কুরবানী ঈদের করুণ অবস্থা (মালায়শিয়া),জেনে নিন
ভেবেছিলাম গত কুরবানী ঈদেই মালায়শিয়া কুরবানী ঈদের যে করুণ অবস্থা তা নিয়ে লিখব । কিন্তু সময়ের অভাব ও বিভিন্ন কারণে লিখা হয় নাই । তাই এক বছর পর আজ যখন আবার মুসলমানদের সেই উৎসর্গ করার মহান দিনটি সামনে এল বাংলাদেশের সাথে এর বিস্তর পার্থক্য দেখে আমি হতবাক । তাই আজ লিখতে বসলাম । মালায়শিয়া একটি মুসলিম দেশ, আমার মনে হয় এটা সবাই জানেন ।
তাই এদের কুরবানী ঈদটা আমাদের মত করে কল্পনা করা অবাঞ্ছনীও কিছু নয় । আমার চোখে এখনও বাস্তব স্মৃতির মত ভাসে দেশে থাকাকালীন কুরবানী ঈদের দিনটার কথা । কত সীমাহীন আনন্দের কথা । বন্ধু- বান্ধবের সাথে আড্ডা দেয়ার কথা । সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে সবার সাথে মাঠে যেতাম ।
মাঠ থেকে এসে দেখতাম হুজুর গরু, ছাগল জবাই করছে । মুটামূটি বেশিরভাগ বাড়িতেই । কিন্তু এই মালায়শিয়া কুরবানীর চিএটা বড়ই করুণ । এখানে আমদের মত সবাই কুরবানী দেয় না । (সবাই বলতে যাদের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব )।
কুরবানী হয় খূবেই নগণ্য। যারা অনেক বিওশালী তারাও কুরবানী দেয় না । আমি জানি না এর কারণ কি ? তবে এর রহস্য জানতে আমি এক উচ্চ শিক্ষত ব্যাক্তিকে প্রশ্ন করেছিলাম । উনার উওর শুনে আমী চুপ হয়ে গিয়েছিলাম । উওরটা ছিল এইরকম যে –“যারা হজ্জ করতে যাবে তারা কুরবানী করবে , আমি কি হজ্জ করতে যাব যে আমি কুরবানি করব।
’’ উওর শুনে আমার আর কোন কথা বলার ইচ্ছা ছিল না বিধায় আমি আর কথা বাড়াই নি । মনে মনে শুধু বললাম আল্লাহ পাক যেন ওদের হেদায়েত দান করেন । তবে সামান্য যে পরিমান কুরবানী মালায়শিয়া হয় তা হয় মসজিদে । মসজিদও আবার আমাদের মত মহল্লায় মহল্লায় নেই । অনেকটা এলাকা নিয়ে একটা মসজিদ ।
সেখানে ৫-৬ টা গরু জবাই করা হয় কুরবানীর উদ্দেশে । আর তা দিয়ে মসজিদে ঈদের দুই দিন পর পর্যন্ত (দুপুর ও সন্ধায় ) খবারের আয়োজোন করা হয়ে থাকে । কুরবানি বলতে এই্টুকুই ।
আমার বোধগম্য হয় না আরও একটি বিষয় । এদের কুরবানি ঈদ উৎযাপনের সিস্টম টা ।
বলা বাহুল্য যে এরা রমযান ঈদ খুব ঘটা করে উৎযাপন করে । কিন্তু কুরবানি ইদের সময় এদের কোন ফিলিংসই থাকে না। সরকারি ছুটি থাকে মাত্র ২ দিন । ঈদ ও তার পরের দিন । মেনে নিতে কষ্ট হয় যে সকল সরকারি ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ও মাত্র এই ২ দিন বন্ধ থাকে ।
গত কুরবানির ঈদের দিনের কথা মনে করলে যে বিষয়টা আমার বেশি মনে পরে তা হচ্ছে – ঈদের নামায পড়তে গিয়ে দেখি মসজিদে আমার সব মালায়শিয়ান মুসলিম ফ্রেন্ড । আমী ব্যাকূল হয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করলাম কি ব্যাপার তো্মরা ঈদের ছুটিতে বাড়ী যাও নি? ওদের স্রেট আন্সার – ২ দিন ভারসিটি বন্ধ ,বাড়ি গিয়ে কি করব । এবার চিন্তা করেন অবস্থা । ছেলেমেয়েরা ঈদের ছুটিতে বাড়িই যায় না ।
তবে ভাগ্যক্রমে এবার ৩ দিন ছুটি পেলাম ।
শনি, রবি মালায়শিয়া সরকারি বন্ধ । বলতে ভুলে গেলাম যে আগামিকাল রবিবার এইখানে ঈদ । তাই সোম বার সহ ৩ দিন ছুটি পেলাম। ইচ্ছা আছে অনেক মজা করার , সারা দিন কার্ড খেলার , আমি ব্যাতিত যে অল্প কয়জন বাংলাদেশি স্টুডেনটস আছে তাদের সাথে বসে জমিয়ে আড্ডা দেওয়ার ।
তারপরেও মা-বাবা, ভাই-বোন ছাড়া ঈদের আনন্দের কি কোন পূর্ণতা আছে ? থাক এই অতৃপ্তিটার কথা আর লিখলাম না ।
এমনিতেই অনেক লিখে ফেলেছি মনে হয় । পবিএ ঈদুল আযহার শুভে্ছা সকল বাংলাদশি ও প্রবাসী বাংলাদেশি ভাই-বোনদের । সবার ঈদেই ভাল কাটুক,জীবনের স্মরনীয় দিন গুলি তে এই দিন টা যুক্ত হোক, এই প্রত্যাশায় সবাইকে অনেক বেশি বেশি “ঈদ মোবারক” ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।