যাহা বলিবো তাহা বলিবোই আজকের সব দৈনিকে সংবাদ এসেছে -সংবিধান সংশোধনে গঠিত সংসদীয় কমিটির অন্যতম প্রধান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন ঃমরা গাছে ফুল ফোটে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে 'মরা গাছ' আখ্যায়িত করে তাতে ফুল ফোটানোর চেষ্টা না করতে বিএনপির প্রতি পরামর্শ রেখেছেন আওয়ামী লীগের এ সংসদ সদস্য বুধবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সাংবাদিকদের বলেন, "মরা গাছে ফুল ফোটে না। যে গাছ মরে গেছে, সে গাছে ফুল ফোটানোর চেষ্টা করবেন না। " বিএনপিকে সংসদে ফেরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "কীভাবে নির্বাচনকমিশনকে শক্তিশালী করবো এবং কীভাবে নির্বাচন করবো- আসুন সে বিষয়ে আলোচনা করি। " প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পূজা ম-প পরিদর্শনের সময় এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পর বর্তমান বিধান অনুযায়ী দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, যা নিয়ে সরকারি দল ও বিরোধী দলের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে এলেও সরকারি দলের নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। সুরঞ্জিত সোমবারও এক সভায় বলেন, সংবিধান সংশোধনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের সুযোগ নেই। এর জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "সংবিধান কোনো বাইবেল নয়। দেশের মানুষের জন্য সংবিধান ও আইন প্রণীত হয়।
দেশের মানুষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। এটা সরকারকে উপলব্ধি করতে হবে। " আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখেই ১৯৯৬ সালে সংবিধানে যোগ হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি। তখন বিএনপি এর বিরোধিতা করেছিলো। তবে সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করার পর বর্তমান সরকার সংবিধান সংশোধনের যে উদ্যোগ নেয়, তাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়ে নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের এ ব্যবস্থা বাদ পড়ে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। অন্যদিকে এর পাল্টায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে এবং বিরোধী দলও তাতে অংশ নেবে।
প্রশ্ন ১। এ কোন বিরোধী দল?
প্রশ্ন ২। গাছটিকে মেরে ফেলা হলো কেনো?
প্রশ্ন ৩।
মারতে চাইলে কী মারা যায়?
আজকের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংবাদঃ
আবর্জনায় পাওয়া শিশু ৪০ দিনের চেষ্টায় সুস্থ
রাস্তার পাশে ময়লার স্তূপে কাঁচা বাজারের ব্যাগ থেকে উদ্ধারকৃত শিশুকে চিকিত্সক ও নার্সরা চিকিত্-সার পাশাপাশি মাতৃস্নেহ দিয়ে বাঁচিয়ে তুলেছেন। শিশুটির পায়ের আঙ্গুল ইঁদুরে কিংবা কুকুরে খেয়ে ফেলেছে। শিশুটির প্লাসেন্টা কাটা হয়নি। তা দিয়ে শরীরটি পেঁচানো ছিল। এ শিশু বেঁচে যাওয়ার ঘটনা যেন অলৌকিক।
হূদয়বান ব্যক্তি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিত্সা সেবা ও যত্ন দিয়ে শিশুটিকে যেভাবে চিকিত্সকরা বাঁচিয়ে তোলেন, তাতে আবার প্রমাণিত হলো মানুষ মানুষের জন্য। সম্প্রতি সেন্ট্রাল রোডে ময়লা আবর্জনার পাশে ভোরে পথচারীরা একটি কাঁচা বাজার ব্যাগের মধ্যে একটি রক্তমাখা শিশুকে দেখতে পান। শিশুটির মাথা ব্যাগের ভেতরে এবং পা দুইটি ব্যাগের বাইরে। পায়ের আঙ্গুল নেই এবং কুকুর ও ইঁদুরে খেয়ে ফেলার স্থান থেকে রক্ত ঝরছে। এ অবস্থা দেখে সেখানে ভিড় জমে যায়।
পাশেই মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খানের বাসা। তিনি বাসা থেকে নারী-পুরুষের জড়ো হওয়ার দৃশ্য দেখতে পান। এরপর শিশুটিকে দেখে উদ্ধার করেন। তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে দ্রুত নিয়ে যান ল্যাবএইড হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত শিশুটিকে ভর্তি করেন।
শিশুটির বিস্তারিত জেনে ল্যাবএইড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম শিশুটির চিকিত্সা সেবার যাবতীয় খরচ বহন করার দায়িত্ব নেন। পাশাপাশি একটি উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক টীমকে শিশুটির চিকিত্সা সেবার দায়িত্ব নেয়ার জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্দেশ দেন। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. নওশাদুন নবী, ডা. কাজী কামরুল ও অর্থোপেডিক সার্জন ডা. জিয়া উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে শিশুটির চিকিত্সা সেবা শুরু হয়। পরে একজন প্লাস্টিক সার্জন শিশুটির চিকিত্সাসেবায় যুক্ত হন। অর্থোপেডিক সার্জন শিশুটির দুই পায়ের হাড়ের অপারেশন করেন।
সুস্থ হওয়ার পর প্লাস্টিক সার্জন ঐ স্থানে অপারেশন করেন। ৪০ দিনের মাথায় শিশুটির দুই পায়ে স্বাভাবিক আঙ্গুল হয়ে যায়। … শিশুটি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক। ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার, নার্স শিশুটিকে চিকিত্সাসেবা দিয়েছিলেন। স্নেহ আদরের কোন কমতি ছিল না।
চিকিত্সাসেবা বাবদ তিন লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হলেও এর পুরাটাই ল্যাবএইড ব্যবস্থাপনা পরিচালক বহন …আদর করে শিশুটির নাম রাখা হয় তানজীদ। তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ এবং মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খান যৌথভাবে কোন হূদয়বান দম্পতির কাছে দত্তক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ইতিমধ্যে এক চাকরিজীবী দম্পতি শিশু তানজীদকে দত্তক নেন। ফুটফুটে শিশুটি বর্তমানে সুস্থ। নিঃসন্তান দম্পতির সংসারকে শিশুটি আলোকিত করেছে।
(সূত্রঃদৈনিক ইত্তেফাক। বৃহস্পতি, ৬ অক্টোবর ২০১১, ২১ আশ্বিন ১৪... লেখক: আবুল খায়ের )
বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী-অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক সদস্য জনাব আকবর আলী খান গতকাল এক সেমিনারে বলেছেন-
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কোনো আইনি বিষয় নয়, এটি একটি সামাজিক চুক্তি। আইন দিয়ে এটি ভাঙা বা পরিবর্তন করা যাবে না। এটি দেশের জনগণের সাথে শাসনব্যবস্থা সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। আইনের দোহাই দিয়ে কেউ তা ভাঙতে পারে না।
এ সামাজিক চুক্তিকে এক পক্ষের সিদ্ধান্তে বাতিল করার কোনো উপায় নেই। বাংলাদেশে এখন যে ধরনের নির্বাচন দরকার তা শুধু নির্বাচন কমিশন দিয়ে সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন দিয়ে হয়তো সূক্ষ্ম কারচুপির নির্বাচন ঠেকানো যেতে পারে, তবে স'ূল কারচুপি রোধ করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যস্থা রাখতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে ব্যাধি বিরাজমান, তা নিরাময়ের জন্য ভুল ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এই ভুল ইচ্ছাকৃত কি না তা দেখতে হবে।
সংবিধানে অনেক ক্ষেত্রে সাময়িক বিচ্যুতি স্বীকার করে নিতে হয়। মহিলাদের জন্য জাতীয় সংসদে আসন সংরক্ষণ তেমনই একটি বিষয়। সংবিধানে নারী ও পুরুষের সম-অধিকার রক্ষার যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, তা তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তারপরও বাস-বতার পরিপ্রেক্ষিতে এটি রাখা হয়েছে। যেমন, চাকরির ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতিও স'ায়ী ব্যবস'া নয়।
এগুলো সাময়িক বা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য থাকে। তেমনি স্থায়ীভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারও থাকতে পারে না। এটিও নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন- থাকবে।
ড. আকবর আলি খান প্রশ্ন রেখে বলেন,
আদালত আরো দুই টার্ম তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার কথা বলেছেন, কিন' তার আগেই কেন এটি তুলে দেয়া হচ্ছে? তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের মধ্যেও ১০ শতাংশ অনির্বাচিত মন্ত্রী আছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি অবৈধ হয় তাহলে এটি হালাল হয় কিভাবে? বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের অভিজ্ঞতার আলোকে হয়তো এখনকার ক্ষমতাসীনেরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিপক্ষে কথা বলছেন।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনেক খারাপ কাজ করলেও নির্বাচনটা তো ভালোই করেছে। সে জন্যই তো আজকের ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হতে পেরেছেন।
অনুভূতিমালাঃ
১.মানুষ সর্বোময় ক্ষমতার অধিকারী নয়। মানুষ চাইলে যাইচ্ছা তা করতে পারে না। জীবন-মৃত্যুর মালিক একজন স্রষ্টা আছেন- তিনি চাইলেই তা হয় ,না চাইলে হবে না।
মরাগাছ মরা নয়- গণমানুষের প্রণোদনা এমন জীবনীশক্তির অধিকারী যে- আজকের মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি থেকে যে কোনো শাসক গোষ্ঠীর শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ আছে।
২। মরা গছেও ফুল ফোটে- আওয়ামীলীগ যখন স্বাধীনতা বিরোধী জামাতকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলন করেছিলো তখন খলেদা জিয়াও এমন উল্টাপাল্টা মন্তব্য করছিলেন। গণআন্দোলনের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ করতে বাধ্য হয়ছিলেন।
৩।
সম্পূ্র্ণ রায় প্রকাশের আগে আদালতের এ স্ববিরোধী রায়ের উপর ভিত্তি করে আওয়ামীলীগ যে গেইম প্লান করেছে তা জননন্দিত হবে মনে হচ্ছে না-কারণ বাংলাদেশের ক্ষমতাশীন দল ছাড়া প্রায় সব দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না গত কাল ৫ অক্টোবর ঢাকায় এক সেমিনারে বলেন,
দেশের সব কিছু যেন আজ দুই দলের ইচ্ছা-অনিচ্ছার কাছে আটকা পড়ে গেছে। আর দুই দলের সব কিছুই তো দুই নেত্রীর কাছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য নতুন কোনো প্লাটফরম সৃষ্টিরও সুযোগ রাখা হচ্ছে না। বিভিন্ন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় সেই পথও বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন-
বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সমাজের ভেতর থেকে নতুন শক্তির বিকাশ ঘটানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রাপ্তিঃ তবে বিরোধীদল মোকাবেলায় আওয়ামীলীগ পারফরম্যান্স বেশ উপভোগ্য। একদিকে রাজপথে মুগুর চালাচ্ছে অন্যদিকে সংবিধান সংবিধান খেলায় মাতিয়ে রেখেছে মিডিয়াভূগোল। আর দেশ পরিচালনায় আওয়ামীলীগ যে যোগ্য নয় তা আবার ও প্রমানিত হচ্ছে প্রতিদিনের পত্রিকার পাতায় পাতায়।
জন উক্তিঃ আওয়ামীলীগকে রাজপথে মানায়, ক্ষমতায় নয়।
অনুসিদ্ধান্তঃ বাংলাদেশের মুমূ্র্ষু শিশু গণতন্ত্রের জন্যে হূদয়বান অভিবাবক দরকার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।