আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

||রোবটিক্স||

ধূলোমাখা জানালা ছুঁয়ে যখন নির্লিপ্ত বোবা আলোটা আমার বন্ধ ঘরের দেয়ালে আঁচড়ে পড়ে তখন দীর্ঘশ্বাস গুলো শুধু দীর্ঘায়ত হয় এই ভেবে কেন আমি ঐ বোবা নির্লিপ্ত আলোটার মত না। 565 রোবট নিয়ে যে বিজ্ঞান বা শাখার উৎপত্তি তার নাম হচ্ছে রোবটিক্স। রোবট শিল্পে যেটার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স সংক্ষেপে AI । রোবট একটা যন্ত্র। যাকে কোন কাজ বা উদ্দেশ্যে প্রোগাম করলে সে কাজ সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করে।

রোবট দুই ধরনের হতে পারে, একটা হচ্ছে মেকানিক্যাল আরেকটা হচ্ছে ভার্চুয়াল। এ দুই ধরনের রোবোটের প্রধান উপাদান হচ্ছে একটা মেশিন ও একে কাজে লাগানোর নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম। প্রথম প্রথম রোবট তৈরি করা হয় গবেশনাকে সাহায্য করার জন্যই। অনেক কাজ রয়েছে যে সব কাজ একটি সাধারন বিজ্ঞানী নিজে নিজে করতে কয়েক বছর কেটে যাবে , কিন্তু রোবটকে কাজে লাগিয়ে সে কাজ কয়েক দিনেই করা সম্ভব। তা ছাড়া নাসা সহ বিভিন্ন গবেশনা সংস্থা নিয়মিত রোবটকে কাজে লাগিয়ে আসছে, আর তার অনেক কিছুই মহাকাশ গবেশনায়।

রোবট আর আধুনিক টেলিস্কোপের কল্যানে মহাকাশ সম্পর্কে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি। এখন আবার কৃষি গবেশনায় ও রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে, কোন স্থানের মাটি রোবটের সাহায্যে পরীক্ষা করা হয়। ঐ মাটিতে কি ধরনের ফসল উৎপন্ন করা যাবে, কি কি সার, কিটনাশক ব্যবহার করতে হবে এসব কিছু ঐ রোবটিই বলে দিচ্ছে। মানুষের মত দেখতে রোবট গুলোকে বলা হয় Humanoid Robot। এ গুলো হচ্ছে Synthetic Organism যা পুরোটাই মানুষের মত দেখতে।

Synthetic Organism গুলো Synthetic Biology এর সাহায্যে তৈরি করা হয়। Synthetic এর বাংলা করলে দাঁড়ায় সাংশ্লেষিক যা আসছে Synthesis বা সংশ্লেষণ থেকে। দুই বা ততোদিক পদার্থের সংযোগে নতুন আরেকটি পদার্থ তৈরির পক্রিয়া হচ্ছে Synthesis বা সংশ্লেষণ। আর Synthetic Biology বা সাংশ্লেষিক জীব বিজ্ঞান একত্রে বিজ্ঞান ও প্রকৈশল কে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানের একটি বিশেষ শাখা। যে সকল রোবট গুলো দেখতে মানুষের মত এবং মানুষের মত six sense বা ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় রয়েছে সেগুলোই মূলত Android ।

Humanoid Robot গুলোকে মানুষের মত লিঙ্গ অনুযায়ী বা স্ত্রী-পুরুষ ভেদে ভাগ করা হয়েছে। Android বলা হয় পূরুষ Humanoid রোবট গুলোকে, আর Gynoid বলা হয় মহিলা বা মেয়ে Humanoid রোবট গুলোকে। Humanoid Robot এ, Humanoid Robot রোবট গুলো হচ্ছে স্বাধীন। এ গুলো নিজেকে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারে। যদি কোন লক্ষ্যে এদের পাঠানো হয় তাহলে পথে কোন বাঁধা থাকলে নিজের মত করে চিন্তা করে এবং প্রয়জনীয় পদক্ষেপ নিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে।

আর এ ক্ষমতাই হচ্ছে অন্যান্য রোবট গুলোর সাথে Humanoid Robot বা মানবিক রোবট গুলোর প্রধান পার্থক্য। মানবিক রোবট গুলোর কিছু বৈশিষ্ট বা ক্ষমতাঃ • নিজস্ব ভরণপোষন • স্বাধীন ভাবে শিখার ক্ষমতা- যা খুবি বিপদ জনক। কারন এরা নিজে নিজেই পরিবেশ থেকে শিক্ষা নিতে পারে অন্য কারো সাহায্য ছাড়া। • ক্ষতিকর কোন কিছু বর্জন করা। • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আছে, যার সাহায্যে পরিবেশ বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

মানুষকে নিয়মিত করতে হয় এমন কাজ যেন রোবট গুলো করতে পারে, এমন ভাবে অনুকরন করে বর্তমান Humanoid Robot গুলো তৈরি করা হয়। Humanoid Robot গুলো অনেক ধরনের বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞ যেমন, ডাক্তার, প্রকোশলী, ভাষাতত্ত্বে পারদর্শী সবাই মিলে এক সাথে তৈরি করে। যেহেতু এগুলো মানুষকে নকল করে তৈরি করা হয় তাই এদের সিস্টেমটা একটি স্বাধীন এবং অন্যান্য রোবট গুলো থেকে অনেক জটিল হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে এক সাথে ইন্দ্রিয় বা সেন্স, পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, বিরূপ পরিবেশে স্বাধীন ভাবে চিন্তা করে কাজ করার ক্ষমতা, পাওয়ার শেষ হয়ে আসলে নিজে নিজেই ব্যবস্থ্যা নেওয়ার সহ অনেক গুলো সিস্টেম থাকে। Gynoid বা Female robot রোবট গুলো দেখতে ঠিক মেয়ে বা মহিলাদের মত।

এ গুলোর মধ্যে রয়েছে মেয়েদের সব বৈশিষ্ট। যে কিনা আপনার সাথে গল্প করতে পারবে। আপনার দুঃখে দুঃখি হতে পারবে, আবার আপনার সুখ ও ভাগ করে নিবে। যাদের গার্ল ফেন্ডনেই তারা একটা জোগাড় করে নিতে পারেন। নিছের ছবিটি দেখুনঃ ছবিঃ একটি Gynoid ছবিঃ Enon এ রোবটটির নাম হচ্ছে Enon, এটি মানুষের সহকারী হিসেবে কাজ করতে পারে।

২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক রোবট প্রদর্শনীতে TOPIO 1.0 প্রদর্শন করা হয় যা একটা হিউম্যানয়েড রোবটঃ চিত্রঃ TOPIO 1.0 এটির মধ্যে পা ছিল ৬টি। এর পর ২০০৯ সালে এর দ্বিতীয় ভার্সন করা হয় । চিত্রঃ TOPIO 2.0 একই বছর টোকিওতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক রোবট প্রদর্শনীতে TOPIO 3.0 প্রদর্শন করা হয়। ছবিঃ TOPIO 3.0 TOPIO এর পূর্ন রূপ হচ্ছে TOSY Ping Pong Playing Robot, যা রোবট প্রস্তুত কারক প্রতিষ্ঠান TOSY ডেবলপ করে। TOPIO রোবটটি মানুষের সাথে টেবিল টেনিস খেলতে পারে।

হুন্ডা কোম্পানি ডেবলফ করে আরেকটি হিউম্যানয়েড রোবট যার নাম ASIMO । ছবিঃ ASIMO উচ্চ কর্মক্ষমতার কারনে রোবট অনেক কাজে ব্যবহৃত হয়, তার কিছু উদাহরনঃ ছবিটিতে দেখতে পাচ্ছেন কঠিন ধাতু গুলো গলানোর কাজে ব্যবহৃত একটি রোবট । অতি উচ্ছ তাপে রোবটটি নির্ভুলতা এবং দ্রুততার সাথে কাজ করে যাচ্ছে যেখানে মানুষ কাজ করা তো দূরে থাক যাওয়ার কথাও চিন্তা করতে পারবে না। ওয়েলডি এর কাজে ব্যবহৃত একটি রোবট। যেটি এক সাথে অনেক গুলো ওয়েলডিং করতে পারে।

ছবিঃ ল্যাপরোস্কপিক সার্জিকেল রোবট। ছবিটিতে দেখুন একটা ল্যাপরোস্কপিক সার্জিকেল রোবট। যা সহজেই মানুষের ল্যাপরোস্কপিক অপারেশন করতে পারে। ছবিঃ Engkey নামক এ রোবটটি শিক্ষকতা করছে। ছবি: Toyota'র তৈরি একটি রোবট।

violin বাজাচ্ছে । violin প্রেমিরা চাইলে কিনতে পারেন। ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রোবট গুলোর সাথে হিউম্যানয়েড রোবটের অনেক গুলো পার্থ্যক্য রয়েছে, তার মধ্যে একটি বড় পার্থক্য হচ্ছে চলন। ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রোবট গুলো চলতে পারে না, বা পারলে ও নির্দির্ষ্ট সীমার ভিতর। কিন্তু হিউম্যানয়েড রোবট গুলো মানুষের মত পা ব্যবহার করে চলতে পারে,এবং স্বাধীন ভাবেই চলতে পারে।

তবে আক্ষেপের বিষয় হচ্ছে এ সব রোবট গুলো মানুষের মত লাফ ঝাফ দিতে পারে না। এটা অনেক বড় একটা সমস্যা। তথ্য সূত্র :- ইন্টারনেট।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।