আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপারেশান খোঁজ(The Search) ঃ মজনু নামা

মজনু মিয়ার কাহিনী তেমন আহামরি কিছু নয়। প্রেম করে কেউ কেউ স্বেচ্ছায় গৃহ ত্যাগ করে আবার কেউ কেউ অভিভাবকদের দ্বারা গৃহত্যাগে বাধ্য হয়। আমাদের মজনু মিয়া দ্বিতীয় ক্যাটাগরির। কিন্তু যে কারণে মজনু মিয়া আমার মনোযোগ আকর্ষণ করলো তা হচ্ছে তার গত ২৭ বছর ধরে গৃহে না ফেরার কাহিনী। ১৯৮৪ সালে মজনু মিয়া প্রেম করে বিয়ে করলে তার পরিবার তা মেনে নিতে পারেনি, তাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়।

তখন থেকে আজব্দি মজনু মিয়া আর কখনো ময়মনসিংহে তার বাড়িতে ফিরে যায়নি। এখন সম্ভবত পরিবারের কেউ অথবা নিকটাত্মীয় মৃত্যু শয্যায় তাই...... আমাদের দেশের চিরাচরিত নাটুকে প্লট আর কি! পরিচিত এক সাংবাদিক ভাইয়ের সাথে বেরিয়ে পরলাম মজনু মিয়ার খোঁজে। হাতে সূত্র বলতে কেউ একজন নাকি তাকে বছর পনের আগে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাদাম বিক্রি করতে দেখেছে এটুকুই। না কোন ছবি, না কোন রেফারেন্স শুধুমাত্র বাদাম বিক্রেতার তথ্যটুকু সম্বল করেই চলে গেলাম স্মৃতিসৌধে। মনের মধ্যে একটা কিছু করার যে উত্তেজনাটুকু ছিল তা উড়ে যেতে সময় নিলোনা দু-একজনকে জিজ্ঞেস করেই।

বুঝতে পারলাম আমার সাংবাদিক ভাই তার শ্বশুরবাড়ির লোকের অনুরোধে ঢেঁকি নয় পুরো করাতকল গিলে ফেলেছে। আজকে পা-দুটুর খবর আছে এই মানসিক প্রস্ততি নিয়ে ফেললাম। যাহোক খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে স্মৃতিসৌধে কর্মরত সাংবাদিক ভাইয়ের পরিচিত এক লোকের সাথে দেখা হলে তিনি আমাদের চায়ের আমন্ত্রন জানান। চা খেতে খেতে আমাদের আসার হেতু বর্ণনার মধ্যখানেই তিনি মজনু মিয়াকে চেনেন বলে জানান। অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম, তিনি ব্যাপারটা খেয়াল করেছেন বলে মনে হল।

“আপনার কি হয়”-তার এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে একটা সিগারেটের খোঁজে পা বাড়ালাম। এতো সহজে মজনু মিয়ার হদিস পেয়ে যাবো তা কল্পনাও করিনি। আমরা যখন সেই লোকের সহায়তায় মজনু মিয়ার বাড়িতে গিয়ে হাজির হই তিনি তখন বাড়িতে ছিলেন না, মাঠে নাকি গরু চড়াতে গিয়েছেন। কি আর করা! সেখানেই গেলাম। পড়ন্ত বিকেলের ম্লান আলোয় কল্পনাবিলাসী মনও নাকি ম্লান হয়ে যায়! বিদ্রোহী প্রেমি টাইপের কোন চেহারা দেখবো সেই আশা করিনি কিন্তু তাই বলে এমন ভঙ্গুর কোন মানুষকে দেখবো তাও আশা করিনি! দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে বললাম হায়রে প্রেম! হায়রে ভালবাসা! ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।