বদলে যাচ্ছে জীবন যাপন বদলে যাচ্ছে মানুষের আচরণ,ইচ্ছা অনিচ্ছা। মানুষ সামাজিক জ্বীব, সমাজ বদ্ধ হয়ে বাস করতে ভালোবাসে। জীবনের প্রয়োজনে মানুষ মিশে মানুষের সাথে। মানুষ ভালোবাসে আড্ডা দিতে আর বাঙালী তো আড্ডা পাগল অথচ আধুনিক জীবন যাপন প্রতিদিন একা করে দিচ্ছে মানুষকে। এক বাড়ির মানুষদেরও সময় হয়না প্রতিদিন খানিক নিজেদের মধ্যে পারিবারিক আনন্দের সময় কাটানোর।
সপ্তাহের পাঁচদিন এক অস্থির উন্মাদনার ব্যাস্ত সময় জীবন যাপনের তাড়নায় ইঁদুর দৌড় দৌড়াচ্ছে মানুষ। ছুটির দুটো দিন পারিবারিক নানান কাজ সেরে পরবর্তি সপ্তাহের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা। এরই মাঝে নানান সামাজিক অনুষ্ঠানে হাজিরা তাও যেন গতানুগতিক জীবনের ছকে বাঁধা নিয়ম। এ এক কাজের জীবন যেখানে শুধুই প্রয়োজন জীবনের তাগিদ, পা ছড়িয়ে বসে গল্প গাঁথার সময় কোথায়? এছাড়া পরিবারের বিভিন্ন বয়সের মানুষদের ভিন্ন মানসিকতা। আগের মতন শুধুই পিতামাতার অনুগত হয়ে থাকা বা অপছন্দের হলেও মাতাপিতার অবাধ্য না হওয়ার মতন মন মানসিকতা এখনকার ছেলে মেয়েদের মাঝে কমে গেছে।
এর কারণও আছে অভিভাবকদের অতিরিক্ত শাসন, রক্ষণশীলতা, সন্তানদের মনমানসিকতা সঠিক ভাবে অনুধাবন করতে না পারা। পাশাপাশি বাইরের অনেক উন্মক্ত আকর্ষনীয় জীবন,বন্ধুদের স্বচ্ছলতা, ভীন্নরকম জীবন যাপন। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা অনেকে নিজেদের পারিবারিক ধারা বা সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়। বর্তমান যুগের সন্তানরা অনেক বেশী সরাসরি কথা বলতে পছন্দ করে, এরা অনেক বেশী নিজেদের গ্লোবালাইজ মনে করে এদের মধ্যে বর্ণবৈষম্য কম।
এরা নিজের দেশ ভালোবাসে সাথে সাথে পৃথিবীর মানুষদেরও ভালোবাসে। এরা মানুষকে মানুষ মনে করে, আপন মনে করে । ভাষা, সংস্কৃতিক, বৈচিত্র, ভিনদেশী মানুষ, রূপ রুচি কোন বাঁধা নয় নতুন প্রজন্মের কাছে। ওরা বেড়িয়ে পরতে চায় নিয়ম ভেঙ্গে তবে সবাই এ পরিসংখ্যানে পরে না। পরিবার ভিত্তিতে এদের মঝেও আছে অহমিকা।
আর এছাড়া আমি বলছিনা যে, আগের প্রজন্মের মানুষদের উদারতা ছিলনা। ছিল তবে সংখ্যা গড়িষ্ঠতা ছিল না। একই জাতির মাঝে অনেক গোষ্টির অনেক রকম নিয়মের বন্ধনে বড় হয়ে উঠা মানুষরা নিজেদের সেই সীমাবদ্ধতার বাইরে আসতে পারেন না সহজেই শিক্ষা দিক্ষা জ্ঞান গড়িমায় প্রতিষ্ঠিত হয়েও । সীমাবদ্ধতা শৈশবে মনে গেঁথে যাওয়া নিয়মের বাইরে বেড়িয়ে আসতে পেরেছেন খুব কম সংখ্যক লোকই।
পরিবর্তনের ধারায় বদলে যাচ্ছে মানসিকতা পৃথিবী জুড়ে।
এখনকার ছেলে মেয়েরা জন্মের পর থেকে কম্পিউটারে খেলতে শিখে। অভিভাবকরা যা এক জীবনে চোখেও দেখেননি। প্রগতীশীল অভিভাবকরা নিজেদের আধুনিকায়ন করে শিখে ফেলেন কম্পিউটার। অনেকের আবার নিজেদের অজ্ঞতার কারণেই ভীতির জায়গা সেটা। এখানেও সন্তানরা অভিভাবকের অজানার সন্দেহের শিকার হয়।
কম্পিউটার ইন্টারনেট এক অসাধারন এনসাইক্লোপেডিয়া। যা কিছু জানাতে বা শিখতে চাওয়া হয় তার সব কিছুই পাওয়া যায় আঙ্গুলের ছোঁয়ায়। তবে সঠিক বিষয়টি সঠিক ভাবে খুঁজে নিতে হয়, নয় তো ভুল তথ্য জ্ঞানভান্ডার ভুলের দিকে ধাবিত করে। এই আকাশ লাইব্রেরী সবার নিজেস্ব জায়গা। যে যেমন চায় তেমন তথ্য দিয়ে রাখে।
আমি কী শিখব তা বেছে নেয়ার দ্বায়ীত্ব আমার। কেউ যদি ভুল বিষয়ের পথে ধাবিত হয়ে নিজের বিনাশের পথে নিয়ে যায় তাও যেমন আছে শিক্ষনীয় বিষয়ের চর্চা করে নিজেকে উন্নত করার সুযোগও একশত ভাগ। উন্নত বিশ্বে বাচ্চাদের স্কুলে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক। স্কুলে ছাত্রছাত্রী শিখে কম্পিউটারের ব্যবহার। তাই সটিক ভাবে এর ব্যবহার সম্পর্কে তারা জানে শিক্ষকের কাছে।
আর ক্ষতিকর দিক গুলো সম্পর্কেও সর্তক করে দেয়া হয় তাদের।
প্রযুক্তির এই যুগে মানুষ কথা বলা শুরু করে অর্ন্তজালে লিখে যা খুব পপুলার চেট নামে। দেশ বিদেশের মানুষ আকাশের মাধ্যেমে কথা বলে যাচ্ছে অন্য দেশের মানুষের সাথে এমন কি সারাদিন দেখা হওয়া বন্ধুটির সাথেও। আমার কাছে মজা লাগে এই প্রজন্মের একটি বিষয়। ওরা কথা বলে যাচ্ছে কারো সাথে (অবশ্যই লিখে) ঘন্টার পর ঘন্টা কিন্তু ওরা জানেনা।
তার নাম পরিচয়। এটা ওদের কাছে গুরুত্ব পূর্ণ নয়। ওরা কোন একটা বিষয়ে কথা বলছে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আর বদলে যাচ্ছে ভাষা চেট করার স্বার্থে সংক্ষিপ্ত সাংকেতিক কথাবার্তা।
আরও উন্নত হয়ে সেই চেট রূপ নেয় ভয়েস চেটে।
এখন মানুষ ঘরে বসে কথা বলে যাচ্ছে পৃথিবী ব্যাপী মানুষের সাথে। একাকী মানুষ আড্ডা দিতে সামীল হয় নিজের ঘরে বসে অজানা মানুষের সাথে অর্ন্তজালে। পৃথিবী জুড়ে মানুষ আজ ছড়িয়ে আছে জীবনের প্রয়োজনে নানান দেশে। বাস করছে বিভিন্ন সংস্কৃতির মাঝে, নানান ভাষায় কথা বলা আর একাকী জীবনের র্দূবিসহ অবস্থায়। সারা দিনের ইদুঁর দৌড়ের পর একাকী মানুষ কথা বলার লোক খুঁজে, চায় খানিক গল্পগুজব।
ঘরে বসে যদি সে আড্ডা দেয়া যায় তাহলে অনেক রকম ঝামেলা বাঁচে। তৈরী হয়ে কোথাও যেতে হয়না, যাওয়ার সময় এবং খরচ বাঁচে। কেউ আসলে যে মেহমানদারী করেতে হয় তারও প্রয়োজন পরে না। টেলিফোনে বীল তুলে কথা বলতে হয়না আর সে তো শুধুই একজনের সাথে বলা যায়। অর্ন্তজাল আড্ডা যেন মানুষের হাফ ছেড়ে বাঁচার জায়গা।
রিলাক্স অবস্থায় কথা হয় অনেক বিষয়ে অথবা শুধুই খাজুরা আলাপ। পরিচয় হয় বিভিন্ন মানুষের সাথে। জানা যায় ভিন্নদেশের মানুষের জীবন চালচিত্র। এমনকি খুঁজে পাওয়া যায় মনের মানুষও।
অর্ন্তজালে আড্ডা হয় অনেকের সাথে খানিক গল্পগাঁথায় সময় কাটানোর এক অভিনব পন্থা।
এই অর্ন্তজালেও এখন পালিত হয় বিশেষ দিন গুলো আর্ন্তজাতিক মাতৃদিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, পহেলা বৈশাখ যেনতেন ভাবে না রীতিমত আয়োজন করে করা হয় অনুষ্ঠান। উপস্থাপকের ঘোষনার সাথে কেউ কবিতা কেউ গান এমনকি নাটক পর্যন্ত করা হচ্ছে রির্হাসেলের মাধ্যমে। অনেকে শুধু চুপচাপ উপভোগ করার জন্য থাকেন ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার একটি অনুষ্ঠানে আশি জন মানুষ উপস্থিত ছিল পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। পরবর্তি আয়োজন এ উপস্থিতির সংখ্যা আরও বেড়ে যায়।
বাঙ্গালীরা যে দেশকে কত ভালোবাসে তার প্রমাণ মেলে বিদেশে থাকলে দেশের জন্য হাহাকার হয় আরো বেশী। একাকী জীবনে অনেকে ফ্রাস্টেশনে ভোগেন। অনেকে জড়িয়ে পরে অসামাজিক কার্যক্রমে। একা একা অনলাইনে অসুস্থ ওয়েবপেইজ ঘাটার চেয়ে, একা ঘরে বসে অন্যদের সাথে কথা বলে যদি সুস্থতার বার্তা বয়ে আনে আকাশ সংস্কৃতি তাহলে মন্দকি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।