আমি বিলাত থাকি, কামলা খাটি জানি, তোদের মহাব্যস্ত জীবনের ফাঁকে সময় করে মামুনের কিংবা তপু-ফরমানের বাসায় কিংবা কোনো রেস্টুরেন্টে আড্ডা দিস। হয়ত আমাকে নিয়ে দুই/একটা কথাও বলিস। আবার সেইটা ফেসবুকে স্ট্যাটাসও মারিস। মাঝে মাঝে এক দুই ঝলক ছবিও দেখতে পাই। এইসব দেখে রাগে আমার পিত্তি জ্বলে যায়।
মনে হয় তোদের ধরে যদি কষে দুই/একটা চটকানা দিতে পারতাম তাহলে হয়ত মনের জ্বালা কিছু কম হতো। রাগ করার যথেষ্ট কারণও আছে। সবাই বা কয়েকজন একসাথে হলে আমাকে কি একটা মেসেজ দেয়া যায়না? তখন আমি ভাবতাম আমার বন্ধুরা আমাকে মিস করছে। কাঠখোট্টা এই প্রবাস জীবনে সেটা যে কতটা টনিকের কাজ দিবে সেটা কি একবার ভাবতে পারিস? নাকি মেসেজ দেয়া না দেয়ার মধ্যে কোনো হিসাবের ব্যাপার আছে?? অতটা জটিল হিসাব-নিকাশ আমি বুঝিনা। তোরা তো জানিস, আমি বরাবরের মতো অংকে বড়ই কাঁচা।
কাউকে কাউকে দেখি ফেসবুকে মাফিয়া ওয়ার-টু খেলতে খেলতে হয়রান হয়ে যাচ্ছে। অথচ ওয়ালে লিখলে কিংবা প্রাইভেট মেসেজ দিলে কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। এমনকি ৬/৭ বার টেলিফোন করলেও পাওয়া যায়না। এ বড়ই দূঃখজনক। নিজেকে খুব দরিদ্র মনে হয়।
কারণ এই বন্ধুরা-ই আমার সম্পদ। নিজের খারাপ সময়ে যদি এই সম্পদ কাজে লাগাতে না পারি তাহলে হতাশ হওয়া স্বাভাবিক।
কেউ কেউ আমাকে রাগানোর জন্য ফেসবুকে মজার মজার দেশী খাবারের ছবি দেয়। রাগ লাগে আবার ভালোও লগে। ভালোলাগাটা প্রথমেই বলি খাবারের সময় আমাকে নিশ্চয় আমাকে মিস করেছে বলেই ছবিটি দিয়েছে।
হাউ সুইট! আর রাগটা নিজের উপর, কেন এতকিছু ছেড়ে এই মরার বিদেশ আছি।
আবার কেউ কেউ ফেসবুকে এসে কোনো আওয়াজ ছাড়া উঁকি মেরে যায়। আওয়াজ না দিলেও বোঝা যায় ওরা আছে। মনে করে এইসব ছেলেখেলা। আরে বাবা, ইজ্জ্বতের যদি এতই ভয় তাহলে ফেসবুকে এ্যাকাউন্ট কেনো, ডিলিট করে দিলেই হয়।
ঢং করার একটা সীমা আছে।
শুনেছি কেউ কেউ আমার উপর খুব ক্ষেপে আছে। ভোঁতা দা নিয়ে অপেক্ষা করছে কবে আমি বাংলাদেশ যাবো আর আমার ঘাঁড়ে কোপ দিবে। ভোঁতা দা কেনো? আরে ধারালো দাওয়ের আঘাতে তো আমি এক কোপেই শেষ হয়ে যাবো আর ভোঁতা দা দিয়ে আমাকে তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে মারা যাবে। একটু মজা করলাম।
আসলেই এমন কিছু হওয়ার নয়। সময়ের পরিক্রমায় আমরা হয়ত মজা করা ভুলে গেছি। কেমন জানি জটিলতার পাকে ঘুরপাক খাচ্ছে জীবন। কেউ মজা করে কিছু করলে সেটা থেকে মজা নিতে পারার আমাদের সেই অসাধারন গুন ধীরে ধীরে জং ধরে যাচ্ছে। হয়ত হতে পারে আমরা আর
ছোট নই বলে সংসার কিংবা কর্মক্ষেত্রের হাজারো ঝামেলা আমাদের ছেঁকে ধরেছে।
তাই হয়তো এমন জটিলতার সৃষ্টি।
অথচ, তোরা কি ভুলে গেছিস আমাদের সেই মিস্টি মধুর দিনগুলি? কত মজাই না করতাম আমরা। মেডিকেলের পাহাড়ের উপর আমার জন্মদিন পালন করার কথা? টেকনাফের সেই বিখ্যাত ট্যুরের কথা কি মনে আছে? উফ! কি মজাই না করেছিলাম। পতেংগায় বেড়াতে যাওয়ার সেই উত্তেজনাকর মুহুর্তগুলো। ভার্সিটির ট্রেনে সেই ঝড়তোলা গান গাওয়ার কথা কি আজো কখনো কখনো মনে পড়ে?
মনে করছিস আমার হাতে অফুরন্ত সময় আছে বলে বসে বসে এইসব মনে করছি? তাহলে ভুল করছিস।
কারণ আমার আসলেই সময় নিয়ে অনেক টানাটানি হয়। তারপরও চেষ্টা করি তোদেরকে মনে করতে, তোদের সথে কথা বলতে। সেই খুনসুঁটি কি ফিরে পেতে পারি না?
অবশ্যই পারি। আগেও করেছি, পরেও করবো। ভাংবো সকল মনের তালা - আমরা অসাম শালা (Awsome Shala)।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।