আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাণিজ্য মন্ত্রী ফারুক খানের কম খাওয়ার পরার্মশকে কট্টাক্ষ করে পরিবহন শ্রমিক মানিক মিয়া বলেন, ‘হ্যারে যদি একবার সামনে পাইতাম তাইলে তার উপরে গাড়ি তুইল্যা দিয়ে কইতাম মাফ কইর‌্যা দিয়েন স্যার। দেহি নাই। তহন বুঝত মাস কয়দিনে যায়।’

ভালো নেই পরিবহন শ্রমিকরা তাহজিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ঢাকা: সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে বলাকা পরিবহন সার্ভিসের বাসে খোশগল্প করছেন একই সার্ভিসের কয়েকজন চালক, হেলপার আর সুপারভাইজার। ঈদের ঐ ব্যস্ত সময় খোশগল্পের কারণ জানতে চাইলে তারা তাদের দুঃখের কথা বলেন। বলাকা পরিবহন সার্ভিসের সুপারভাইজার বাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের এই ব্যস্ত সময় যাত্রীর চাপ নেই। হাতে কাজও নেই। তাই বেকার বসে আছি।

তিনি আরো বলেন, একদিকে জিনিস পত্রের অনেক দাম, অন্যদিকে হাতে কাজ নেই। ঈদের কেনা-কাটা কি করব? ঘরের চালই কিনতে পারছিনা। এক সময় নিজের মুখ মন্ডল দেখিয়ে তিনি বলেন, দ্যাখেন টাকার অভাবে সেভ করতে পারছি না। আমার মুখের যেমন ছিন্নবিন্ন অবস্থা, আমার পরিবারের একই অবস্থা। চালক সাইদুল জানান, বউয়ের কিছু স্বর্ণের অলংকার আছে যেগুলো বন্ধক দিয়ে ঈদের কিছু কেনা কাটা করব।

পরে আবার বাজার চাঙ্গা হলে কিছু আয়-রুজি করে সেগুলো ফেরত নিয়ে আসব। আগের ঈদগুলোতে দুরের রিজার্ভ ট্রিপ পাওয়া যেত। এই ভাঙ্গা রাস্তার যুগে তাও আর সম্ভব নয়। এ সময় চালক সাইদুলকে থামিয়ে দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রী ফারুক খানের কম খাওয়ার পরার্মশকে কট্টাক্ষ করে পরিবহন শ্রমিক মানিক মিয়া বলেন, ‘হ্যারে যদি একবার সামনে পাইতাম তাইলে তার উপরে গাড়ি তুইল্যা দিয়ে কইতাম মাফ কইর‌্যা দিয়েন স্যার। দেহি নাই।

তহন বুঝত মাস কয়দিনে যায়। ’ সরেজমিনে দেখা গেছে, এই অবস্থা শুধু বলাকা পরিবহনের নয়। সবগুলো পরিবহনের এই দুরাবস্থা বিরাজ করছে। বিভিন্ন পরিবহন সার্ভিসের ২০ থেকে ৪০ ভাগ শ্রমিক বেকার। বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, সারি সারি গাড়ি টার্মিনালে দাঁড়িয়ে আছে।

গাড়ির অনুপাতে যাত্রীর সংখ্যা কম। হেলপারদের বিভিন্ন স্থানের যাত্রীদের জন্য হাঁক-ঢাক করতে দেখা গেছে। যাত্রী কম থাকার কারণ হিসেবে চাঁদপুর রুটের দুলাল এন্টারপ্রাইজের সুপারভাইজার মজিদ মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ‘রাস্তাঘাট ভাঙ্গা। তাই মানুষ এখন গাড়ির বদলে ট্রেন বা নৌকায় চলাচলে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। অনেকে আবার ঢাকাতেই ঈদ করছেন।

’ একই কথা বলেন এশিয়া এন্টারপ্রাইজের ড্রাইভার কিরণ মিয়া, তিশা এন্টারপ্রাইজের ড্রাইভার সারোয়ার কবীর। একজন উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা ফারুক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে ছুটি পেলেও এবার আর বাড়ি যাব না। ঢাকাতেই থাকবো। রাস্তাঘাটের যে অবস্থা। পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকার ঐতিয্যবাহী স্থানগুলো ঘুরে বেড়াব।

সব মিলিয়ে এবারের পরিবহন শ্রমিকদের ঈদে তেমন আনন্দ থাকবে না। ভাঙ্গা রাস্তার মতো তাদের ঈদের দিনগুলো কাটবে অভাব অনটনে। বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘন্টা, আগস্ট ২৯, ২০১১ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।