লিগে টানা চার ম্যাচে গোল নেই। ফিটনেস সমস্যায় থাকা একজন খেলোয়াড়ের জন্য ব্যাপারটা অস্বাভাবিক নয়। তবে খেলোয়াড়টা লিওনেল মেসি বলেই শুরু হয় গুঞ্জন—হঠাত্ কী হলো বার্সা মহাতারকার!
মেসির কিছুই হয়নি। তিনি যে আগের মেসিই আছেন, তা দেখিয়ে দিয়েছেন গত রাতে। চ্যাম্পিয়নস লিগে এসি মিলানের বিপক্ষে জোড়া গোল করেছেন।
ফিরেছেন গোলের ধারায়। নিন্দুকদের মুখেও করে দিয়েছেন সেলাই।
মেসির প্রথম গোলটি আসে পেনাল্টি থেকে। ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায়। মিলানের বিপত্সীমানায় নেইমারকে ফেলে দিয়েছিলেন ইগনাজিও আবাতে।
পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। মেসি যখন পেনাল্টি শটটা নিতে গেলেন, বোঝা যাচ্ছিল, ভীষণ চাপে আছেন তিনি। পেনাল্টি নেওয়া এমনিতেই স্নায়ু চাপের, তার ওপর যোগ হয়েছে মেসির তথাকথিত গোলখরার চাপ।
তবে চাপের কাছে হার মানেননি আর্জেন্টাইন মহাতারকা। মিলান গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে জোরাল শটে বল জালে জড়িয়ে দেন।
তবে মেসি যে ‘মেসি’তে ফিরতে শুরু করেছেন, সেটা বোঝা গেল তাঁর দ্বিতীয় গোলটিতে। প্রথমে বক্সের বাইরে থেকে ফ্যাব্রিগাসের দিকে বল ঠেলে দেন মেসি । ফ্যাব্রিগাস তা ধরে দেন বক্সের মধ্যে দৌড়ে ঢুকে পড়া মেসির দিকে। মিলান ডিফেন্ডারদের জটলার মধ্যেই চমত্কার ওয়ান-টু। আর্জেন্টাইন তারকা বলটি ধরে এমন ঢংয়ে মিলানের পোস্টে ঠেলে দেন, যা দেখে মনে হতে পারে ফুটবল খেলাটা মেসির কাছে কত সহজ!
হ্যাঁ, মেসি ফুটবলকে এতটাই আপন করে নিয়েছেন যে তিনি আর ফুটবল যেন একে অপরের সমার্থক।
গত কয়েক মৌসুম ধরে তিনি সেটাই প্রমাণ করে চলেছেন। পেয়েছেন ‘গোলমেশিনের’ তকমা। গত রাতে গোলখরা থেকেও ফিরলেন ঠিক তাঁর মতো করেই। বার্সার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন ২৬ বছর বয়সী মেসি, ‘এবার খুব কাছাকাছি সময়ে দুটি ইনজুরিতে পড়েছিলাম। এর প্রভাব খেলাতেও পড়েছিল।
সেই খারাপ সময়টা এখন অতীত। নিজের ফর্ম নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আবারও ছন্দে ফিরেছি আমি। ’
মেসির মতো সন্তুষ্ট তাঁর কোচ, সতীর্থরাও। দলের প্রাণভোমরার গোল না পাওয়া নিয়ে সব সময় তাঁরা বলে এসেছেন, দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
সেটাই প্রমাণিত হলো কালকের ম্যাচে। সবার তো খুশি হওয়ারই কথা। বার্সা মিডফিল্ডার সার্জিও বুটসকেটস যেমন ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের বলছিলেন, ‘লিওনেল মেসি সব সময় গোলমেশিন। গোল পাওয়াটা তাঁর জন্য ছিল শুধুই কয়েকটা ম্যাচের অপেক্ষা। আজ সে দুটি গোল করল।
আশা করছি, আগামী দিনেও তা অব্যাহত থাকবে। ’
বার্সা কোচ জেরার্ডো মার্টিনোর কণ্ঠেও মেসির প্রতি পূর্ণ আত্মবিশ্বাস, ‘মেসিকে নিয়ে কখনোই চিন্তিত ছিলাম না। এমন সময় সে আগেও পার করেছে। আজ রাতে সে যেভাবে প্রত্যাশা পূরণ করল, তা ছিল দারুণ। আমরা জানতাম, সে আবারও আমাদের জয় এনে দেবে।
’
গত রাতের জোড়া গোলের সুবাদে চ্যাম্পিয়নস লিগে মেসির গোলসংখ্যা দাঁড়াল ৬৫। শীর্ষে থাকা রাউলের চেয়ে মাত্র ছয় গোল পেছনে। ফর্মটা ধরে রাখতে পারলে স্প্যানিশ তারকাকে পেছনে ফেলাটা অবশ্য মেসির জন্য শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
।অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।