আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এ কেমন বর্বরতা ?

ভেঙে দেওয়া হলো পা, তুলে নেওয়া হলো নখ কুষ্টিয়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের মিছিলে না যাওয়ায় গতকাল বুধবার মোহাম্মদ রনি (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তুলে নেওয়া হয়েছে তাঁর ডান হাতের একটি আঙুলের নখও। থেঁতলে দেওয়া হয়েছে অপর আঙুলগুলো। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীরা এ ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় রনির বাবা শাজাহান আলী বাদী হয়ে ছয়-সাতজনকে আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেছেন। রনি নিজেকে কুষ্টিয়া যুবলীগের কর্মী বলে দাবি করেন। শাজাহান আলী বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগের মিছিলে না যাওয়ায় কয়েক দিন ধরে আমার ছেলেকে তারা হুমকি দিয়ে আসছিল। বাড়ি এসে বলে যায়, থানাপাড়ায় বাস করতে হলে মিছিলে যেতে হবে। গতকাল রনিকে মারধরের পর তারা আবারও বাড়িতে এসে বলে যায়, মামলা করলে তাঁর অন্য ছেলেদের একই পরিণতি হবে।

’ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রনি সাংবাদিকদের জানান, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে শহরের ছয় রাস্তার মোড়ে একটি দোকানে তিনি বসে ছিলেন। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ছয়জন কর্মী তিনটি মোটরসাইকেলে এসে হঠাৎ চড়-থাপড় মারেন। কিছু বলতে গেলে গুলির ভয় দেখিয়ে গাড়িতে করে ইসলামিয়া কলেজের ভেতরে নিয়ে যান। কলেজের দোতলার একটি কক্ষে আটকে সেখানে আরও ৩০-৪০ জন মিলে মুখ, হাত ও পা বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে সজীব, রোমেল, আলাল, তানজু, নাহিদসহ অন্যরা লাঠি, রড, হকিস্টিক, হাতুড়ি ও ছুরি দিয়ে সারা শরীরে আঘাত করেন।

এতে তাঁর পা ভেঙে যায়। এ ছাড়া সাঁড়াশি দিয়ে ডান হাতের দুটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়। রনি আরও বলেন, তাঁরা তাঁকে শাটারগান দিয়ে সন্ত্রাসী বলে ফাঁসানোর হুমকি দেন। পুলিশ জানায়, তাঁর দুই ভাইয়ের মাধ্যমে খবর পেয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) চাকলাদার আসাদুজ্জামান ও ওবাইদুর রহমান তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। রনি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রনির সারা দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শক্ত কিছু দিয়ে সারা শরীরে আঘাত করা হয়েছে। দুই পায়ে এক্স-রে করতে বলা হয়েছে। মাথায়ও জখম হয়েছে।

উপড়ে ফেলা হয়েছে এক আঙুলের নখ। এ ছাড়া বাকি আঙুলগুলো থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে রনিকে দেখার পর কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা সাংবাদিকদের বলেন, রনির ওপর যাঁরা অমানবিক নির্যাতন করেছেন, তাঁদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। সন্ত্রাসী যে-ই হোক, তাঁকে আইনের আওতায় আনা হবে। রনিকে মারধরের বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাবুর মুঠোফোনে গতকাল রাতে প্রথম আলোর ঢাকার কার্যালয় থেকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

কুষ্টিয়া মডেল থানার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার সরোয়ার জাহান বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আলাল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখান থেকে.... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.