পেতে চাই সত্যের আলো, হতে চাই বিশ্বাসীদের একজন তো “আসুন আরেকবার জানি প্রিয় সামু ব্লগ সম্পর্কে” সিরিজের চতুর্থ পর্বে আপনাদের সকলকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমি ব্লগার আমি তুমি আমরা। সিরিজের আগের পোস্টগুলার হিট খারাপ না, সুতরাং সিরিজ কন্টিনিউ করতে আমি উতসাহিত হব সেটাতো আর বলার আর অপেক্ষা রাখে না ।
আগের পর্বগুলায় আপনারা জানতে পেরেছেন ব্লগের সেরা হিটম্যান, সেরা কমেন্ট, সেরা কমেন্টার, সর্বোচ্চ পোস্ট প্রদানকারী ইত্যাদি সম্পর্কে। দ্বিতীয় পর্বে জানিয়েছিলাম ব্লগের ইতিহাসে সেরা সব পোস্ট নিয়ে পোস্ট দেয়ার ইচ্ছা আছে। তবে ব্লগের ইতিহাসে সেরা পোস্টের কথা জানতে হলেতো তার আগে ব্লগের সবচেয়ে বোগাস পোস্ট সম্পর্কে জানতে হবে।
তো আসুন জানা যাক।
প্রথমেই বলে নেই বোগাস পোস্ট বলতে কবি কিন্তু এখানে প্রকৃত অর্থে বোগাস পোস্ট বোঝান নাই।
বোগাস পোস্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমার মানদন্ড হবে দুইটি।
এক। সর্বোচ্চ মাইনাস প্রাপ্ত পোস্ট।
যেহেতু পাঠক মাইনাসের মাধ্যমে তার অপছন্দের কথা জানিয়ে যান, সর্বোচ্চ মাইনাস অবশ্যই একটা ভাল মানদন্ড। তবে সমস্যা হচ্ছে যেহেতু এখন মাইনাস উঠিয়ে দেয়া হয়েছে সুতরাং মাইনাসের মাইনাস হওয়ার যেসব বোগাস পোস্ট ব্লগে এসেছে এখানে সেগুলো বিবেচ্য হবে না।
এই পদ্ধতির আরেকটা সমস্যা হচ্ছে যারা সিন্ডিকেট ব্লগিং করেন বা মাল্টি নিকের ব্যবসা করেন তারা কারো ওপর কোন কারনে ক্ষেপে গেলে ওই ব্লগারকে মাইনাসের বন্যায় ভাসিয়ে দেন। অবশ্য মাঝে মাঝে স্রেফ মজা করার জন্যই মাইনাস দেয়া শুরু করে পাবলিক। আর এইভাবেই মাইনাসের বন্যায় ভেসে গিয়েছিলেন আমাদের সবার প্রিয় অপি আপা(আফার দুঃখে ব্যাপক দুঃখিত হওয়ার ইমো হবে )
দুই।
এটা আমার নিজস্ব অবজারবেশন। যাদের পোস্টগুলা বোগাস পোস্ট লিস্টে আসার যোগ্য কেবল তাদেরই এই লিস্টে পোস্ট সমেত স্থান দেয়া হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আক্রোশ কাজ করলে ব্লগার দায়ী নন।
তিন। আরেকটা কাজ করা যেতে পারে।
ব্লগাররা তাদের দৃষ্টিতে সবচেয়ে নিকৃষ্ট পোস্টের নাম ও তার লিঙ্ক দিয়ে যাবেন এবং পোস্টটি বোগাস তাও ব্যাখ্যা করে যাবেন। এরপর ভোটের ভিত্তিতে সেরা ভুয়া পোস্ট নির্বাচন করা হবে।
তো শুরু করা যাক।
সর্বোচ্চ মাইনাস প্রাপ্ত পোস্ট
১.আলেকজান্ডার ডেনড্রাইট ও তার ঐতিহাসিক পোস্টঃ যিনি অল্প কিছুদিন ধরে হলেও সামুতে ব্লগিং করেন বা সামুতে নিয়মিত পোস্ট পড়েন এবং নিজের চোখ কান একটু একটু খোলা রাখেন তিনি অতি সহজেই বলে দিতে পারবেন এই লিস্টে সবার আগে কোন পোস্ট আসবে। জ্বি হ্যা, ঠিক ধরেছেন।
সবার প্রথমে আছে ব্লগার আলেকজান্ডার ডেন্ড্রাইটের সেই সামু কাপানো পোস্ট “জাফর ইকবাল জাতিকে কি দিয়াছেন”। যখন পোস্টটি লেখা হয় তখন আমি সামুর আশেপাশেও ছিলাম না। তাই পুরো ইতিহাস তুলে ধরতে পারব না। তবে তার পুরো পোস্টটা আমি পড়েছি। লেখাটা সাধু ভাষায় আর মারাত্মক অপ্রচলিত শব্দ ব্যবহার করেন।
তবে জাফর ইকবাল সাহেবের বিরুদ্ধে তিনি যেসব অভিযোগ তুলেছিলেন তার সবগুলো কিন্তু ফু মেরে উড়িয়ে দেয়ার মত নয়। যেকারণে ওইসময় তার অর্জিত ৬৬৩ টি মাইনাসের বিপরীতে প্লাসের সংখ্যা ছিল ২১২ টি। অর্থাৎ তাকে ২১২ জন কিন্তু সাপোর্টও করে গেছেন। তবে আমার মনে হয় আজকের দিনে পোস্ট দিলে তার সাপোর্টটা আরো অনেক বেশীই হত। কেননা তেল-গ্যাস বা পরিমল ইস্যুতে তার ভূমিকা দেখে অনেকেই তার ওপর হতাশ।
মাইনাস খেতে খেতে শেষপর্যন্ত বেচারার ব্লগটাই বাতিল হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে আলেকজান্ডার ডেন্ড্রাইট নামে সামুতে আরেকটা নিক খোলা হলেও তা পাব্লিকের কাছে তেমন পাত্তা পায় নাই। হয়ত কোন হিট সিকার হিট পাওয়ার জন্যই নিকটা খুলেছিলেন।
মূল পোস্টটা আর সামুতে নাই। তবে আলেকজান্ডার ডেন্ড্রাইট সাহেব না থাকলেও তার পোস্ট খুজে পাবেন এখানে
২. জলকণা আফার পোস্ট, যার দুঃখে শাহরুখের চউক্ষেও জলকণা আসেঃ এই পোস্টটা যখন আসে তখন আমি ব্লগে ছিলাম।
শাহরুখের কন্সার্ট নিয়ে পাবলিক ব্যাপক উত্তেজিত, বিদেশী দিয়ে কেন আমাদের কন্সার্ট করতে হবে, আমাদের কি নিজেদের স্টার নাই? – এই প্রশ্নের উত্তাপে যখন ব্লগপাড়া আর ফেসবুক পুড়ে যাচ্ছে আর সবাই ওই ব্যাটাকে (নাম সম্ভবত ইলিয়াস গাজী) পিঠ চাপড়ে বাহ বাহ দিচ্ছে তখনি ব্লগাকাশে ধুমকেতু মত এলেন জলকণা আফা আর ব্যাপক বিস্ফোরনের মাধ্যমে পয়দা করলেন তার ঐতিহাসিক সৃষ্টি “স্বপ্নের শাহরুখ মাতিয়ে গেল বাংলাদেশ”। সেখানে তিনি দাবী করলেন ইলিয়াস গাজী গর্দভ , কারন তিনি দুলাইন হিন্দিতেও ঠিকমত কথা বলতে পারে না আর তার হৃদয়ে ব্যাপক কান্না কারন তিনি শাহরুখের কনসার্টে যেতে পারেন নাই।
ফলাফল কি হইল বলেন দেখি?
নারী ব্লগার বলে কেউ তাকে নূন্যতম সহানুভূতি দেখায় নাই। শুরু হইল গদাম ননস্টপ। আমার জানামতে শেষ পর্যন্ত তিনি ৫৯১ টা মাইনাস খেয়েছিলেন।
ধরনা ছিল তিনি আলেকজান্ডার ডেন্ড্রাইটকে হারিয়ে দেবেন। তবে তার আগেই সামু মাইনাস উঠিয়ে দেয়।
তবে অসুবিধা নাই। আফা এখনো দুই নম্বরে আছেন। আর যেসব ব্লগারের ব্লগ বাতিল হয় নাই তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ মাইনাস খাওয়ার রেকর্ডটাতো আপাই হোল্ড করতেছেন।
এখানে একটা গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার হইল আফাকে ৫৫৫তম মাইনাসটা আমিই দিছিলাম।
ভাবছিলাম মোবাইল ভার্সনের লিঙ্ক দিমু। তাহলে আপনারা নিজ চোখে মাইনাসের সংখ্যা দেখতে পারতেন। কিন্তু এখন মোবাইল ভার্সনে যেতে চাইলে দেখাচ্ছে bad gateway। সুতরাং মোবাইল সাইটের লিঙ্ক দিতে পারলাম না।
মূল ভার্সনে আফার ঐতিহাসিক পোষ্ট দেখে আসুন। আফার পুস্ট দেখতে ক্লিকান এখানে
৩.ডেস্টিনি লিমিটেড নিয়া একখান পুস্টঃ তিন নম্বরে আসবে ডেসটিনি লিমিটেড লিয়া একখান পুস্ট। এই পুস্টও দেয়া হইছিল আমি ব্লগে আসার পর। কিন্তু দুঃখের বিষয় হইল আমি তখনো তরুন ব্লগার হওয়ায় স্ক্রীণশর্ট বা পোস্টের ব্যাক আপ নেয়ার মত বিষয়গুলা জানতাম না। তাই এই পুস্টের কোন ব্যাকআপ, স্ক্রীনশর্ট বা এ সংক্রান্ত কোন তথ্য আমার কাছে নাই।
এমনকি পোস্টের লেখক বা শিরোনামও আমার মনে নাই। খালি মনে আছে এই পোষ্ট দেয়ার পর পাবলিক ব্যাপক খেপে গিয়ে সমানে মাইনাস দেয়া শুরু করেছিল। এবং আরেকবার ব্লগার সবার পোস্টে গিয়ে এই পোস্টের লিঙ্ক বলানো শুরু করেছিলেন আর সকলকে উতসাহিত করছিলেন মাইনাস দেয়ার জন্য যাতে মাইনাস সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে যায়। আমার যদ্দূর মনে পড়ে য়ামি সর্বশেষ মাইনাস দেখেছিলাম ৪৮৪ টা। ওই পোষ্ট সংক্রান্ত কোণ স্ক্রীনশর্ট, লিঙ্ক বা তথ্য থাকলে ব্লগার ভাইদের তা শেয়ার করার অনুরোধ করছি।
৪.ব্লগার সন্যাসীর বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ড নিয়ে পোষ্টঃ ভন্ডামির চূড়ান্ত এবং মাইনাস বন্যাঃ এই পোস্টটি সামুর প্রথম পাতায় আসে ১১ই ডিসেম্বর ২০১০, রাত ৮ট ৩১ মিনিটে। শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসের ঠিক দুইদিন আগে। পোস্টের শিরোনাম ছিল “বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ডঃ ধর্মের নামে একটি জাতিকে মেধাশূন্য করা এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার অপমৃত্যু”। পোস্টের শিরোনাম দেখে মনে হয় মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রান দেয়া বুদ্ধিজীবিদের প্রতি প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পোস্টটি লেখা হয়েছে। পোস্টটি প্রকাশের পর কয়েকজন নাস্তিকের হাউকাউয়ের কারনে স্টিকি করা হয়।
তবে মনে হয় না সামুর নাস্তিককুল তখনো ভাবতে পেরেছিলেন তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে। ব্লগার সন্যাসী খুবই চতুরতার সাথে দুটো কাজ করেছিলেন।
প্রথমতঃ বিশাল পোষ্ট লিখেছিলেন। পাব্লিক এমনিতেই বিশাল পোষ্ট পড়তে চায় না। ফলে তার পোস্টও খুব বেশী সংখ্যক পাঠক পড়বেন এটা আশা করা উচিত না।
দ্বিতীয়তঃতার পোষ্ট জুড়ে প্রচুর ছবি ছিল। সামু এমনিতেই স্লো ওয়েবসাইট। তার ওপর ছবি বেশী থাকলে পোস্টের সাইজ হয় বিশাল। নেট স্লো হওয়ার কারনে সহজে পুরা পোস্টই সেদিন লোড হচ্ছিল না।
ফলে পুরো ব্যাপারটা দাড়ালো এরকম।
ব্লগার সন্যাসী একটা পোষ্ট লিখলেন। নাস্তিকরা হুদা হাউকাউ করে পোস্টটাকে স্টিকি করলেন। বিশাল পোষ্ট, তারপর প্রচুর ছবি থাকার কারনে সহজে পোস্টই লোড হচ্ছিল না পুরোপুরি। যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পোষ্ট আর সামু কতৃপক্ষও স্টিকি করেছে, সুতরাং পাবলিকও না পড়েই প্লাস দেয়া শুরু করল। আসল মজা শুরু হল যখন কয়েকজন পোষ্ট পড়ে মাইনাস দিলেন এবং মাইনাস দেয়ার কারন ব্যাখ্যা করলেন।
পাবলিকের টনক নড়ল সাথেসাথেই। বাকিরাও পোষ্ট পড়া শুরু করল এবং শুরু হল মাইনাস বন্যা। এম্নকি ব্লগমাতা জানা এসে অনুরোধ করার পরও মাইনাস বন্যা থামল না। একসময় মাইনাসের সংখ্যা প্লাসকে ছাড়িয়ে গেল। আমার জানামতে এটাই সামুর ইতিহাসে একমাত্র স্টিকি পোষ্ট যাতে প্লাসের চেয়ে মাইনাসের সংখ্যা বেশী।
এই ঘটনার পর আমাদের অর্থাৎ সাধারন ব্লগারদের মারাত্মক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। ব্লগ কতৃপক্ষ মাইনাস তুলে নেয়। আর ব্লগে শুরু হয় মাইনাস ফিরিয়ে দাও আন্দোলন। এই আন্দোলনের ফলে নানাভাবে আহত(জেনারেল) হন অনেক নামীদামী ব্লগার আর সামু হয়ে যায় আগের তুলনায় পানসে।
কি ছিল সেই পোস্টে?
সহজ ভাষায় বললে লেখকের মতে ১৯৭১ সালে সকল বাংলাদেশী মৃত্যু, ধর্ষন এবং ধ্বংসের জন্য দায়ী ইসলাম আর ইসলামের ধারক বাহকেরা।
কতটা গোবর ভর্তি মাথা থাকলে মানুষ এধরনের চিন্তা করে তা আমি ভাবতে পারি না।
এই পোস্টের ৪২ নং কমেন্টে বলা হয়েছে, “ কিছু ইসলামের নামধারী মোনাফেকের জন্য ৭১ সালে বাঙালী বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করা হয়। তার মানে এই নয় যে এর জন্য ইসলাম ধর্ম দায়ী। লেখক এই অন্যায় হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার চাইতে গিয়ে পুরো ইসলাম এবং বাংলাদেশের ৯০% মানুষের ধর্মকে কটাক্ষ করেছেন। লেখক ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করেছেন এবং ইতিহাসও খানিকটা বিকৃতি করেছেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের উদ্যোগতা ছিল তমুদ্দন মজলিস। যারা ইসলামী ভাব ধারার এবং প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম সাহেব সেই ১৯৪৭ সালের ১লা সেপ্টেম্বরই উর্দূর সাথে বাংলাকে সম মর্যাদার ব্যাপারে কথা তোলেন;
http://en.wikipedia.org/wiki/Tamaddun_Majlish
কিন্তু কিছু নাস্তিক তথাকথিত মূক্তমনারা তমুদ্দন মজলিশের এই কৃতিত্ব ছিনতাই করে নিয়েছে। ভাব খানা এমন যে বাংলাদেশের ৯০% মানুষ নাস্তিক ও ধর্মনিরপেক্ষ। জি না, তারা মুসলমান এবং সচেতন ছিল বলেই পাকি, রাজাকারদের বিরুদ্ধে আমরা জয়ী হতে পেরেছি। ৭১এ ইসলামের দোহাই দিলেও ইসলাম যে পাকি ও রাজাকারদের পৈতৃক সম্পত্তি নয় সেটাই প্রমাণিত হয়েছে।
”
এই ঘটনার পরপরই ব্লগার নরাধম একটা পোষ্ট দেন “ বুদ্ধিজীবিহত্যা বিষয়ক পোস্টে এত বেশি সংখ্যক মাইনাস নিয়ে মতামত। ” এই পোস্টে তার কথাগুলো আমার খুব পছন্দ হয়েছিল “বুদ্ধিজীবি হত্যা নিয়ে পোস্টে প্লাসের চেয়ে মাইনাস বেশি দেখে খুবই আশ্চর্য্য হয়ে সম্পূর্ণ পোস্ট পড়লাম। তারপর বুঝলাম এটা যতটা না বুদ্ধীজীবিদের শ্রদ্ধা বা পাকিদের-রাজাকারদের মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বিষয়ক পোস্ট তার চেয়ে বেশি হচ্ছে ইসলামকে বাঁশ দেওয়া চুলকানিমার্কা পোস্ট। তাই এরকম একটা অসম্ভব প্রাসংগিক এবং আমাদের জন্য সার্বজনীন বিষয়ের পোস্টেও কেন এত মাইনাস পড়ল সেটা বোধগম্য হল।
পোস্টের দুই-তৃতীয়াংশই অপ্রাসংগিক এবং চুলকানিমার্কা।
বাকি প্রাসংগিক এক-তৃতীয়াংশ অপ্রাসংগিক দুই-তৃতীয়াংশের ভীরে হারিয়ে গেছে। পোস্ট পড়ে ছোটকালে শুনা নদীর রচনার কথা মনে হয়েছে। এক ছেলে যেকোন রচনাকেই নদীর রচনায় নিয়ে যেত, এটাও সেরকম। বুদ্ধিজীবিহত্যার মত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে নিজের আবালটাইপ দৃষ্টিভংগী প্রচারের জন্য বেঁচে নেওয়াতে বুদ্ধিজীবিহত্যাকে আরো অপমানই করা হয়েছে এই পোস্টে। ব্লগে জামাতী অনেক, বুদ্ধিজীবিহত্যা নিয়ে পোস্টে তাই ২০০টা প্লাস পড়লে ৩০-৫০টা মাইনাস থাকা স্ট্যান্ডার্ড।
সেখানে প্লাসের চেয়ে মাইনাস অনেক বেশি হওয়াতে বুঝা যাচ্ছে পোস্টদাতার ইন্টেনশান সাধারন ব্লগাররা বুঝতে পেরেছে। ব্লগারদের সাধারণ ট্রেন্ড আমরা "জাফর ইকবাল বাঙালি জাতিকে কি দিয়েছেন" পোস্ট থেকেই বুঝতে পারি। অনেক মধ্যপন্থী ব্লগার "রাজাকার" ট্যাগিং হওয়ার ভয়ে মাইনাস দেয়নি, নাহয় আরো বেশি মাইনাস হত এই পোস্টে।
পোস্টদাতার অজানা থাকার কথা না যে অনেক চায়নাপন্থী কমিউনিস্টও মুক্তিযু্দ্ধের বিরোধী ছিল। তাদের মতে এটা ছিল "দুই কুত্তার লড়াই"।
যদি যু্দ্ধটাতে চায়না ভারতের মত সরাসরি কোন একটা পক্ষ হত নিশ্চিতভাবেই এসব চায়নাপন্থী কমিউনিস্টরা রাজাকারদের মত বাঙালিদের হত্যা করত, মা বোনদের ধর্ষণ করত। যারা কোন একটা তথাকথিত মতাদর্শে অন্ধ হয়ে যায়, তখন তাদের কাছে ন্যায়-অন্যায়ের ইয়ার্ডস্টিক বলতে কিছু থাকেনা, তথাকথিত আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য তারা তখন নিজের দেশের মানুষকে হত্যা করতে পারে। এটা জামাতী রাজাকারদের জন্য যেমন সত্যি তেমনি উগ্রবাদী নাস্তিক বা কমিউনিস্টদের জন্যও সত্যি। তাই স্বাধীনতাযুদ্ধের বছরখানেকের মধ্যেই উগ্র আদর্শবাদী বামরা একটা স্বাধীন দেশের জনগনের বিপুল ভোটে নির্বাচিত সরকারকে কিভাবে ব্যতিবস্ত করে রেখেছিল সেটা আমরা দেখেছি। বঙ্গবন্ধুর শাসনের মোটাদাগের ব্যর্থতা এবং বঙ্গবন্ধুকে অকাতরে প্রাণ হারানো এবং পরবর্তীতে জিয়া-এরশাদের সামরিক শাসন এসবের একটা বড় কারন এসব উগ্রপন্থী বাম আদর্শখোররা।
এসব আদর্শখোররাই আবার জিয়া-এরশাদের একমপ্লিস হয়েছিল।
এই বাম প্রসংগ আনার উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা পরিষ্কার করা যে পাকিরা এবং রাজাকাররা যে আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করেছে এটা ইসলামের নামে হলেও ইসলামের দোষ না। যুদ্ধটা ইসলামপন্থী বনাম ইসলামবিরোধীদের মধ্যে ছিলনা। কিছু মানুষ মতাদর্শ মতাদর্শ করে সবসময়ই জান দিয়ে ফেলবে, এই মতাদর্শের দোহাই দিয়ে তারা কোটি কোটি মানুষকে হত্যা করবে। পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট বা সর্বহারারা কমিউনিজমকে রিপ্রেজেন্ট করেনা।
”
আজ ঢুকে দেখলাম সেই পোস্টটি অনেক এডিট করা হয়েছে। সর্বশেষ এডিট ১৬ই আগস্ট, ২০১১। অর্থাৎ প্রায় ৮ মাস ধরে পোস্টটিকে এডিট করে পাঠকের কাছে এখনো গ্রহনযোগ্য করার চেষ্ট চলছে। লেখক নিজেও স্বীকারও করে নিয়েছেন পোষ্ট এডিট করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, দেখা যাচ্ছে অনেক কমেন্টের জবাবও ডিলিট করা হয়েছে।
যেমন পোস্টের প্রথম কমেন্টেই ব্লগার রাজিয়েল বলেছিলেন, “লেখায় একটু চেঞ্জ এক্সপেক্ট করছি। "ইসলাম" শব্দগুলো "পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদী ইসলাম" দিয়ে রিপ্লেস করতে হবে”। জবাবে লেখক বলেছিলেন দুটোই সমার্থক বা এই টাইপের কিছু অর্থাৎ তিনি পোষ্ট এডিট করতে অস্বীকার করেছিলেন। কমেন্টের জবাবটা ডিলিট করে দিয়েছেন বলে আমার এই মূহূর্তে ঠিক মনে পড়ছে না তিনি ঠিক কি বলেছিলেন।
পোস্টটিতে সর্বশেষ প্রদাঙ্কৃত মাইনাসের সংখ্যা ২৮৭টি।
এটা সেই পোস্টের লিঙ্ক
এটা সেই পোস্টের মোবাইল ভার্সনের লিঙ্ক
৫.জলকণা আফার সাথী আমাদের গুরু ভাইঃ এবার আসি গুরু ভাইয়ের কথায়। জলকণা আপার শাহরুখের জন্য কান্না আর ন্যাকামী দেখে যখন পাবলিক তাকে দলে দলে মাইনাস দিয়ে যাচ্ছিল আর জলকণা আপা কোনভাবেই ট্যাকেল দিতে পারছিল না, তখনই তার রক্ষাকারী হিসেবে আবির্ভূত হলেন আমাদের গুরুভাই। জলকণা আপার পোস্টে তার কমেন্ট ছিল এরকম, “আমাদের নৈতিক অবক্ষয়ের একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এই পোষ্ট, একটি সাধারন আবেগময় পোস্টে এতো নোংরাভাবে আক্রমন ,মানুষ হিসেবে আমাদের মানসিক পরিপক্কতার চিত্র তুলে ধরে । ” এরপর তিনি জলকণা আপাকে সাপোর্ট করলেন তার ঐতিহাসিক পোষ্ট “লাখো ভক্তদের কাঁদিয়ে গেলেন উপমহাদেশের জীবন্ত কিংবদন্তী সুপারস্টার শাহরুখ”। এই পোস্টে ব্লগার মৈচাকে ঢিলের ৪৭ নং কমেন্টটা আমার অসাধারন লেগেছিল।
কমেন্টটা এখানে তুলে দিচ্ছি।
“মৌচাকে ঢিল বলেছেন: লাখো ভক্তদের কাঁদিয়ে গেলেন উপমহাদেশের জীবন্ত কিংবদন্তী সুপারস্টার শাহরুখ
ইন্নালিল্লাহ...রাজিউন। কখন ও কিভাবে মারা গেলেন উনি? তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি ”
প্রথম দিকে গুরু ভাইয়ের পোস্টে মাইনাস কম পড়ছিল। তার কারন সম্ভবত খুব বেশী সংখ্যক ব্লগারের চোখে গুরু ভাইয়ের পোস্টটা চোখে পড়ে নাই। তাছাড়া জলকণা আফা মেয়ে আর মাইনাস খাওয়ার দুঃখে তিনি কোন কমেন্টের জবাব না দিয়ে ব্লগ ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন, সেখানে গুরু ভাই ব্লগে ছিলেন আর সব কমেন্টের না হলেও সিলেক্টেড কিছু কমেন্টের জবাব দিচ্ছিলেন।
কিন্তু গুরু ভাই গুরু মানুষ হয়ে কম মাইনাস খাবেন এটা আমার সহ্য হল না। তাই জলকণা আপার পোস্টে গিয়ে ৫১৮ নং কমেন্টে গুরু ভাইয়ের পোস্টের লিঙ্ক দিয়ে আসলাম। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গুরু ভাই ২৫০ ক্রস করেছিলেন।
এটা গুরু ভাইয়ের পোস্টের লিঙ্ক
৬.বেচারী অপি আক্তার ও তার শুভেচ্ছেমূলক পোস্টঃ পুরো পোস্টে যাদের ঐতিহাসিক পোস্টের কথা বললাম তাদের মধ্যে একমাত্র আপি আক্তারের পোষ্ট দেখেই মনে হয়েছে, আহারে, বেচারী(দেইখেন আমারে আবার লুল ভাইবেননা কিন্তু )। তার পোস্টের শিরোনাম ছিল “সবাই কে শুভেচ্ছা ।
” আর ছোট পোস্টের কন্টেন্ট ছিল মাত্র ৩ লাইন। আপনাদের সুবিধার্থে পুরো পোস্টই তুকে দিচ্ছি।
***************সবাই কে শুভেচ্ছা ****************
“আমি ব্লগে নতুন । কিছু লিখতে পারবো কিনা জানিনা । লেখার মতো মাথা নেই ।
তবে পড়বো । আর লেখার চেষ্টা করবো । সবাইকে আবার শুভেচ্ছা । সবাই ভাল থাকবেন। ”
এই নির্দোষ পোস্টের ওপর পাবলিক কেন ক্ষেপে গেল তা আমার অজানা।
শুরু হল মাইনাস বন্যা। আমার জান্মতে ২২২টা মাইনাস পড়েছিল।
পোস্টের ৭৩৮নং কমেন্টে আমি জানতে চেয়েছিলাম এত মাইনাসের কারন কি? আফা বললেন জানি না।
এটা আফার পোস্টের লিঙ্ক
=========================
পোষ্ট আপাতত শেষ। বিশাল পোষ্ট টাইপ করে ফেললাম, টাইপ করতে করতে হাত ব্যাথা হয়ে গেছে।
আপডেট করতে হইলে পরে করে দিব।
=========================
আগের পোস্টঃ
সামুর সেরা সব হিটম্যান এবং তাদের এত্ত এত্ত হিট
সামু ব্লগের সেরা সেরা সব কমেন্টার এবং তাদের ঐতিহাসিক সব কমেন্ট
সামু ব্লগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পোস্ট দিয়েছেন কোন ব্লগার ও তাদের ব্লগ জীবন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।