মানুষ আর মানুষের তামশা দেখি,দুটোই আমার প্রিয় ! আমাদের বাড়িটা হিন্দুপাড়ায়। এখান কার ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যায় না। বেশির ভাগ জেলে। একটু বড় হওয়ার পরথেকেই বাবা-কাকাদের সাথে মাছ ধরতে চলে যায়।
এপাড়া'র ছেলেদের সবথেকে প্রিয় খেলা -মার্বেল।
অনেক গুলো মার্বেল একটা দাগের একটু দূর থেকে ছুড়ে দিতে হবে। বিপক্ষ দল তখন একটা মার্বেল নির্দিষ্ট করে দিবে। তখন একটা মার্বেল দিয়ে ঐ নির্দিষ্ট মার্বেলটা ছুয়ে দিতে পারলেই সব আপনার।
কেন যানি বড়রা খেলাটা পছন্দ করতো না। খেলতে দেখলেই ধাওয়া দিত।
আর মার্বেল ধরতে পারলে -সব ফেলে দিত। তাই বড়দের দেখলেই আমরা দিতাম ঝেড়ে দৌড়।
১ টাকায় তখন ১০ টা মার্বেল পাওয়া যেত।
আমাদের বাড়ীর উত্তরদিকে জংগলের মত ছিল। আমরা ঐটাকে বাগান বলতাম।
ছেলেরা বেশির ভাগ সময়ই ঐখানে খেলত। স্কুল থেকে ফেরার পথে,ঐখানে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা মার্বেল খেলতাম। বাসায় ফিরতাম আসরের আজান দিলে। আমার আম্মার হাতের মাইর তো তখন আমার রেগুলার খাবার।
অনেক গুলো মার্বেল জমা হয়েছিল।
এর মাঝে যেগুলোর ভিতরে নীল রং থাকতো ঐগুলো খুব দামী ছিল। এগুলোকে বলত -ড্যাগা। আমার কাছে তখন এমন ১০ টা খুব সুন্দর ড্যাগা ছিল।
একদিন আব্বা বাজার থেকে আসার পর বলল,-বাজারে নাকি পুলিশ আসছে। বাড়ী বাড়ী তল্লাসী করতাছে-যাদের কাছে মার্বেল আছে তাদের কে ধরে নিয়ে যাবে।
শুনেই আমার আত্মরাম খাঁচাছাড়া। পুলিশকে আমি তখন ভিষণ ভয় পাই।
আমি তখন আমার সবগুলো মার্বেল ঘরের পিছে কাঠাল গাছের গোড়ায় গর্ত করে লুকিয়ে রাখলাম।
এদিকে পুলিশ তো আর আসে না। চিন্তায় পড়ে গেলাম।
বিকেলে কুমারপাড়ার দিকে গেলাম। শুনলাম,সুনীল'দাকে ধরে নিয়ে গেছে। সুনীলদা অনেক ভাল মার্বেল খেলত। আর উনার কাছে অনেক মার্বেল ছিল।
আমি দৌড়াতে দৌড়াতে বাসায় চলে আসলাম।
কাউকে কিছু না জানিয়ে। আমি আমার সবগুলো মার্বেল তুলে খালপাড় গিয়ে ফেলে দিলাম। আমি ভাবছিলাম সুনীল'দাকে বুঝি মার্বেল খেলার জন্যই পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
কেন জানি এর পরথেকে আমাদের পাড়ায় মার্বেল খেলা আস্তে আস্তে কমে যেতে থাকলো। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।