নেট লিওনেল মেসিকে তিনি ফুটবলার হিসেবে ‘সম্মান’ করেন না এমনটা কিন্তু নয়। এই তো কিছুদিন আগেও বলেছেন, এখন যাঁরা খেলছেন তাঁদের মধ্যে মেসিই সেরা। কিন্তু তাঁর আপত্তি একটা জায়গাতেই_মেসিকে তিনি এখনই ‘গ্রেট’ ফুটবলার মানতে রাজি নন।
পেলের বক্তব্যে অবশ্য যুক্তি আছে। মেসিকে ‘গ্রেট’ মনে না করার কারণ হিসেবে যেসব যুক্তি তিনি দেখিয়েছেন সেগুলো অনেক ফুটবলপ্রেমীরই হয়তো পছন্দ হবে না।
দ্য সান পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, ‘গ্রেট হতে হলে বিশ্বকাপে পারফরম করতে হয়। আর যাঁদের গ্রেট বলা হচ্ছে তাঁরা সবাই বিশ্বকাপে ধারাবাহিকভাবে পারফরম করে এসেছেন। ’
ইয়োহান ক্রুইফ এবং মিশেল প্লাতিনিকেও পেলে তাই মেসির আগে রেখেছেন। কিন্তু তাঁরা তো বিশ্বকাপ জেতেননি! দল খুব ভালো না হলে বিশ্বকাপ না জেতাই স্বাভাবিক, সে ক্ষেত্রে কোনো ফুটবলার ‘গ্রেট’ হতে পারে শুধু পারফরম করে_অনেকের মতে সর্বকালের সেরা ফুটবলার কথা বলছেন সেই সুরে, ‘আমি মনে করি বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স দিয়েই কোনো ফুটবলার গ্রেট কি না সেটা ঠিক করা উচিত। ওরা (ক্রুইফ, প্লাতিনি) বিশ্বকাপ না জিতলেও তাদের পুরো ক্যারিয়ার ছিল দ্যুতিময়।
(গ্রেট ফুটবলারদের মধ্যে) সবাই তো বিশ্বকাপে নিজেদের প্রমাণ করেছে। ’
কোনো সন্দেহ নেই পেলে যাঁদের মেসির আগে রাখছেন তাঁরা সবাই কিংবদন্তি। জিনেদিন জিদান, ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার এবং ববি মুর ফ্রান্স, জার্মানি ও ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন। মেসি দুটি বিশ্বকাপ খেলেও শিরোপা জেতেননি, কিন্তু এ আর্জেন্টাইন যে ফুটবল জাদুতে বুঁদ করে রেখেছেন পুরো বিশ্বকে সেটা কি অগ্রাহ্য করার মতো? বার্সেলোনার মেসি অসাধারণ, আর্জেন্টিনার মেসি ভিন্ন। এ উদাহরণটাও দিলেন ক্যারিয়ারে এক হাজারেরও বেশি গোল করা এই সাবেক ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার, ‘বার্সেলোনার মেসির খেলা দেখুন, দেখবেন অসাধারণ এবং ব্যতিক্রমী এক ফুটবলারকে।
আর্জেন্টিনার হয়ে খেলার সময় কিন্তু বার্সেলোনার সেই মেসি নেই। সেখানে ও পুরোপুরি আলাদা। ’
পেলের কথায় এ কারণেই জিদানরা মেসির আগে। জিদানের সঙ্গে মেসির একটা তুলনা করেছেনও তিনি, ‘জিদান বিশ্বকাপই শুধু জেতেনি, ১৫টা বছর নিজেকে সবার ওপরে রেখেছে। তাই আমার কাছে মেসির চেয়ে জিদান অনেক পরিপূর্ণ ফুটবলার।
আর জিদানের আগে এ রকম পরিপূর্ণ ফুটবলার ছিল ক্রুইফ, বেকেনবাওয়ার, প্লাতিনি এবং ববি মুর। ’
মেসির পর ডিয়েগো ম্যারাডোনা প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন পেলে। তাঁর মতে ম্যারাডোনার চেয়েও অনেক ভালো ফুটবলার ক্রুইফ, কারণ ম্যারাডোনা এক পায়ে খেলতেন, মাথায় কাজ ছিল না ইত্যাদি ইত্যাদি এবং একেবারে শেষে এসেছে মাদক প্রসঙ্গ, ‘সেও (ম্যারাডোনা) গ্রেট ফুটবলার ছিল। কিন্তু এক পায়ে খেলত আর মাথায় কাজ ছিল না। আর তার শেষটা তো হলো কলঙ্ক গায়ে মেখে।
১৯৯৪ বিশ্বকাপে মাদক নেওয়ার কারণে তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়েছিল। আমার কাছে তার চেয়ে ক্রুইফ অনেক পরিপূর্ণ ফুটবলার। ’
কথা প্রসঙ্গে এসেছেন ওয়েইন রুনিও। কয়েক দিন আগে স্যার অ্যালেঙ্ ফার্গুসন রুনিকে যে ‘হোয়াইট পেলে’ আখ্যা দিয়েছিলেন সেটি মোটেও মনে ধরেনি পেলের। তাঁর কথা হচ্ছে, ‘মেসির মতো রুনিকেও আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।
সেও (রুনি) অনেক ভালো ফুটবলার। কিন্তু আমার সঙ্গে তার তুলনা করা ঠিক না। আমি গোলের পর গোল করেছি। জানি না সে কত দূর যেতে পারবে। তবে সে দলের জন্য খেলে।
তার টেকনিক ভালো না হলেও মনের জোরটা প্রচণ্ড, হৃদয় দিয়ে খেলে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।