সামুতে অর্থহীন অশুদ্ধ বাংলা ও বাংলিশ শব্দ পরিহার করি
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যাতে না হয় সেজন্য তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিএনপির বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গত ২৭ অক্টোবর পল্টনে বিএনপির জনসভায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়া বলেন, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে যাদের বিচার করা হচ্ছে, এ বিচার মানুষ মানে না। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের অভিযোগে আটক জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ সকল বন্দীর মুক্তি দাবি করেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াত নেতাদের মুক্তি চেয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্যে সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ খালেদা জিয়ার এ বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
আদালতের বিচারধীন একটি বিষয় নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার এমন মন্তব্যকে দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেছেন দেশের বিশিষ্টজনরা।
প্রকাশ্যে যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি চেয়ে বক্তব্য দেয়ায় বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি চাওয়া নিয়ে খোদ বিএনপির মধ্যে ৰোভের জন্ম নিয়েছে। একাধিক নেতা এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন। বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা দলের চেয়ারপারসনের এ ধরনের মন্তব্যের পর দলের চরিত্র ধরে রাখা সম্ভব নয়।
তাঁরা বলেন, দলের অনেক নেতাও মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। তারাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়। রাজনৈতিক কারণে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা মেনে নিলেও তাদের মুক্তির দাবিকে ভালভাবে নেননি। বিশেষ করে দলের নেত্রীর প্রকাশ্যে এভাবে যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি চাওয়ায় এখন মুখ দেখানো দায় হয়েছে। তাদেরও এখন যুদ্ধাপরাধীদের কাতারে পড়তে হচ্ছে।
খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দাবি করলেও দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি দীর্ঘদিনের। সে অনুযায়ী এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গঠন করা হয়েছে যুদ্ধাপরাধ বিচার সংক্রানত্ম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এ ট্রাইবু্যনালে বিচারের জন্য ইতোমধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত মধ্যে রয়েছে জামায়াতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা, নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসেইন সাঈদী।
এছাড়া একই অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল সালাম। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মহল থেকে এ বিচার প্রক্রিয়া বাতিল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এ বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য দেনদরবার চলছে।
দেশে সচেতন মহল সব সময়ই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করে আসছে। দেশে অধিকাংশ জনমতও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা যে দেশের চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী সে বিষয়ে কোন কোন দ্বিমত নেই। দেশের বিশিষ্টজনরা বলছেন, যতদ্রুত সম্ভব যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে। কিন্তু জামায়াত দলীয়ভাবে প্রথম থেকেই এটি বানচাল করার চেষ্টা করছে। তাদের শেষ চেষ্টা হিসেবে রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। বিএনপিও বুঝে না বুঝে জামায়াতের অপকৌশলের ফাঁদে পা দিচ্ছে।
তাঁরা বলছেন, খালেদা জিয়ার মতো একজন দায়িত্বশীল নেত্রী যিনি কয়েকবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী তাঁর পৰে বিচারাধীন একটি বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা শোভনীয় নয়।
তাছাড়া বিচারাধীন বিষয়ে আদালতের বাইরে আসামি ছেড়ে দেয়া বা বিচার বন্ধ করার আহ্বান জানানো স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপের শামিল। বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার মতো একজন দায়িত্বশীল নাগরিকের কাছ থেকে বিচারাধীন বিষয়ে এমন মন্তব্য শুধু অনাকাঙ্খিতই নয়। অনঅভিপ্রেতও বটে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।