স্বপ্নের ক্যানভাসে এবার একটা প্রজাপতি কিংবা রংধনু চাই এক ছেলে শুধু একটি রচনা ই পারে,কুমিরের রচনা ...কবে যেন শিখেছিল । ক্লাস এ টিচার যে রচনা ই লিখতে দেয় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ছেলেটি কুমিরের রচনায় চলে যায়। একবার টিচার লিখতে দিলেন গরুর রচনা...সে লিখল-গরু ঘাস খায়,ঘাস নদীর তীরে বেশি জন্মায়, নদীতে কুমির আছে,কুমিরের লেজ খাঁজকাটা, খাঁজকাটা, খাঁজকাটা, খাঁজকাটা, খাঁজকাটা
তো পরের বার টিচার লিখতে দিলেন মুরগি বিষয়ে। সে তখন লিখে মুরগি খুব ভাল খাবার, বিশেষ করে কুমিরের। কুমির থাকে নদীতে, কুমিরের লেজ খাঁজকাটা, খাঁজকাটা, খাঁজকাটা, খাঁজকাটা, খাঁজকাটা।
পরের বার টিচার ভাবলেন এমন বিষয় দিবেন যাতে ওই ছেলে আর কুমিরের সাথে কোন মিল না পায়, এবার টিচার অনেক ভেবে চিন্তে চরিত্র নিয়ে রচনা লিখতে দিলেন।
এবার ছেলেটি লিখল,চরিত্র খুব ই দামি,তবে ইদানিং মানুষের চরিত্র বলতে কিছু নেই,সব বানের জলে ধুয়ে গেছে...নদীর পানি বাড়লেই বান হয়, নদীর পানিতে কুমির ও থাকে, কুমিরের লেজ খাঁজকাটা, খাঁজকাটা, খাঁজকাটা, খাঁজকাটা, খাঁজকাটা ।
যাই হোক,এই কথা টা এইজন্য বললাম, আমাদের সমাজে এখন যা ই হয়,সবকিছুর শেষ কথা টা কুমিরের খাঁজকাটা লেজের মত শেষ হয় মেয়েদের দোষ দিয়ে.........
আমি নারীবাদী নই, মানবতাবাদী। এখন নারী পুরুষ কেও নারী দের পক্ষে কথা বললেই তাকে এখন নারীবাদীর উপমা টা দেয়া হয়,তাই বোধ হয় অধিকাংশ পুরুষ নারীদের পক্ষ তেমন একটা নেন না, কেও যে একেবারেই নেন না,তা ও ঠিক নয়...
কয়দিন ধরে ব্লগ, ফেসবুক গরম কতগুলি বিষয় নিয়ে, প্রথমে আসি পরিমলের ঘটনা...কিছু চাইল বিচার , দুইদিন না যেতেই এক দল বলা শুরু করল ,মেয়ের ই তো দোষ, মেয়ে উত্তেজক পোশাক পরেছিল, তার মানে মেয়ে যদি উত্তেজক পোশাক পরে তাহলে তোমার তাকে রেপ করা জায়েজ, এতে দোষের কিছু ই নেই...
তারপর একটি লিঙ্ক দেখলাম, সিলেট এ বার্গার কিং এর কক্ষে রোমাঞ্চের নামে অশ্লীলতা এমন কি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মেয়ে কে জোর করে তার তথাকথিত প্রেমিকের যৌন হয়রানি...... এইক্ষেত্রে ও কিন্তু পুরা দোষ টাই মেয়েদের বলেই ৯০ ভাগ পুরুষের অভিমত...প্রেমিক টি মেয়েটির ভালবাসার অপমান করল,তাকে জোর করল কিছু নয়......মেয়েটির দোষ,সে গেল কেন?
তারপর একটি খবর, প্রাইভেট ভার্সিটির ৩ ছেলে গ্রেফতার, জোর করে এক কিশোরীর ন্যুড ছবি তুলে তাকে ব্লাকমেইল করতে গিয়ে ধরা পড়েছে...... সবাই বলল, এতটুকুন মেয়ে পেকে গেছে, ছেলের সাথে ফ্ল্যাট এ গেছিল, নিশ্চয় খারাপ উদ্দেশ্য ছিল...ছেলের আর কি দোষ, সু্যোগ পেয়েছে, জোর করে ন্যুড ছবি তুলেছে ,ছবি যখন তুলেই ফেলেছে আর কিছু বন্ধু যোগাড় করে না হয় ব্লাক মেইল ই করেছে...
মেয়ের দোষ তো আছেই, সরল বিশ্বাস এ প্রেমিকের সাথে ফ্ল্যাট এ গিয়েছে,কিন্তু প্রেমিকের দোষ টা কেন যেন সবার চোখ এড়িয়ে গেল।
তারপর সবচেয়ে আলোচিত পারসোনা ঘটনা...... এক্ষেত্রে অধিকাংশের বক্তব্য হল, মেয়েদের এত ঢং এর কি দরকার? পারলার এ না গেলে কি তাদের ভাত হজম হয়না? পারলার এ স্পা করতে যেমন গিয়েছে তেমনি ঠিক হয়েছে তার মানবাধিকার হরণ করে হিডেন ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করেছে...... করবে...... তারপর নাকি গত কয়েকদিন এ পারসনা ভিডিও সার্চ ওই পাবলিক গুলি ই বেশি করেছে...।
কেও একবার ও ভাবেনি, যে ঘটনা টি পারলার এ ঘটেছে, ধরুন আপনার অফিস এ বা মেয়েদের স্কুল এর ওয়াশ রুম এ কোন বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ কোন ক্যামেরা লুকিয়ে রাখল, তাহলে কি তখন আপনি বলবেন মেয়েদের স্কুল,কলেজ বা অফিস এ যাওয়ার কি দরকার?তারা বাসায় বসে সংসার এর কাজকর্ম শিখবে আর স্বামীর সেবা করবে......
মাথা ব্যাথা করলেই মাথা কেটে ফেলার বুদ্ধি টাই আমাদের মাথায় বেশি আসে...যন্ত্রনার কারন খুজতে গেলে ই যে কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসবে...। । তার চেয়ে বলি, মাথা টাই খারাপ, খালি যন্ত্রনা করে ......
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।