আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উইকিলিক্স : মরিয়ার্টির সাথে বৈঠকে প্রশাসন পরিচালনা নিয়ে শেখ হাসিনার উদ্বেগ

Set sail, ye hearts~ into the sea of hope.. সাম্প্রতিককালে (2011-08-30 01:44) প্রকাশিত উইকিলিকসের দলিলে দেখা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বৈঠকে সরকার পরিচালনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টির কাছে হতাশা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া তার সরকারকে বিদ্রোহের তদন্তে এফবিআই সহ অন্যান্য সবধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেয়ার জন্যও অনুরোধ করেছেন। ২০০৮ সালের ১১ই মার্চ অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিদ্রোহের তদন্ত-কাজে এফবিআই এর সহায়তা চেয়ে হাসিনা মরিয়ার্টিকে জানান, এই বিদ্রোহের রহস্য উদঘাটন করা শুধু বাংলাদেশের জন্যেই না, বরং এই উপমহাদেশের জন্যও অতি আবশ্যকীয় একটা ব্যাপার। এই ঘটনার জন্য তিনি রাজনীতিবিদ এবং কিছু উচ্চাভিলাষী সেনা অফিসারকে দায়ী করছেন। এছাড়া তিনি এটাও বিশ্বাস করেন যে এই বিদ্রোহ ছিলো তার সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিরোধীদের ষড়যন্ত্র।

যদিও রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে তিনি কবুল করেছেন যে, এই অভিযোগের সত্যতার কোনও প্রমাণ তার হাতে নেই। তিনি সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের ভেতর সুসম্পর্ক ও বিডিআর পুনর্গঠনে মার্কিন সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন। এছাড়া এই বৈঠকের কথোপকথনে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার কার্যক্রমেও একেবারেই সন্তুষ্ট নন প্রধানমন্ত্রী। কথার এক পর্যায়ে মরিয়ার্টিকে তিনি সাফ জানিয়েছেন, গোয়েন্দারা তাকে দরকারের সময় তথ্য দিয়ে সহায়তা করছেন না। এছাড়া বিদ্রোহের প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলাপচারিতায় দেখা যাচ্ছে, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া সহ অনেকেই যে দাবী করেছিলেন, দ্রুত সামরিক পদক্ষেপ নিলে আরও রক্তপাত এড়ানো যেত, এই ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করে নিজের অবস্থানকেই সঠিক হিসেবে তুলে ধরেছেন।

মরিয়ার্টি নিজেও এই ধারনাকে সমর্থন করে নোটে লিখেছেন সমস্ত হত্যা বিদ্রোহের দুই ঘণ্টার ভেতরেই সম্পন্ন হয়েছিলো। হাসিনা আরও বলেছেন, সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করলে রক্তপাত আরও বেড়ে যেতো এবং হিতে বিপরীত হতে পারতো। কেন এই বিদ্রোহ সংঘটিত হলো বা কারা আছে এর পেছনে? - এই সব প্রশ্নের উত্তর রাজনৈতিকভাবেই দিয়েছেন হাসিনা। মরিয়ার্টিকে তিনি একাধিকবার বলেছেন, এটা সরকারের বিরুদ্ধে একটা গভীর চক্রান্ত। এমনকি এই নিয়ে গৃহযুদ্ধ বেধে যেতে পারে, এমন আশংকাও করেছেন তিনি।

এছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন এই রক্তপাতের জন্য বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সাথে সাথে মহাজোটের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মু এরশাদকেও সমানে দুষেছেন তিনি। হাসিনার অভিযোগ, এরশাদ বসে বসে সমালোচনা না করে, সরকারের পক্ষে মাঠে নামলে হয়তো আরও ভালোভাবে বিদ্রোহ দমন করা সম্ভব হতো। এছাড়া প্রশাসন নিয়েও মরিয়ার্টির কাছে নিজের অসহায়ত্ব তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। বোঝাই যাচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থার উপর আস্থাহীনতা, আমলাদের অসহযোগিতা সহ বিভিন্ন কারণে সরকার পরিচালনায় বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তাকে। এছাড়া পুলিশের উপরও আস্থাহীনতার কথা ফুটে উঠেছে তার কথায়।

এমনকি তিনি এটাও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন ঘটনা বা কাজের জন্য তিনি তার দলের সদস্যদের উপরই নির্ভরশীল। নথির একেবারে শেষে বিদ্রোহ পরবর্তী পুনর্গঠনে প্রধানমন্ত্রীর অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে, মরিয়ার্টি গণতন্ত্রের স্বার্থে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া জরুরী বলে মত প্রকাশ করেছেন। সেনা বিদ্রোহের মতো গুরুতর বিষয়ে এফবিআই বা এই ধরনের শক্তিশালী সংস্থার সাহায্য ছাড়া সরকারের একার পক্ষে এই রহস্য উদঘাটন করা কঠিন - এমন মতামত দিয়ে বার্তা শেষ করেছেন তিনি। Reference ID: 09DHAKA263 Classification: SECRET Origin: Embassy Dhaka ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.