পড়ালেখা ছাড়া আর সব কিছুই অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে করি........... নিউটনের মাথায় যদি আপেল না পড়ত তবে কি মহাকর্ষ সূত্র আবিষকার হত না?কে জানে। তবে পৃথিবীতে এপর্যন্ত অনেক মহান আবিষ্কারের পেছনে রয়েছে তেমনই সাধারণ কিছু ঘটনা। আমার জানা কতগুলো শেয়ার করছি----
গুটিবসন্তের টীকা আবিষ্কার-------এক সন্তান হারা মায়ের তাগিদ:
প্রচন্ড শীতের রাতে বহু দূরের এক রোগী দেখে বাড়ি ফিরে এলেন এক তরুণ ডাক্তার। নাম এডওয়ার্ড জেনার। ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামতে না নামতেই এক মহিলা এক মহিলা হাউ মাউ করে কেঁদে উঠলেন, ''ডাক্তার বাবু আমার ছেলেকে বাঁচান।
আমার চারটি ছেলে আগেই মারা গেছে। এর কিছু হলে আমি বাঁচবনা। ''
তরুণ ডাক্তার ক্লান্ত শরীর নিয়ে তখনই গেলেন তার বাড়িতে। শিশুটির গায়ের কাপড় সরাতেই দেখলেন সারা শরীর ভরে গিয়েছ গুটি বসন্তে। সারা রাত চলল যমে মানুষে টানাটানি।
কিন্তু জয়ী হল মৃত্যু। মায়ের আর্তনাদ পেছনে ফেলে পরাজিত সৈনিকের মত বাড়ি ফিরলেন জেনার।
বুকের ভেতর থেকে থেকে ঝড় তোলে সেই মায়ের কান্না। শুরু হল সাধনা। আর কোন মাকে কাঁদতে দেবেন না কোন মতেই।
মাসের পর মাস। বছরের পর বছর। অবশেষে সফল হলেন তিনি। পৃথিবী মুক্তি পেল গুটি বসন্তের অভিশাপ থেকে।
জর্জ বার্নার্ড শ -----একজন ব্যর্থ ঔপন্যাসিক:
২২-২৩ বছরের এক যুবক।
মলিন চেহারা নিয়ে ছুটে বেড়াতেন এক প্রকাশক থেকে আরেকজনের কাছে। হাতে নিজের লেখা উপন্যাস। কিন্তু সবখানেই ব্যর্থ। ভীষণভাবে ভেঙে পড়লেন। হতাশ।
কিন্তু কপালে খ্যাতি থাকলে ঠেকায় কে!আবার লিখতে বসলেন। আর উপন্যাস নয়। এবার নাটক। পেলেন জগৎজোড়া খ্যাতি। তাঁর নাম জর্জ বার্নার্ড শ।
বাখের সঙ্গীত উদ্ধার----------মাংসের মোড়কে অবাক লেখা
১৮৬০ সাল। অর্কেষ্ট্রার কনডাকটর ফেলিক্স মেনডেলেসন কাজ শেষে সন্ধ্যায় স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বাসার জন্য মাংস দরকার। তারা ঢুকে পড়লেন মার্টিন কোয়েলারের মাংসের দোকানে। কাগজে মুড়ে দেওয়া হচ্ছে মাংস।
ইতিমধ্যে কাগজ শেষ হয়ে গেল। চিলেকোঠা থেকে আরও কাগজ নিয়ে এলেন কোয়েলারের বউ। সেগুলো দেখে হঠাৎ ভুত দেখার মত চমকে উঠলেন ফেলিক্স। একদম হলদে হয়ে কাগজগুলোর সবচেয়ে ওপরেরটায় লেখা '' দি প্যাশন অব আওয়ার লর্ড,অ্যাকর্ডিং টু সেন্ট ম্যাসু-বাই যোহান সেবাস্তিয়ান বাখ''। ফেলিক্স অখ্যাত এক মাংস বিক্রেতা চিলেকোঠা থেকে উদ্ধার করেন বাখের সঙ্গীতের শেষ খন্ডটি।
অসাধারণ এক দৈব ঘটনা বিশ্বকে দিল অসাধারণ এক উপহার।
অমর উপন্যাস ''The sorrows of Werther''---------তরুণ গ্যেটের প্রেমে ব্যর্থতা;
নিজের অনিচ্ছা থাকা সত্বেও বাবার ইচ্ছায় যোগ দেন সুপ্রীম কোর্টে। সেসময় তিনি তরুণ গ্যেটে আশ্রয় নেন এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তাদেরই তরুণী কন্যা লটির প্রেমে পড়ে যান গ্যেটে। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যে জানতে পারেন লটি অন্য একজনের বাগদত্তা।
ভীষণভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। আত্মহত্যাও করতে চাইলেন। কিন্তু পরক্ষণেই সিদ্ধান্ত বদলান। কিন্তু প্রেমে ব্যর্থতা তার মনকে আঘাত করে তীব্রভাবে। যার পরিণতিতে তিনি লিখলেন সেই অমর উপন্যাস ''The sorrows of Werther''।
যা তাকে এনে দেয় অসামান্য খ্যাতি।
পেনিসিলিন আবিষ্কার-------ভাগ্যিস জানালাটা খোলা ছিল:
পেশাগত জীবনে ডাক্তার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং তখনকার প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক গুলোর সীমাবদ্ধতা নিয়ে ছিলেন ভীষণ হতাশ। এক দিন আকস্মিকভাবেই খোলা জানালা দিয়ে বাগান থেকে বাতাসে কিছু আগাছা এসে জীবাণু ভর্তি ট্রেতে এসে পড়ে। তখন ফ্লেমিং দেখতে পান জীবাণু গুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। পরীক্ষা করে দখতে পান আগাছা গুলোর সাথে কিছু ছত্রাক এসে জীবাণুগুলো ধ্বংস করেছে।
তিনি ছত্রাকগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম''Penicillium notetum'' অনুসারে এর নাম রাখেন পেনিসিলিন।
আর্কিমিডিসের সূত্র-----------খাদ মেশানো সোনার মুকুট
সাইরাকিউসের সম্রাট হিয়েরো একটি সোনার মুকুট বানান। তিনি নিশ্চিত হতে চাইলেন যে মুকুটটিতে কোন খাদ নেই। একাজের দায়িত্ব তিনি আর্কিমিডিসকে দেন। অথচ আর্কিমিডিসের কোন উপায় জানা ছিলনা।
তিনি চৌবাচ্চায় গোসল করতে নামার সময় লক্ষ করলেন পানিতে শরীর ডুবাতেই কিছু পানি ছলকে পড়ল। এতেই তার মাথায় খেলে গেল বুদ্ধি। পরের ঘটনাটা সবারই জানা। তার সেই বিশ্ববিখ্যাত ইউরেকা চিৎকার আর আবিষ্কৃত হল আর্কিমিডিসের সূত্র।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।