সর্বোচ্চ আদালতের পবিত্র অঙ্গন আবারও কলুষিত হলো। রাজনৈতিক দলের বিবেকবর্জিত ক্যাডার ও দলবাজ আইনজীবীদের কারণে পর পর দুই দিন সর্বোচ্চ আদালতের পবিত্র অঙ্গন সরকার ও বিরোধী দল সমর্থকদের শক্তি পরীক্ষার রণক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হলো। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর কল্যাণে দেশবাসী অবাক হয়ে দেখল কাণ্ডজ্ঞানহীন রাজনীতি জাতিকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। দেখল বিবেকবর্জিতরা কীভাবে সর্বোচ্চ আদালতকে রাজনৈতিক তৎপরতা চালানোর স্থান হিসেবে ব্যবহার করছে। কীভাবে আদালতের মৌন পরিবেশ ক্ষুণ্ন করে দলবাজ আইনজীবীরা তাদের বহিরাগত রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে মিছিল বের করছেন।
পাশাপাশি মিছিলকারীদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে ছুটে আসছে প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকরা। আদালত প্রাঙ্গণ লক্ষ্য করে বাইরে থেকে ঢিল ছোড়া হচ্ছে বেপরোয়াভাবে। বার কাউন্সিল ভবনের ওপর থেকে প্রতিপক্ষের ওপর ইটের টুকরা কিংবা কাচের বোতল ছোড়া হচ্ছে। মহিলা আইনজীবীকে পিটিয়ে ধরাশায়ী করছে বহিরাগত ক্যাডাররা। প্রতিপক্ষ দুই রাজনৈতিক শক্তির সমর্থকদের সামাল দিতে পুলিশের জলকামান ব্যবহারের দৃশ্যও মানুষ দেখেছে হতাশভাবে।
আমরা এ কলামে অতীতে বারবার সুপ্রিম কোর্টসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখার তাগিদ দিয়েছি। বিরোধী দলের কর্মসূচি উপলক্ষে দলবাজ অতি উৎসাহী আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণকে বিক্ষোভ প্রদর্শনের স্থান হিসেবে বেছে নেওয়ায় অনভিপ্রেত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সুপ্রিম কোর্ট দেশের সংবিধানের রক্ষক এবং দেশবাসীর সাংবিধানিক অধিকারের নিশ্চয়তা বিধানকারী প্রতিষ্ঠান। দেশের বিচারপ্রার্থী মানুষের এটি শেষ আশ্রয়স্থল। এই মহিমান্বিত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা বিচারব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ আইজীবীদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
কিন্তু পেশার প্রতি অঙ্গীকারহীন দলবাজ আইনজীবীরা সর্বোচ্চ আদালতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে যেভাবে সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন তা নিন্দনীয়। সংশ্লিষ্টদের ওপর চড়াও হওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলের মিছিল থেকে যারা আদালত প্রাঙ্গণে ঢিল ছুড়েছেন কিংবা ভেতরে ঢুকে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন তারাও একই ধরনের ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়েছেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মর্যাদা রক্ষায় বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ রাজনৈতিক তৎপরতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির অভাব আমাদের রাজনীতিকে শুধু কলুষিত করছে না, ভরসা রাখার মতো সব প্রতিষ্ঠানকেও গ্রাস করতে চলেছে। এ কাণ্ডজ্ঞানহীনতার অবসান হওয়া উচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।