চারিদিকে দেখো চাহি হৃদয় প্রসারি ভারতের ইতিহাস পড়া একটা অসাধারণ সভ্যতাকে জানাই শুধু নয়, মানুষের চিন্তাপ্রক্রিয়ার ধরণটাকে খুব ভালোভাবে বোঝার এটা একটা সুযোগ। চিন্তার এত বিচিত্র মার্গ খুব বেশি ভৌগলিক ভূখণ্ডে দেখা যাবে না। প্রাক ইতিহাস বা প্রাক বৈদিক যুগের লিখিত নিদর্শন নেই। সিন্ধু সভ্যতার মত প্রত্ন ঐতিহাসিক যুগের লিপির পাঠোদ্ধার এখনো হয়নি। মেহেরগড় সভ্যতার সময়ে লিখন বোধহয় আবিষ্কৃত হয়নি।
তবু মেহেড়গড় বা সিন্ধু সভ্যতার অনেক কিছুই আমরা সহজে জেনে গেছি প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলো থেকে। সিন্ধু সভ্যতার যুগে হরপ্পা মহেঞ্জোদাড়োতে যে টাঊন প্ল্যানিং এর উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটেছিল, তা বিদ্যালয়পাঠ্য ইতিহাস বইতেও আছে। আছে মূর্তি নির্মাণে দক্ষতার প্রমাণ। কিন্তু দার্শনিক চিন্তা কতটা অগ্রসর হয়েছিল তার কোন পাথুরে প্রমাণ এখোনো আমাদের সামনে নেই। বরং বৈদিক যুগে এর অগ্রগতি সারা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দেবার মত।
বস্তুগত সংস্কৃতির দিক থেকে বিশেষ করে ঋক বৈদিক যুগ কিন্তু খানিকটা পিছিয়ে থাকা। মূলত পশুপালন নির্ভর এই যুগের অর্থনীতি। পরবর্তী বৈদিক যুগে কৃষির ব্যবহার বাড়লো। আর এই বিকশিত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির যুগে আমরা প্রথম দার্শনিক রচনাগুলি পেলাম আরণ্যক এ। সেইসঙ্গে বিভিন্ন ধারার জ্ঞানচর্চার বিকাশ - যেমন ব্যাকরণ , শব্দতত্ত্ব, ইত্যাদিকে আমরা বেদাঙ্গর মধ্যে প্রতিফলিত হতে দেখলাম।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিকাশ আমরা যজু:র্বেদে দেখেছি। মঞ্চের মাপ, নির্মাণের উপাদান মাত্রা ইত্যাদির জ্ঞান সেখানে প্রায় নিখুঁত। তবে সমাজ তথা রাষ্ট্রচিন্তার বিকাশের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে খ্রীষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দী পর্যন্ত। যেখানে আমরা পাব চাণক্য ও তাঁর বিখ্যাত বই অর্থশাস্ত্রকে। আধুনিক যুগের আগে পৃথিবীর আর কোন প্রান্তে, আর কোন সভ্যতায় এর সমতুল্য গভীরতা আর ব্যাপ্তি নিয়ে রাষ্ট্রচিন্তার আর কোন গ্রন্থ এখোনো খুঁজে পাওয়া যায় নি।
পরের কোন পোষ্টে চাণক্য থেকে ভারতীয় সভ্যতার চিন্তামার্গের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের আলোচনা শুরু করার ইচ্ছা রইলো। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।