমার খালাতো বোন...আমার চেয়ে আটমাসের বড়...তার মানে হল আমি আমার জন্ম থেকেই ওর সাথে আছি...
ও অনেক শান্ত শিষ্ট আর আমি ছিলাম দুর্দান্ত বদ...তাই আমার চেয়ে বড় হলেও জুলুমটা মোটামুটি আমারই একচেটিয়া ছিল...তাই বলে উনি যে আমাকে ছেড়ে কথা কয়েছেন তা কিন্তু না...
ছোটবেলায় আমার মাথায় অনেক চুল ছিল...আর দোলার ছিল কম...[আমার স্পাইক দেখেন...]...আর বদটা হিংসা করে আমার চুল টেনে টেনে ছিড়ে ফেলত...
আম্মু আর আমি...এটা আমার ছোটখালার গায়ে হলুদে তোলা...আমার মন খুব বিলা...ছবিটা আসল ছবি থেকে তোলা হয়েছে তাই বোঝা যাচ্ছেনা যে আমার চোখে পানি...সেই ১৯৮৫ সাল থেকেই আমি অনেক ইমোশনাল...
আমরা দুই বোনেই লাল শাড়ি পরেছিলাম স্বাতী খালামনির গায়ে হলুদে...খালামনি আমাকে ঘুম পাড়ানোর সময় প্রায়ই আকাশের ঐ মিটি মিটি তারার সাথে কইবো কথা গানটা গাইতো তাই আমি তার নাম দিয়েছিলাম 'আকা'...এখনও আমি তাই ই ডাকি...
ছোটবেলায় আমি বদ ছিলাম তাতো আগেই বলেছি...কি পরিমান বদ ছিলাম তার ছোট্ট একটা উদাহরন দেই...
আমরা আমার ৬ বছর পর্যন্ত আমার নানার সাথে নানাবাড়িতে ছিলাম...নানাভাই খুব রগচটা...এবং আম্মু ছাড়া কেউ তার মেজাজের সাথে পালা দিতে পারতোনা...তো আমি একদিন কোন একটা বদমায়েশি করেছি[কি করেছি মনে নাই...আসলে কত কিছুইতো করতাম...]...নানাভাই আমাকে তুমুল ঝাড়ি দিয়েছেন...ঝাড়ি খেয়ে আমার গেছে মেজাজ খারাপ হয়ে...আমি হলাম বৃশ্চিক রাশির মানুষ...বিরাট প্রতশোধপরায়ন...আমি অপেক্ষা করলাম দুপুরে নানাভাইয়ের দিবানিদ্রার জন্য...নানাভাই শোয়ার পর আধাঘন্টা চারপাশে ঘুরঘুর করলাম...যখন বুঝলাম যে ঘুমিয়েছেন... তখন পা টিপে টিপে খাটের পিছনে গিয়ে...নানাভাইয়ের চকচকে টাকের উপর চটাশ[আহ! কি শব্দ!!!] করে বিশাল এক চাটি মেরে এক দৌড়ে তিনতলা থেকে নেমে সোজা মাঠে...হাহাহাহাহা...পরের ঘটনা আর বলবনা...হিহি...আমার আম্মুতো আর ঘাস খেয়ে আমার আম্মু হয়নাই... তাই বুঝতেই পারছেন...মাইর একটাও মাটিতে পড়েনাই...
আমার ভাইএর সাথে...ওর যখন দুই বছর ও আমার কি যেন একটা ভেঙ্গে ফেলার পর আমি ওকে তুলে বিছানার উপর ছুড়ে ফেলেছিলাম......ভাগ্যিস কোন দুর্ঘটনা হয়নাই...এখনও মনে হলে শিউরে উঠি...
ভাবুক আমি...
আমি খুব আজিব ধরনের জেদী...আকা একবার আমার উপর রাগ করে আমাকে অন্ধকার বাথরুমে বন্ধ করে রেখেছিল অনেকক্ষন...তখন আমার বয়ে ৫বছর...পরে খালামনি আমাকে বলেছে...একঘন্টা পর দরজা খুলে নাকি দেখে আমাকে যেভাবে রেখে গিয়েছিল...ঠিক সেইভাবে কোমরে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আমি কটমট করে তাকায় আছি...হিহিহি...
আমার স্কুলের পোশাকে ভাব......মেরা নাম চিন চিন চু...
আমার ছোটবেলার অনেক অনেক অনেক মজার কাহিনি আছে...বড়বেলার কাহিনিও কম না...খুব লাফালাফির কারনে প্রায়ই দেখা যেত আমার কনুই, হাটুতে ব্যান্ডেজ...সেই কোন ছোট্টবেলার থেকেই আমার নাম গুন্ডি...ক্লাস টুতে থাকতে এক ছেলে মেয়েদের গায়ে জোর কম এই বিষয়ক কথা বলে আমার মেজাজ খারাপ করায়ছিল...বেচারাকেপরের দিন নতুন শার্টের সাথে কয়েকটা ব্যান্ডেজ লাগায় স্কুলে আসতে হয়েছিল...অথচ সাইজে সে ছিল আমার দেড়া...হিহি!!! স্কুল বা কলেজের টিচার রা আবার সবসময়ই আমাকে অনেক আদর করেছেন...ঝাড়ি কম খাইনাই...কিন্তু ভালবাসার কোন কমতি ছিলনা...স্কুলের প্রত্যেকজন টিচার, দুইজন বিহারী বুয়া, দারোয়ান ভাই...আর কলেজের সিস্টার পলিন, মিত্র স্যার, আইডি স্যার সিস্টার শিখা, রডরিগ স্যার [কার নাম বাদ দিয়ে কার নাম বলি?...] এদেরকে কখোনও ভুলতে পারবোনা...অনেক ভালবাসা তাদের জন্য...
এখন বলি...হঠাত আমার জানের টুকরাগুলো এই সিরিজে আমি আসলাম কিকরে...আসলে কয়েকটা পিচ্চির ছবি খুজতে খুজতে আমার ছুডুবেলার এই ছবিগুলা দেখে আপনাদের দেখাতে ইচ্ছা করলো...আর আগেইতো বলেছি...ম্যায় আপনি ফেভারিট হু...
[সামনে আমি...পিছনে দোলা...]
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।