আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেদের চমৎকার কিছু বাণীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো আজকে। মন দিয়ে পড়ে দেখুন

অযথা ক্যাচাল পছন্দ না, তাই তালগাছবাদীরা দূরে থাকুন বেদের আস্তিকতা সহজ সরল নির্ভেজাল একেশ্বরবাদে বিশ্বাস । প্রভূ একক, অদ্বিতীয় এবং সর্ব শক্তিমান । দৃশ্যমান সকল শক্তির পেছনে রয়েছে তারই মহাশক্তি । সকল আলোর নেপথ্যে রয়েছে তার-ই মহাজ্যোতি । অঙ্গের নড়াচড়ায় মানবদেহে আত্নার উপস্হিতি যেমন স্বীকৃত হয়, তেমনি স্রষ্টার সৃষ্টির সুপরিকল্পিত গতিশীলতার দিকে তাকালেই মহাশক্তিমান প্রভূকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি ।

---স্বামী সত্যপ্রকাশ সরস্বতী । ১. সদা-সর্বত্র বিরাজমান তন্দ্রা-নিদ্রাহীন সদা সজাগ প্রতিনিয়ত করূণা বর্ষণকারী সর্বশক্তিমান হে প্রভূ ! আমরা শূধু তোমারই মহিমা স্বরণ করি, তোমারই জয়গান গাই । প্রভূ হে ! আমাদের সর্বোত্তম আত্নিক পথে, আলোকিত পথে পরিচালনা করো । আমরা যেন সব-সময় সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকে অনূধাবন করতে পারি । [ঋগবেদঃ ৩.৬২.১০] ২. সত্যজ্ঞানী তিনিই, যিনি জানেন প্রভূ এক এবং অদ্বিতীয় ।

তিনি সর্বশক্তিমান এবং সর্ব বিষয়ে একক ক্ষমতার অধিকারী । প্রাণ এবং নিষ্প্রাণের সব-কিছুই তার নখদর্পণে । সকল ক্ষমতার কেন্দ্র তিনি একক অনন্য । [অথর্ব বেদঃ ১৩.৫.১৪-২১] ৩. স্বর্গীয় জ্যোতি ও আনন্দ উপলব্ধির প্রতীক 'ওম' স্পাপিত হোক তোমার হৃদয়ে অনন্তকালের জন্য । [যর্জুবেদঃ ২.১৩ ] ৪. মহাপ্রভূর দৃষ্টিতে কেউই বড় নয়, কেউই ছোট নয়, সবাই সমান ।

প্রভূর আর্শীবাদ সবারই জন্য । [ঋগবেদঃ ৫.৬০.৫] ৫. হে নেতা ! হে পুরোধা ! ঈশ্বরের গুণাবলীতে গূণান্বিত হও । [যর্জূবেদঃ ১.১৮] ৬. বিশ্বাসীর হৃদয়েই প্রভূ বসবাস করেন । আমাদের দেহই হোক প্রভূর মন্দির । আমরা যেন চিরদিন তাঁর সত্যিকারের দাস হিসেবে থাকতে পারি ।

আমাদের জীবনের সকল অর্জন তার চরণে সমর্পণ করতে পারি । [ঋগবেদঃ ১.৯১.১৩] ৭. অলস মস্তিস্ক কু-চিন্তার সহজ শিকার । [ঋগবেদঃ ১০.২২.৮] ৮. মন চলে যায় আকাশে, পাতালে, পাহাড়ে, সাগরে । মনকে নিয়ে আসো নিজেরই অন্তরে, যেন তা থাকে তোমারই নিয়ন্ত্রণে । [ঋগবেদঃ ১০.৫৮.২] ৯. স্রষ্টা প্রেমের অমিয়ধারা প্রবাহিত হোক আমাদের অন্তরে, আমাদের শিরায় শিরায় ।

তাহলেই আমরা সকল প্রতিকূলতার মুখোমুখি দাড়াতে পারব প্রশান্ত হৃদয়ে । [ঋগবেদঃ ৮.৩২.১২] ১০. হে নেতা ! হে পুরোধা ! পাহাড়ের মত দৃঢ় ও অজেয় হও । কর্তব্য পালনে সব-সময় অবিচল থাকো । [যজূর্বেদঃ ১২.১৭ ১১. যারা সৎপথে কঠোর পরিশ্রম করেন এবং পরস্পরকে সহযোগিতা করে তাদেরকেই প্রভূ সাহায্য করেন । [ঋগবেদঃ ৪.২৩.৭] ১২. সৎকর্ম মানুষকে দৃঢ় ও সাহসী করে ।

দেহ মনকে রোগ ও পাপ থেকে মুক্ত রাখে । সকল প্রতিকূলতার ওপর বিজয়ী করে । [ঋগবেদঃ ৫.১৫.৩] ১৩. হে মানুষ স্বনির্ভর হও ! বাইরের সাহয্যের দাসে পরিণত হয়ো না । [যর্জুবেদঃ ৬.১২] ১৪. হে মানুষ ! উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে আন্তরিকতার সাথে পরিশ্রম করো । দারিদ্রতা ও অসুস্হতা তোমার কাছ থেকে পালিয়ে যাবে ।

[অথর্ববেদঃ ৬.৮১.১] ১৫. কখনো জুয়া খেলবে না । পরিশ্রমলব্ধ সম্পদ ভোগ কর ও পরিতৃপ্ত থাকো । পরিশ্রমলব্ধ সম্পদই সত্যিকারের সুখ দিতে পারে । [ঋগবেদঃ ১০.৩৪.১৩] ১৬. জীবনের প্রতিটি স্তরে সব ধরনের ঋণ থেকে মুক্ত থাকো । [অথর্ববেদঃ ৬.১১৭.৩] ১৭. হে নেতা ! হে পুরোধা ! নির্ভীকভাবে সত্য ভাষণের নৈতিক শক্তিতে তোমাকে বলীয়ান হতে হবে ।

[ঋগবেদঃ ৮.৪৮.১৪ ] ১৮. হে প্রভূ ! আমাদের সর্বোত্তম সম্পদ দান করো; দান করো কালজয়ী মন, আত্নিক সুষমা, অনন্ত যৈাবন, আলোকজ্জ্বল রূপ আর মধুর বচন । [ঋগবেদঃ ২.২১.৬] ১৯. স্বনির্মিত সহস্র শৃংখলে মানুষ-ই নিজেকে বন্দী করে রেখেছে । [ঋগবেদঃ ৫.২.৭] ২০. হে মানুষ ! ওঠো! দাড়াও ! পতিত হওয়া তোমার স্বভাবজাত নয় । জ্ঞানের আলোকবর্তিকা শুধুমাত্র তোমাকেই দেওয়া হয়েছে যা দিয়ে তুমি সকল অন্ধকূপ এড়িয়ে যেতে পার । [অথর্ববেদঃ ৮.১.৬] ২১. কর্কশ স্বরে কথা বলো না, তিক্ত কথা যেন মুখ ফসকে বেরিয়ে না যায় ।

[যর্জুবেদঃ ৫.৮] ২২. হে প্রভূ ! সামর্থ্য দাও উদ্দীপনাময় সুন্দর ও সাবলীল কথা বলার । [ঋগবেদঃ ১০.৯৮.৩] ২৩. সত্যিকারের ধার্মিক সব সময় মিষ্টভাষী ও অন্যের প্রতি সহমর্মী । [সামবেদঃ ২.৫১] ২৪. সমাজকে ভালোবাসো । ক্ষুধার্তকে অন্ন দাও । দুর্গতকে সাহায্য করো ।

সত্য ন্যায়ের সংগ্রামে সাহসী ভূমিকা রাখার শক্তি অর্জন করো । [ঋগবেদঃ ৬.৭৫.৯] ২৫. নিঃশর্ত দানের জন্য রয়েছে চমৎকার পুরস্কার । তারা লাভ করে আর্শীবাদ ধন্য দীর্ঘ জীবন ও অমরত্ব । [ঋগবেদঃ ১.১২৫.৬] ২৬. এসো প্রভূর সেবক হই ! গরীব ও অভাবীদের দান করি । [ঋগবেদ ঃ ১.১৫.৮] ২৭. নিজের শত্রুকে বিনাশে সক্ষম এমন উপদেশাবলির প্রতি মনযোগী হও ।

[যর্জুবেদঃ ৬.১৯] ২৮. ধনুকের তীর নিক্ষেপের ন্যায় হৃদয় থেকে ক্রোধকে দূরে নিক্ষেপ করো । তাহলেই তোমরা পরষ্পর বন্ধু হতে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে । [অথর্ববেদঃ ৬.৪২.১] ২৯. জীবনের প্রতিটি স্তরে অনিয়ন্ত্রিত রাগ-ক্রোধ থেকে দূরে থেকো । [সাববেদঃ ৩০৭] ৩০. একজন নিরীহ মানুষের ক্ষতি যে করে সে মানুষ নয়, সে হায়েনা । তার কাছ থেকে দূরে থাকো ।

[ঋগবেদঃ ২.২৩.৭] ৩১. ঈর্ষা থেকে হৃদয়কে মুক্ত করো । সহিংসতা থেকে বিরত থাকো । [সামবেদ-২৭৪] ৩২. যে ক্ষুধার্ত সঙ্গীকে অভুক্ত রেখে একাই ভূরিভোজ করে এবং যে স্বার্থপর তার সাথে কখনো বন্ধুত্ব করো না । [ঋগবেদ-১০.১১৭.৪] ৩৩. হে মানবজাতি ! তোমরা সম্মিলিতভাবে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত হও । পারস্পরিক মমতা ও শুভেচ্ছা নিয়ে একত্রে পরিশ্রম করো ।

জীবনের আনন্দে সম-অংশীদার হও । [অথর্ববেদ-৩.৩০.৭] ৩৪. হে মানুষ ! সুষম জীবনাচার অনুসরণ করো । ধরিত্রী থেকে আহৃত খাবার ও পানীয় সমভাবে বন্টন করো, একটি চাকার শিকগুলো সমভাবে কেন্দ্রে মিলিত হলে যেমন গতির সন্চার হয়, তেমনি সাম্য-মৈত্রীর ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হও । তাহলে অগ্রগতি অবধারিত । [অথর্ববেদ-৩.৩০.৬] ৩৫. অনন্ত প্রশান্তির জন্য আমরা মহাপ্রভূর ধ্যান করি ।

[অথর্ববেদ-১৯.৯.৪] ৩৬. যোগ-ধ্যানের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি জ্ঞান, সৌন্দর্য ও ক্ষমতা । আর স্বর্গীয় জ্যোতিতে স্নাত হয়ে লাভ করি পরম প্রশান্তি ও তৃপ্তি । [যর্জুবেদ-১১.২] ৩৭. সবুজ উপত্যকার নির্জনতায় ঋষিরা লাভ করেন সজ্ঞা / প্রজ্ঞা । [ ঋগবেদ - ৮.৬.২৮] ৩৮. সত্যকে তিনি-ই উপলব্ধি করেছেন , যিনি জানেন দৃশ্যমান সুতোর ভেতরে প্রবহমান রয়েছে অদৃশ্য সুতো । [ অথর্ববেদ-১০.৮.৩৭] ৩৯. ব্রক্ষার সাথে এক হয়ে যাওয়াই পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ।

[ অথর্ববেদ- ৭.১০০.১] ৪০. একজন সমর্পিতের মতো বাচো এবং কাজ করো । তাহলেই তুমি পরিতৃপ্ত সফল জীবনের অধিকারী হতে পারবে । অমর হতে পারবে । [ অথর্ববেদ- ১৫.১৭.১০] ৪১. আদিতে তিনি-ই ছিলেন । সৃষ্টির সবকিছুর উৎসও তিনি-ই ।

সমগ্র অস্তিত্বের তিনি-ই প্রভূ । আকাশ ও ভূ-মন্ডলে বিরাজমান সবকিছূর তিনি-ই লালনকারী । অন্য কারো কাছে নয়, শুধুমাত্র সেই মহাপ্রভূর কাছেই আমাদের সবকিছূ সমর্পন করছি । [অথর্ববেদ- ৪.২.৭] এটির মুল উৎস হচ্ছে উৎসঃ পন্ডিত সত্যকাম বিদ্যলংকার -এর ইংরেজী অনুবাদ The Holy Vedas থেকে কিছু বাণীর সরল বাংলা মমার্থ । প্রকাশিত হয় -কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন দ্বারা ।

তবে আমি হিন্দু ধর্ম নিয়ে আমাদের সাইটের এই পেজ থেকে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। ভালো থাকবেন সবাই। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।