ব্রাজিলের মাটিতে ফুটবল ম্যাচ। অথচ গ্যালারিতে বাদ্যযন্ত্র থাকবে না, পতাকা উড়িয়ে দর্শকেরা উত্সব করবেন না, রক্তের সঙ্গে মিশে থাকা সাম্বা নৃত্যে মেতে উঠবেন না—এটা কী সম্ভব! ভাবতে কষ্ট হলেও আগামী দিনে ব্রাজিলীয় ভক্তদের শুধু এটুকু নয়, বোধ হয় এর চেয়েও বড় ‘শাস্তি’ মেনে নিতে হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর, ২০১৪ বিশ্বকাপ উপলক্ষে নতুন সাজে সজ্জিত মারাকানা স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ ব্রাজিলীয় দর্শকদের ওপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে। উদ্দেশ্য, মাঠের সুষ্ঠু পরিবেশ ধরে রাখা। সে সব নিষেধাজ্ঞা আলোর মুখ দেখলে ব্রাজিলীয় ফুটবলপ্রেমীরা গ্যালারিতে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না, পতাকা ওড়াতে পারবেন না।
এমনকি খেলার তীব্র উত্তেজনায় দাঁড়াতে বা আনন্দে গায়ের জামাও খুলে ফেলতে পারবেন না। মারাকানা কনসোর্টিয়ামের প্রেসিডেন্ট জোয়াও বোরবার কথাতেও তা স্পষ্ট, ‘অভ্যাস পরিবর্তনের ব্যাপারে আমরা ক্লাবগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছি। আমি বলতে চাইছি, বাঁশ (পতাকা ওড়ানোর সহায়ক) নিয়ে গ্যালারিতে প্রবেশ করা, পটকাবাজি করা, দাঁড়িয়ে খেলা দেখা এসবের কথা। ’
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, বিশ্বকাপের মতো ফিফা আয়োজিত ম্যাচগুলোতে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গ্যালারিতে প্রবেশ করা যাবে না। পতাকাও ব্যবহার করা হবে না।
ব্রাজিলে গত মাসে অনুষ্ঠিত কনফেডারেশনস কাপে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য ছিল। মাঠে খেলার সুষ্ঠু পরিবেশ থাকায় বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে ফিফা। তবে অনেকে বলছেন, দর্শকদের ওপর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ফুটবলের চিরায়ত ঐতিহ্য নষ্ট করা হচ্ছে।
রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামকে বিবেচনা করা হয় ব্রাজিলীয় ফুটবলের অন্যতম কেন্দ্রস্থল হিসেবে। এই স্টেডিয়ামেই ১০০০তম গোল করে ইতিহাস গড়েছিলেন ব্রাজিলীয় কিংবদন্তি পেলে।
গারিঞ্চা, জিকো, রোমারিওর মতো তারকা ফুটবলারের চারণভূমি ছিল এই মারাকানা স্টেডিয়াম। এখানেই ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে উরুগুয়ের মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল। ১৯৯২ সালে ঐতিহ্যবাহী এই স্টেডিয়ামের কিছু অংশ ধসে পড়ে। এতে তিনজন নিহত ও অর্ধশতাধিক দর্শক আহত হন। এর পর থেকে দফায় দফায় সংস্কারকাজ চলে মারাকানা স্টেডিয়ামের।
২০১০ সালে নতুনভাবে শুরু হয় মারাকানা স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ। নবরূপে সজ্জিত এই স্টেডিয়ামের উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ডিসেম্বরে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি ব্রাজিল সরকার। অবশেষে গত ২৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় মারাকানা স্টেডিয়াম। নতুনভাবে নির্মিত এই স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ৭৯ হাজার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।