আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি তরুণ প্রজন্ম উপেক্ষিত অবহেলিতঃ
পৃথিবীর প্রতিটি দেশে টিনএজারদের আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। তরুণ প্রজন্ম খুবই গুরুত্বপুর্ণ। কারণ আজকের তরুণরাই আগামীদিনের কান্ডারি। টিনএজাররাই রাজনীতি, অর্থনীতি, শিল্প, সাহিত্য থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই উন্নত দেশসমূহের তরুণ প্রজন্মের ওপর সর্বোচ্চ যত্ন নেয়া হয়।
কিভাবে তরুণ তরুণীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যায় সে বিষয়ে চিন্তা করা হয়। অথচ আমাদের দেশের অবস্থা যেনো একেবারে উল্টো। তরুণ প্রজন্ম এখানে উপেক্ষিত, অবহেলিত। নিত্য নতুন অবারিত জ্ঞান-বিজ্ঞান-শিক্ষা শিল্পের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বর্তমান তরুণদের নিয়ে বেশিরভাগ মানুষের চিন্তার শেষ নেই।
অনেকেরই অভিযোগ। শিক্ষকদের অভিযোগ ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখায় মন নেই। পিতামাতার অভিযোগ-আমাদের সন্তান এখন আর আমাদের কথা শোনে না। নিজের খেয়াল খুশি মতো চলছে। কখনো বাসা থেকে বের হয় আর কখন বাসায় ফেরে কিছুই জানতে পারি না।
চোখের সামনে ছেলেটি বা মেয়েটি কেমন করে যেনো বদলে যাচ্ছে। পাড়া বা মহল্লায় মুরবিবদের অভিযোগ-আজকালকার তরুণ-তরুণীরা চলে গেছে রসাতলে। ওদের নিয়ে আর কোনো আশা-ভরসা নেই।
এক অদ্ভুত অস্থিরতায় পেয়ে বসেছে বর্তমান ইয়ং জেনারেশনকে। মনোযোগ দিয়ে তারা কাজ করতে চায় না।
কি করবো আর কি করবো না এই দোলাচলে ভোগে বেশিরভাগ তরুণ-তরুণী। লেখাপড়ার চেয়ে আড্ডাতেই যেনো বেশি আকর্ষণ। বেশিরভাগ তরুণ-তরুণী বই নিয়ে বসতে চাইছে না। পরীক্ষা এলেই নকল কিভাবে করবে-এ চিন্তায় থাকে মশগুল। পরীক্ষার হলে ছাত্রছাত্রীদের নকল এখন ট্রাডিশনে পরিণত হয়েছে।
নকল করে পরীক্ষা দিয়ে তারা সার্টিফিকেট অর্জন করছে। নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই অন্ধকার করে দিচ্ছে। এসব তরুণ-তরুণীদের কর্মজীবনে এসেও হোঁচট খেতে হচ্ছে। ফলে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে হতাশা। অনেকে ইচ্ছার বিরুদ্ধেও হাতে অস্ত্র তুলে নিচ্ছে।
ক্রমাগত বাড়ছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। হতাশাগ্রস্ত তরুণরা মাদকের নীল নেশায় বন্দি হয়ে ক্ষয়ে যাচ্ছে সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণীদের এক বৃহৎ অংশ।
আসলে আমাদের টিনএজারদের সে সমস্যাগুলো, তাকে আমরা যা বলেই চিহ্নিত করি না কেনো তাতে সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। তার জন্য তারাও খুব বেশি দায়ী নয়। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আর পারিবারিক মূল্যবোধই এই সমস্যাগুলো মূল আবাসভূমি।
এই জায়গাগুলোকে যদি আমরা ভালোভাবে মেরামত করে দিতে পারি তবে অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে। কারণ আমরা শুধু আমাদের পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া কীর্তির উপর ভর করেই পথ চলি। বাইবেলে আছে, ‘তোমরা তোমাদের পূর্ব-পুরুষের পাপের ফল ভোগ করবে। ' তবে সবকিছুর পরও টিনএজ ছেলেমেয়েদের সুস্থ মানসিক ও শারীরিক বিকাশের মূল ভূমিকাটি হচ্ছে তার পরিবার। আর প্রতিটি পরিবারকে মনে রাখতে হবে এবং পুরোপুরি ফুলের বাগান কিংবা কুমারবাড়ির মাটি।
সঠিক পরিচর্যা আর পালনের মধ্য দিয়েই পেতে পারি একেকটি সুবাসিত ফুল। কিংবা কুমারের নিখুঁত ও চৌকস হাতের স্পর্শে গড়ে নিতে একেকটি চমৎকার মানুষ।
মুল লেখকঃ
আখতার হামিদ খান
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।