এখনই, নয়তো কখনই নয়...। আহারে আমাদের ঢাকা শহরের বর্তমান আর সাবেক মেয়ররা এ নগরীর মানুষের জন্য কি কষ্টটাই না করে গেছেন। এতো বড় ঢাকা শহর, এতো এতো কাজ........ মেয়রদের অবস্হা যেন এনার্জি ড্রিংকের এ্যাডের সেই নায়কের মতই। বিপুল কাজের চাপে দিশেহারা মেয়র আর তার কর্মীবাহিনীর এখন মেন্টাল হওয়াটাই বাকী। এ অবস্হায় নগরপিতার কাছ থেকে নূন্যতম নাগরিক সুবিধা আশা করাই যেন চরম অমনাবিকতা।
আসলেই তো, নূন্যতম নাগরিক সুযোগ সুবিধার বিষয়গুলোর চিন্তা আমাদের আমজনতার মাথায় আসে কি করে?
কোথায় আমরা নগরপিতার প্রতিঃ
সহমর্মিতা দেখাব,
তার মাথায় আইস ব্যাগ দিয়ে বলব ভাই মাথা ঠান্ডা রাখেন,
অন্ততঃ নিজেদের গাটের পয়সা খরচ করে তাকে এনার্জি ড্রিংক পান করাব.......ইত্যাদি ইত্যাদি......।
তা না, উল্টো.....সে যাই হোক;
নতুন ডিজিটাল ফর্মূলা এসে গেছে এখন, কি যুগান্তকারী ডিজিটাল ফর্মূলা....ডিসিসি ভাগ, সম্পূর্ন নতুন আঙ্গিকে ডিভাইড এন্ড রুল...রাতারাতি ৫০% কাজের চাপ শেষ....(সাথে সাথে ৫০% উপরি হিসাবের খাতা থেকে গায়েব হয়ে যাবে কি যাবে না তা নিয়ে হয়ত সংশ্লিষ্টরা ইতিমধ্যেই ভাবনা চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন....) আর তাতে করে রাতারাতি নাগরিক সেবার মানোন্নয়নের রঙ্গিন ফানুস রীতিমত উদাহরন সহকারে (লন্ডন, ম্যানিলা, অস্ট্রেলিয়া......অবশ্য সেখানকার নগরপিতারা আমাদের নগরপিতাদের মত আকন্ঠ দূনীর্তি নিমজ্জিত কিনা সে বিষয়টা যথারীতি উহ্যই থেকে গেছে) আমাদের আম জনতাদের দেখান শুরু হয়েছে। হায়রে রঙ্গিন ফানুস....।
ডিসিসি কেন ঢাকার নাগরিকদের যথাযথ সেবা দিতে পারছে না এটা আমরা সবাই জানি। যে সব ঠিকাদাররা ডিসিসিতে কাজ করেন তারা আরো ভালভাবেই জানেন যে কিভাবে সেখানে কাজ হয়।
কাজ পাওয়া থেকে শুরু করে বিল পাওয়া পর্যন্ত সামনে ঘুষ পেছনে ঘুষ ডাইনে ঘুষ বায়ে ঘুষ, কি বলা যা একে....আবহমান কাল থেকে চলে আসা ঘুষাঘুষি কালচার। কালচারই বটে। কয়েকজন ঠিকাদারদের কাছ থেকে এরকম বেশ কিছু দূর্নীতির উদাহরন শোনার পর একবার মনে হলো পশ্চিমারা তাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য এতো এতো বোমা বর্ষন করে আর আমাদের এই নগর ভবনে একটা হাজার পাউন্ডের বোমা ফেললেই তো হয়। দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল (কিংবা নগরভবন) ভাল। কিন্তু পরক্ষনেই ভাবি এই যে ফাইনাল সল্যুশন বা চুড়ান্ত সমাধান টাইপের চিন্তাভাবনা; এতে কি সমাধান হবে? হিটলারের গেটো আর স্টালিনের গুল্যাগ; কত অসংখ্য চুড়ান্তু সমাধানের ঘটনারই না উদাহরন সে সব? সমাধান কি হয়েছে? হয়নি।
ইতিহাসই তার সাক্ষী।
আমাদের এখনকার পারিবারিক পরিমন্ডলটাই কেমন যেন....? নীতি নৈতিকতা বা মূল্যবোধের ব্যাপারগুলো নিয়ে হয়ত সেখানে আলোচনা হয় কিন্তু পরিবারের কোন সদস্য যখন সত্যি সত্যি তারপাশে ঘটে যাওয়া নীতিবিরোধী কোন কর্মকান্ড ঘটতে দেখে প্রতিবাদ করতে যায় তখন প্রথম বাধাটা কিন্তু আসে সেই পরিবার থেকেই। মুখে মুখে তুমি নীতিবোধ আর মূল্যবোধের বুলি কপচিয়ে যাও নো চিন্তা কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তুমি হবে মূর্তির মতো ভাবমূর্তিধারী, hushhhhh একদম চুপ, মূর্তির মতই না কিছু কানে শুনতে পাও না কিছু বলার ক্ষমতা রাখো, আরো মানুষ আছে না, কি দরকার ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ান.....। এই হল আমাদের পারিবারিক শিক্ষা। এই বিকলাঙ্গ মানসিকতা জিইয়ে রেখে গোয়াল শুন্য করলেও দুষ্ট গরুর যোগান কিন্তু বন্ধ হবে না।
একপাল দুষ্টু গরুর জায়গা দখল করবে আরেক পাল আরো বড় বড় শিং ওয়ালা আপগ্রেডেড দুষ্টু গরু।
ডিসিসি ভাগ করার যে ফলাফলটা সবচেয়ে দ্রুত পাওয়া যা তা এই লেখার শিরঃনামেই উল্লেখ করা হয়েছে। ওলট পালট করে দে মা, লুটে পুটে খাই। হ্যাঁ আমরা বাঙ্গালীরা ওলট পালট করার এই কাজটা বেশ নিষ্ঠার সাথেই করি আর কিছু না পারি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।