আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিপদগামী টিনএজঃ----------------টিনএজ এবং টেলিফোন

আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি টিনএজ এবং টেলিফোনঃ বাড়ির টেলিফোনটি এখন গলার কাঁটা। কাঁটা বিঁধলে যেমনটি হয় ঠিক তেমন একটি অস্বস্তি-যন্ত্রণা। বাড়িতে যদি বড় মেয়ে না থাকতো তাহলে হয়তো এমন হতো না। কিছুক্ষণ পর পর ক্রিংক্রিং শব্দে বেল বেজে উঠবে টেলিফোনের। বড়রা কেউ রিসিভার তুললে অমনি ওপাশ থেকে কে বা কারা লাইন কেটে দেয়।

আকবার সাথে সাথে ফোনের রিসিভার তুলে কয়েকবার হ্যালো হ্যালো বলে রেখে দিলেন। আবার ক্রিং ক্রিং করে বেজে উঠলো টেলিফোন। মেয়ের নাম মিতালী। মিতালী এগিয়ে এলো ফোনের কাছে। রিসিভারে হাত বাড়াতেই আকবর সাহেব রিসিভার তুলতে নিষেধ করলেন।

মিতালী ধরলো না ঘোর আপত্তির কারণে। আকবর সাহেব এবার নিজেই তুললেন রিসিভার। হ্যালো বললেন, কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে রেখে দিলেন। আকবর সাহেব এবার ঘুমের ভান ধরে শুয়ে পড়লেন বিছানায়। ঘণ্টাখানেক পরে আবার ফোনের বেল বেজে উঠলো।

মিতালী দৌড়ে এসে রিসিভার তুলে হ্যালো বললো। ওপাশ থেকে কি যেনো জানতে চাইলে মিতালী প্রথমে ফিস ফিস করে কথা বললো। তারপর উল্টো কথা, প্রায় দু'মিনিট উল্টো কথা হলো। তারপরই রিসিভার নামিয়ে রাখলো মিতালী। বাবার (আকবর সাহেব) দিকে আড় চোখে একবার তাকালো মিতালী।

আকবর সাহেব মেয়ের কথা কিছুই বুঝলেন না শুধু এটুকুই আকার ইঙ্গিতে বুঝলেন ‘বাবা এখন বাসায় তুমি পরে ফোন করবে'। মিতালী এখন ইন্টারমিডিয়েটে পড়ছে। আকবর সাহেব লক্ষ্য করছিলেন সপ্তম শ্রেণীর মেয়ের এই কান্ড কারখানা। তিনি এখন অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন। টেলিফোন নিয়ে অনেক ঘটনাই আকবর সাহেবের বাসায় ঘটেছে।

মিতালীকে তিনি বহুবার শাসন করেছেন কিন্তু তাতে কোনোই ফল হয়নি। দিন দিন বিষয়টি বেড়েই চলেছে। বাড়িতে টিনএজার মেয়ে থাকলে টিনএজার ছেলেদের এই উৎপাত নিত্যদিনের ঘটনা। যা থেকে রেহাই পাবার পথ নেই। একমাত্র টেলিফোন লাইনটি বিচ্ছিন্ন করা ছাড়া।

অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকরা এই কাজটিই করে থাকেন। ভুক্তভোগী অভিভাবকের ধারণা এই টেলিফোনটি টিজিং থেকে অপরিণত বয়সী প্রেমের সৃষ্টি হয়। এই প্রেম থেকেই বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষেত্রেই তারা দুঃসাহসী হয়ে ওঠে। তারা এমন কিছু করে বসে যা দু'টি পরিবারকেই সামাজিকভাবে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলে দেয়।

এতে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন হযে ওঠে বিষময়। আসলে আমাদের টিনএজারদের সে সমস্যাগুলো, তাকে আমরা যা বলেই চিহ্নিত করি না কেনো তাতে সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। তার জন্য তারাও খুব বেশি দায়ী নয়। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আর পারিবারিক মূল্যবোধই এই সমস্যাগুলো মূল আবাসভূমি। এই জায়গাগুলোকে যদি আমরা ভালোভাবে মেরামত করে দিতে পারি তবে অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে।

কারণ আমরা শুধু আমাদের পূর্ব পুরুষদের রেখে যাওয়া কীর্তির উপর ভর করেই পথ চলি। বাইবেলে আছে, ‘তোমরা তোমাদের পূর্ব-পুরুষের পাপের ফল ভোগ করবে। ' তবে সবকিছুর পরও টিনএজ ছেলেমেয়েদের সুস্থ মানসিক ও শারীরিক বিকাশের মূল ভূমিকাটি হচ্ছে তার পরিবার। আর প্রতিটি পরিবারকে মনে রাখতে হবে এবং পুরোপুরি ফুলের বাগান কিংবা কুমারবাড়ির মাটি। সঠিক পরিচর্যা আর পালনের মধ্য দিয়েই পেতে পারি একেকটি সুবাসিত ফুল।

কিংবা কুমারের নিখুঁত ও চৌকস হাতের স্পর্শে গড়ে নিতে একেকটি চমৎকার মানুষ। মুল লেখকঃ আখতার হামিদ খান  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।