ভূমিকা আর কি.....:
আজ যদি হুমায়ুন স্যার বেঁচে থাকতেন তাহলে আমার কাজের বুয়াদের কাহিনী শুনে নির্ঘাত একশত পর্বের নাটক লিখে ফেলতেন। যেহেতু সে সুযোগ আপনারা পাচ্ছেন না তাই আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .... আমার কাজের বুয়া সমাচার পর্ব। আশা করি ভবিষ্যতে সাবধানতার জন্য এ পর্বগুলো আপনাদের ভালো লাগবে।
পর্ব-১
বিয়ের পর মা আর শাশুড়ি মা তো বিরাট চিন্তায় পড়ে গেলেন.....মেয়ে ও ছেলেতো কিছুই জানেনা ...ওরা খাবেকি? মাস ছয়েকের মধ্যে ধানমন্ডির সব হোটেল আর ফাস্টফুড মুখুস্ত হয়ে গেছে.... ওখ্নকার বয় বেয়ারাও আমাদেরকে অতি আপন করে নিয়েছে কিন্তু বাঁধ সাধলো আমার হাজবেন্ড..... বেচারা নতুন বউরে কিছু বলতেও পারছেনা সইতেও পারছে না কারন তার লুজমোশান শুরু হয়েছে (আমার আবার স্টিলবডি, ভার্সিটি হলের মামুদের ৬ মাস পুরানো ডাইল খেতে খেতে শরীরে এ্যান্টিবডি তৈরী হয়েছে )। শেষ মেষ বেচারা ধরলো তার খালারে...ওর দু:খ শুনে আমার খালা শাশুড়ি তৎখনাত তার ১৫ বছরের কাজের মহিলাকে ১২ মাসের এ্যাডভান্স দিয়ে পাঠিয়ে দিল।
শুরু হলো আমার নতুন জীবন......
তো আমার বুয়া খালাম্মা শাশুড়ি আমার বাসায় এসেই হম্বি তম্বি..বউমা ঘর এত নোংরা কেন (লাস্ট ৬ মাসে ক্লিন করি নাই)? প্লেট বাটি ঘটিএত নোংরা কেন (লাস্ট ১০ দিন ক্লিন করি নাই জমাচ্ছিলাম আর কি কারন বুয়াতো আসছেই )? সকালে এত দেরী করে উঠ কেন? স্বামীকে নাম ধরে ডাকা কেন?....এই কেনর উত্তর দিতে দিতে আমার জান মোটামুটি সিক কাবাব....। সাক্ষাত হিন্দি সিরিয়ালের শাশুড়ি (যদিও আমার শাশুড়ি মা খুবই ভালো, কখনই খবরদারি করেন না)।
যাহোক ৩/৪ দিন আমাকে ধমকের উপর রেখে কিছু কাজ নিজে করলো আর আমাকে দিয়ে কিছু করালো। ৫ম দিন থেকে বিছানা থেকে আর বুয়া শাশুড়ি উঠেন না...তার শরীর নাকি ম্যাজ ম্যাজ করছে...... সেদিনের মত বাইরে থেকে আমার হাজবেন্ড খাবার নিয়ে এলো কিন্তু মুসিবত...বুয়া শাশুড়ি বাইরের খাবার খাবেন না.....আবার তার জন্য আমার রান্না করতে বসতে হলো.. ।
এভাবে ৩ দিন যাওয়ার পর এক রাতে বুয়ার চেচামেচি...কি ব্যাপার খালা কিছু হয়েছে? বুয়া শাশুড়ি তো বিছানা থেকে এই পড়ে কি সেই পড়ে.. তাড়াতাড়ি হাজবেন্ডকে দিয়ে ডাক্তারের কাছে পাঠালাম.. ডাক্তার ফুডপয়জনিং এর ট্রিটমেন্ট দিল আর বললো খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান থাকতে।
তখন মনে পড়লো বুয়া শাশুড়ি আগেরদিন রাতে প্রচুর চিকেন খেয়েছেন । ...যাহোক লাইফ আমার মোটামুটি হেল... সারাদিন অফিস করি.. রাতে বুয়া শাশুড়ির জন্য মাগুর মাছের ঝোল রান্নাবান্না...বাসন হাড়ি পাতিল মাজা.... বুয়া শাশুড়ির ঔষধ খাওয়ানো... ফলফ্রুট খাওয়ানো.. আমি আর নাই। বুয়া শাশুড়ির মোটের উপর বিছানা থেকেই উঠেন না... একটু পর পর বউমা বলে হাক দেন....... তার ফরমায়েস খাটতে খাটতে আমাদের দুজনের মোটামুটি কেরোসিন অবস্থা।
আমি তো বউ মানুষ কিছু বলতে পারি না.. বললে আবার বলবে বউ পাষান হ্রদয়ের। এভাবে মাস খানেক চলার পর আমার হাজবেন্ডই মুখ খুললো... এভাবে তো আর চলা যায় না..... করলো তার খালারে ফোন... খালাতো আতঁকে উঠে শুনে... কস কি.....হারামজাদির এতো সাহস... আরে ওতো অভিনয়ে বিশাল পাকা... আমার সাথে এরকম অনেক অভিনয় করেছে..... এক্ষনি পাঠা তারে কান ধরে..... কিন্তু ১ বছরের টাকা যে এডভান্স নিয়ে গেছে।
আমার হাজবেন্ড তাড়াতাড়ি বললো.......খালা টাকার চিন্তা করা লাগবে না ওরে এসে নিয়ে যাও.......। যাহোক এডভান্স ২৪০০০ টাকা আর গাড়ি ভাড়া সহ আরও ৫০০০/- পেনাল্টি দিয়ে মুক্তি মিললো।
যদি ভালো লাগে তাহলে পরের পর্ব নাইলে এখানেই ইতি........
বি:দ্র: ছবি আমার পোগ্রামের মেয়েদের বুয়ার না... বুয়ার ছবি দিতে সাহস হলো না....... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।