১৯৩৬ সালে তৈরি হওয়া ‘এইচ ১০০৭’ নম্বরের টেলিভিশনটি হচ্ছে ব্রিটেনের সবচেয়ে পুরোনো টেলিভিশন। সাম্প্রতি এই টেলিভিশন সেটটি নিলামে উঠেছে। যখন একটি কাচের পর্দায় কোনো কিছুর জীবন্ত নড়াচড়া মানুষের কাছে ছিল এক আশ্চর্যজনক বা ঐন্দ্রজালিক বিস্ময়, এই টেলিভিশন সেই সময়কার। মার্কিন কোম্পানির তৈরি ৭৫ বছর বয়সী এই সেটটি এখনো কার্যক্ষম।
লন্ডনের ‘বোনহামস মেকানিক্যাল মিউজিক অ্যান্ড সায়েন্টেফিক ইন্সট্রু্রুমেন্টস গত ১৯ এপ্রিল এই নিলামের আয়োজন করে।
পাঁচ হাজার পাউন্ড ছিল এর নিলামের সূচনামূল্য। ৭৫ বছর পূর্বে আলোচিত এই টেলিভিশনটি কিনেছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের জিবি ডেভিস নামে এক ব্যক্তি। আখরোট এবং মেহগনি কাঠের আচ্ছাদনে সজ্জিত ১২ ইঞ্চি পর্দার টিভিটি কিনতে সেই সময় ডেভিসের খরচ হয়েছিল ৯৯ পাউন্ড। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এই অর্থের তুলনামূল্যে এ দামই তখন বিলাসী পর্যায়ের। অথচ ডেভিস এই রাজসিক যন্ত্রের তেমন কোনো বিশেষ ব্যবহার করতে পারেননি।
ক্রয়ের পর সব মিলিয়ে মাত্র তিন দিন তিনি টিভিতে অনুষ্ঠান দেখার দুর্লভ সুযোগ পান। কারণ, তিনদিনের মাথায় এর অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ট্রান্সমিটার কেন্দ্র ‘ক্রিস্টাল প্যালেস’ আগুনে পুড়ে যায়। সে-সময় প্রতিদিন মাত্র এক ঘণ্টার জন্য অনুষ্ঠান সম্প্রচার হতো।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আবার ১৯৪৬ সালে ক্রিস্টাল প্যালেস চালু হয়। কিন্তু ততদিনে কেভিসের এই আশ্চর্যজনক বাক্স শুধুই অকেজো যন্ত্রের মতো পড়েছিল, তারপর বাড়িতে মানুষের ঢল নামত প্রতিদিন যন্ত্রটির অবকাঠামো দেখার জন্য।
১৯২৬ সালে জন লগি বেয়ার্ড প্রথমবারের মতো টেলিভিশনকে মানুষের হাতে আনেন। তার কোম্পানি টেলিভিশনের পথিকৃত্ হলেও মার্কনি কোম্পানির টেলিভিশন তখন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পায়। উল্লিখিত ডেভিসের টেলিভিশনের মাত্র ৩০ শতাংশ যন্ত্রাংশ এ পর্যন্ত মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু এখনো এর পর্দার চলমান ছবি ঝকঝকে।
পাঠক, এই টেলিভিশনের বর্তমান মালিকও একজন দক্ষিন আফ্রিকান ব্যাবসায়ী-যিনি নিলামে এক লক্ষ ষোল হাজার পাউন্ড ব্যয় করে এই টেলিভিশনের মালিক হয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করেন।
সূত্রঃ দ্যা অকশন নিউজ ম্যাগাজিন থেকে সংগৃহিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।