আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! কেউ যদি আমার কাছে প্রশ্ন করে “ভাই আপনার কাছে সব থেকে প্রিয় জিনিসটা কি ?”
আমি এক বারে বলব “ ঘুম” । বিশেষ করে সকালবেলার ঘুম ।
আর সেই সকাল বেলার ঘুম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ দেখা করতে বলে মেজাজ টা কার ভাল থাকে ? এখন আমার মেজাজটা ভাল নাই । কারন ঈশিতা আমারে ফোন দিয়ে এই সকাল বেলা করে ঘুম ভাঙ্গিয়েছে । মেজাজটা প্রচন্ড খারাপ হওয়া সত্তেও বললাম
“হ্যালো” ।
খারাপ কিছুতো বলা যায় না । একে সে মেয়ে তার উপর আবার ভাল বন্ধু । তুই তুকারির সম্পর্ক ।
“কি করিস ?”
মেজাজটা আরো এক ডিগ্রি খারাপ হল । এই সকাল বেলা সকালে মানুষ কি করে ? বললাম
“ আইফেল টাওয়ারের উপর দাড়িয়ে আছি ।
এখনই লাফ দেবো । এতো সকালে কি চাস বল ?”
“ কিছু না । তোর খোজ খবর নেওয়ার জন্য ফোন দিছি । “
“ দেখ মেজাজ খারাপ করাস না । ঘুমাতে দে ।
আমি ফোন রাখছি । “
“ আরে শোন না ! তোর সাথে দেখা করা দরকার । প্লিজ আয় না ক্যাম্পাসে । “
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম ।
“ ক্যাম্পাসে ? এখন ? পারবো না ।
আর আজ আমাদের ক্লাস নাই ক্যাম্পাসে যাবার প্রশ্নই আসে না । “
“ প্লিজ অপু আয় না ! তোর সাথে আমার কিছু কথা ছিল জরুরী । প্লিজ আয় । আমি অলরেডি ক্যাম্পাসে চলে এসেছি । “
“ চলে গেছিস ভাল করেছিস ।
আমাকে বলে গিয়েছিস ? আর জরুরী কথা কাল বলিস । এখন আমাকে ঘুমাতে দে । “
“ তুই আসবি না ?”
“ না । “
“ সত্যি আসবি না ?”
“ আরে বললাম তো না । “
“ ঠিক আছে যা তোর আসতে হবে না ।
মরার ঘুম ঘুমা তুই । আর কোন দিন ফোন দিবি না তুই আমাকে । “ ফোন রাখার শব্দ হল ।
কি আর করা ! প্রিয় এই ঘুমটাকে বিষর্জন দিতেই হল । ঈশিতা খুব একরোখা টাইপের মেয়ে ।
দেখা যাক কি এমন জরুরী কথা । হাত মুখ ধুয়ে ক্যাম্পাসে যেতে যেতে বেস খানিকটা সময় লেগে গেল । একবার মনে হয়েছিল ও হয়তো চলে যাবে । কিন্তু না । দেখলাম ও সেমিনারে বসে আছে ।
আমাকে দেখে বলল “ নাস্তা করেছিস ?”
“ নাস্তা আর করতে দিলি কই ? এখন বল তোর জরুরী কথা কি ?”
“ আগে চল নাস্তা করি তারপর বলছি । “
নাস্তা খাওয়ার সময় ওকে একটু ভাল করে দেখলাম । অন্য দিনের তুলনায় আজ ওকে একটু যেন অন্য রকম লাগছে । ও কখনই মেকআপ সচেতন নয় । যতটুকু না দিলেই নয় ততটুকু ।
কিন্তু আজ দেখলাম ও সেজেগুজে এসেছে । বেশ ভালই সেজেছে । আর ওকে বেশ সুন্দরও লাগছে ।
খেতে খেতে বললাম “লিপস্টিক দিয়েছিস কেন ?”
“ কেন ? ভাল লাখছে না । “
“ না ভাল লাগবে না কেন ? কখনও তো দিস না তাই বললাম আর কি ?”
ও কিছু বলল না ।
বিলটাও আমাকে দিতে দিল না । “
এবার বল কি তোর জরুরী কথা । “
“ এখন বলব না । “
“ মানে কি ? সকালবেলা ঘুম ভাঙ্গিয়ে নিয়ে এসেছিস । আর এখন বলছিস বলবি না ।
“
“ বলব না এমনতো বলি নাই । তবে এখন না বিকাল বেলা বলব । “
“ বিকালবেলা বলবি তো এখন ডাকলি কেন ? ফাজলামো করার জায়গা পাস না । তোর জন্য আমার সাধের ঘুম কামাই করে এলাম এখানে । কোন কাজ নাই ।
খামখা । আসলে তোরা মেয়েরা এমন ঢং করতে পারিস না !”
আমার কথায় ওর যেন একটু মন খারাপ হল । ও অন্য দিকে তাকিয়ে থাকলো । ওর এই স্বাভার টা আমার জানা । কোন কিছুতে কষ্ট পেলে ও অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে ।
একটু নরম সরে বললাম
“আচ্ছা আই এম সরি । আমি তোকে হার্ট করতে চাই নি । কিন্তু বিকাল বেলা জরুরী কথা বলবি ভাল কথা তাই বলে এই সাত সকালে এভাবে ডেকে আনার মানে কি ?”
দেখলাম ওর চোখে পানি চলে এসেছে । পানি আটকানোর চেষ্টা করছে । ওর আচরনে খানিকটা অবাক হলাম আমি ।
ও তো এমন নমনিয় কখনও ছিল না । ওর সাথে কথা কাটাকাটি লেগের থাকে । আমি ওকে ঝাড়ি মারলে ও দ্বিগুন বেগে আমাকে ঝাড়ি মারে । এমন তো কখনও হয় না । ।
তাহলে আজ ??
(চলবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।