আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোস্তাফা জব্বারঃ 'ডিজিটাল বাংলাদেশের ধ্রুবতারা'

এক্সট্রা এনার্জি এক্সচেঞ্জার শিরোনাম দেখে চমকে গেলেন নাকি ? না, চমকানোর কোন কারণ নেই। কারণ কম্পিউটারে বাংলা লেখায় 'বিজয়' মাইল ফলক হয়ে এসেছিলো। বিজয়ের অবদানকে অস্বীকার করার কিছু নেই। এখনো প্রফেশনাল প্রিন্টিংয়ের কাজে বিজয়ের বিকল্প নেই। জব্বার সাহেব তাঁর টুইটার প্রোফাইলে বলেছেন, তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

আমরা জানি, গত ৫ তারিখে এপল জিনিয়াস 'স্টিভ জবস; মারা গেছেন। চলতি মাসে 'মাসিক কম্পিউটার জগতে' তিনি স্টিভ জবস-কে নিয়ে একটি ফিচার লিখেছেন। শিরোনাম দিয়েছেন, 'স্টিভ জবস-ডিজিটাল যুগের ধ্রুবতারা'। তাঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত হয়ে পরেছিলেন আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের ধ্রুবতারা মোস্তফা জব্বার। আর শৈশবে তিনিও স্টিভ জবসের মতো বিখ্যাত হতে চেয়েছিলেন।

তাই স্টিভ জবসের মৃত্যুর খবর পাওয়া মত্রই তিনি তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলের ছবিটি বদলিয়ে স্টিব জবসের ছবিটি রেখেছিলেন। অবশ্য নিজের প্রোফাইল পিকচার বদলানো উনার জন্য নতুন কোন বিষয় না। যেমন বর্তমানে (এ পোস্ট লেখা পর্যন্ত) তিনি নিজের প্রোফাইলে রেখেছেন বিজয় বায়ান্নো হাতে সুনিল গঙ্গোপাধ্যায়-এর ছবি। তিনি এ-ও বলেছেন, স্টিভ জবস তাঁর আপন কেউ (আত্বীয় হতে পারে )। এরপর তিনি রিতিমত ঘোষনা দিয়েই স্টিভ জবস-কে নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালিখি শুরু করে দেন।

বাংলা নিয়ে পড়লেও মোস্তাফা জব্বার মূলত রিপোর্টার হিসেবেই তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। অতএব নিশ্চই বুঝতে পারছেন তিনি কতই বিচিত্র। অবশ্য এ কথাটি তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। কিন্তু গত মাসের ১২ তারিখে মারা যান 'সি' প্রোগ্রামিং ভাষার জনক ডেনিস রিচি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা লিস্প-এর জঙ্ক জন ম্যাকার্থি। অথচ এ নিয়ে মোস্তাফা জব্বারের কাছ থেকে একটি আর্টিকেল তো দূরের কথা , ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস-ও পাওয়া যায়নি।

হয়তো তিনি এ খবরটি পাননি অথবা এদের দু'জন তাঁর আপন কেউ নয়। নাকি এদের নাম জব্বার সাহেব কোনদিন শুনেই নি। এবার আসি মূল প্রসঙ্গে, আগে আমাদের দেশের প্রযুক্তিবোদ্ধাদের খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, এরা শুধুই মানুষকে ঠকাচ্ছে। আর তাঁদের স্বীকার হচ্ছি, আমরা সাধারণ মানুষেরা।

জব্বার সাহেব নিজেকে বিজয়ের স্রষ্টা হিসেবে দাবী করেন, তাহলে এই ছবিটা কি? এটি কি অর্থ বহন করে জব্বার সাহেব জবাব দিবেন কি? বিজয় ২০০০ ব্যবহারকারীরা উপরের মতো কিছু দেখতে পারবেন। উল্লেখ্য বিজয় ২০০৩ এ এই তরিকা ঙ্কাজ করবে না। বিজয় ২০০০ এর পরে আসে বিজয় ২০০০ প্রো। কিন্তু বিজয় ২০০০ এর পারিশ্রমিক পাপ্পানা পাননি। ফলে বিজয় ২০০০ প্রো ভার্সনে তিনি জানিয়ে গেছেন তার প্রতিবাদ।

যা সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন। পাপ্পানা সাহেব বলেছেন, "After Releasing Bijoy 2000 many told me why I am here. Okay this is surely not only that I programmed Bijoy 2000 + Pro stutts but I was not paid fully by that Jabbar Don�t Believe him. These are the guys that are holding IT in Bangladesh Back. These guys will never grow up and as they are on decision making Bangladesh won�t. Hate Him and his typez� If you can get money out of him do it now. I failed. Do a favor for me." আপনি নিজেও নিজের পদ্ধতি অনুসরণ করে এর সত্যতা বের করতে পারেন। * প্রথমে বিজয় ২০০০ ডাউনলোড করে নিন। এরপর ইনস্টল করুন। * টাস্কবারে বিজয়ের চতুষ্কোণ আইকন (কালো+লাল) বা 'স্মৃতি সৌধ' আইকনে মাউসের ডান বাটন ক্লিক করুন * 'বিজয়' নামে ছোট্ট উইন্ডো খুলবে।

এখান থেকে ক্লিক করুন About বাটনে। * 'About Bijoy' উইন্ডো খুলবে। এবারের কাজটাই আসল। কীবোর্ডের Ctrl, Alt, Shift এবং P এই চারটি কী একসাথে চেপে ধরে এই উইন্ডোর "স্মৃতি সৌধ" আইকনে মাউসের বাম বাটন দিয়ে ক্লিক করুন। কী দেখতে পেলেন?? জব্বার সাহেব চাইলে পাপ্পানার মত আরো ১০ জন প্রোগ্রামারকে বেতন দিয়ে বা না দিয়ে যেকোন সফটওয়্যার কিংবা হার্ডওয়্যার ডেভেলপ করুন।

কিন্তু সেটাকে নিজের বলে চালানোটা কি চরম অনৈতিক নয়? মাইক্রোসফটের কোন প্রযূক্তির জন্য বিল গেটস কিংবা অ্যাপল এর কোন অ্যাপ্লিকেশনের জন্য স্টিভ রোজ নিজে একক কৃতিত্ব দাবী করেন না। জব্বার সাহেব শুধু বিজয়ের সম্পুর্ণ কৃতিত্বই একা ভোগ করেন নি বরং এর সুবাদে উনি নিজেকে বাংলাদেশের স্বঘোষিত আই টি গুরু হিসেবে নিজেকে জাহির ও প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মেধা ও মণনশীলতা থেকে জার উৎপত্তি, তার সত্ত্ব কখনও টাকা দিয়ে কেনা যায়না। তা হলে পৃথিবীর সব বিখ্যাত শিল্প কর্মের শিল্পীর নাম কখনোই কেউ মনে রাখতোনা, তেমনি সব অমর সঙ্গিতের স্রষ্টা হিসেবে রেকর্ড কম্পানির নামই সবাই জানত। জব্বার সাহেব নিজে কিন্তু কখোন পাপ্পানাকে স্বীকৃতি দেননি, বরং সঠিক স্বীকৃতি ও পারিশ্রমিক না পেয়েই পাপ্পানা নিজের নাম ও বঞ্চণার ইতিবৃত্ত জানাতেই এই কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।

আসলে জব্বার সাহেবের কর্মচারী নিয়োগ করার পদ্ধতিও কিছুটা সন্দেহজনক। যা নিচের স্ক্রিনশটটিতে বোঝা যাবে। অর্থাৎ তিনি ফেসবুকের মতো সোসিয়াল সাইটগুলো ব্যবহার করেন চাকুরির 'নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি' দেয়ার কাজে ব্যবহার করেন। যারা উনার সম্পর্কে জনেন না, তারাই পাপ্পানা সাহেবের মতো ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হন। আর অভ্রকে নিয়ে উনা যে বিরোধীতা সাটা তো সবার-ই জানা।

সেটা নিয়ে এখন কিছু লেখা মানি বোকামী। কিন্তু আজ অভ্র নিয়ে ঘটে গেছে একটি ঘটনা। সেটি শেয়ার না করে পারলাম না। স্বঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রবক্তা জব্বার সাহেব (যেটা তিনি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার কমন ট্যাগলাইন হিসেবে ব্যবহার করেন) মনে হয় বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় টেশিস-এর উদ্ভাবিত ল্যাপটপের সফলতাকে মেনে নিতে পারেন নি। তাই- তিনি টেশিস-এর সাথে পাল্লা দিতে নিজেই শুরু করে দিয়েছেন 'বিজয় ল্যাপটপ' নামে কিছু কমদামী ল্যাপটপের ব্যাবসা।

এর বিজ্ঞাপনও দিচ্ছেন তিনি তাঁর ফেসবুক ওয়ালে। এতে একজন তাঁর কাছে জানতে চান, "আপনার বিজয় ল্যাপটপে কি অভ্র ব্যবহার করা যাবে"। এতে জব্বার সাহেব উনাকে ব্যান করে দেন। এটি কিন্তু কোন নতুন ঘটনা নয়। উনার ফেসবুক ওয়ালে কেউ বিজয় বাদ দিয়ে অন্য কোন কিছু নিয়ে কথা বললেই তিনি সেই কোমেন্ট ডিলিট করে দেন এবং মন্তব্যকারীকে নিজের বন্ধু তালিকা থেকে ডিলিট করেন।

বিস্তারিত পড়ুন এখান থেকে। এছাড়াও ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই তাঁর বিভিন্ন সুকির্তীর খোঁজ পাওয়া যাবে। যেই বাংলা ভাষার জন্য ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল। ২১শে ফেব্রয়ারী পেয়েছে "'আন্তরজার্তিক মাতৃভাষা দিবসের" স্বীকৃতি। তা নিয়ে তিনি করছেন ব্যবসা।

এরকম মানুষের কাছ থেকে আমরা কি আশা করতে পারি ??? এবার একটি কৌতুক পড়ুনঃ গোবাঃ বলতো হাবা, কোন সফটওয়্যারে তৈরিকারীর ছবি আছে? হাবাঃ কেনবে, বিজয় সফটওয়্যারে... আরও অনেক কিছু লেখার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সমইয়ের অভাবে লিখতে পারলাম না বলে দুঃখিত। বিঃ দ্রঃ ১- পোস্টটি লিখতে অন্যান্য অনেক পোস্টের সাহায্য নেয়া হয়েছে। আমি সেইসব পোস্টের লেখকদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিঃ দ্রঃ ২- বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন "আইটি রিভিউ" ফ্রী ডাউনলোড করতে বা পড়তে ভিজিট করুনঃ www.sciencetech.info  ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.