সাতক্ষীরার দুই বিজ্ঞানীর এক দশকের প্রচেষ্টা অবশেষে সফল হয়েছে। সার্কিট, ব্যাটারি, মোটর ও জেনারেটর দিয়েই এই বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট আবিস্কার করা হয়েছে। এটি চালাতে একটি টাকাও খরচ হবেনা। ডিজেল, ইঞ্জিন ওয়েল ও জনবল ছাড়াই এই প্ল্যান্টটি চালানো যাবে। তরুণ দুজনের এই অভাবনীয় এ আবিস্কারের সফলতা প্রমাণ করতে ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে দেড়ঘণ্টা প্ল্যান্টটি চালিয়ে এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।
যারা এই সাফল্যের দাবিদার, তারা হচ্ছেন- সাতক্ষীরার সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের সিরাজুল মল্লিকের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম বাবু মল্লিক ও তার সহযোগী একই এলাকার শামসুদ্দিন ঢালীর ছেলে মিজানুর রহমান মিজান। তারা পেশায় একজন দোকানদার, অপরজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি।
আবিস্কারকদের একজন তৌহিদুল ইসলাম বাবু মল্লিক বাংলানিউজকে জানান, এই বিদ্যুৎ প্ল্যান্টটি তৈরি করতে ১টি জেনারেটর, ২টি মোটর, ১২ ভোল্টের ১টি ব্যাটারি, ৪টি সার্কিট, ৩টা পুলি, ২টা বেল্ট, ১টা ফ্লাইবারসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়ে থাকে। তিনি বলেন, এই প্ল্যান্ট থেকে ৩ হাজার ৬০০ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। এর মধ্যে সরবরাহের সময় ২ হাজার ৮০০ ওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে।
বাকি ৮০০ ওয়াট বিদ্যুৎ প্ল্যান্টের ব্যাটারি চার্জ ও সার্কিটগুলো সক্রিয় করে রাখার জন্য ব্যবহৃত হবে। সরবরাহকৃত বিদ্যুতে ১০০টি ৩০ ওয়াটের এনার্জি সেভিং বাল্ব জ্বালানো সম্ভব হবে। এই বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট ২৪ ঘণ্টা ব্যবহার উপযোগী উল্লেখ করে তিনি বলেন,;যেখানে বিদ্যুৎ আছে, সেখানে ব্যবহার করা হলে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ১৩ সেকেন্ডের মধ্যে বিদ্যুৎ প্ল্যান্টটি অটোস্টার্ট হয়ে যাবে। এই মেশিনে জ্বালানি হিসেবে কোনো ধরনের ডিজেল, ইঞ্জিন ওয়েল ও জনবল প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, এটি তৈরি করতে প্ল্যান্ট প্রতি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা খরচ পড়বে।
পরীক্ষামূলকভাবে এই প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দেখাতে গত ২৩ আগস্ট সন্ধ্যায় সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর বাজারে সাড়ে ৫ ঘণ্টা একটানা বিদ্যুৎ সরবরাহ করে প্রত্যক্ষদর্শী সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন ওই দুই তরুণ। তাদের আগামী পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তৌহিদুল ইসলাম বাবু মল্লিক ও মিজানুর রহমান মিজান বাংলানিউজকে জানান, আগামীতে তাদের ১০ হাজার ওয়াটের বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে যেখানে একেবারেই বিদ্যুৎ নেই, সেখানে সুইচ চাপ দিয়ে এই মেশিন স্ট্রার্ট করতে হবে। তারা জানান, রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে কোনো ধরনের শব্দ ছাড়াই বিদ্যুৎ প্ল্যান্টটি কীভাবে স্টার্ট করা যায়, তা নিয়ে তারা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এই প্রচেষ্টা বাস্তবে রূপ নিলে দেশের মানুষ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে বলে আশা করছেন তারা।
এ জন্য তারা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী খান মোক্তার আলী বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ ধরনের আবিস্কারকে আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাই। যদি এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে তাহলে আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি কমানো যাবে।
সূত্রঃ View this link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।