আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবোল তাবোল!

টুইটারে আসেন, আড্ডা দেই। @smnawed সুকুমার রায়ের ছড়া থেকে কিছুটা ইন্সপিরেশন পেয়েছি বটে তবে এই "আবোল তাবোল" কয়েকজন যুবকের শিল্পের নন-কমার্শিয়াল জায়গাকে বাঁচিয়ে রাখার একটি ছোট্ট প্রয়াস। গত বছর এমন সময় আমি আর নিপুন চিন্তা করছিলাম একটা খোলা যায়গায় ছবির এক্সিবিশন করা যায় কিনা। বুয়েটের আর্কি অন্জনও এক কথায় রাজি হয়ে যায়। সেই থেকেই প্ল্যানিং শুরু।

সবাই গ্যালারীতে যেভাবে ক্যানভাসগুলোকে আলো আধারীর খেলায় সাজিয়ে রাখে, তাতে অনেক সাধারণ ছবিও কিনতে ইচ্ছে করে। কিন্তু সবাই তো আর অত টাকা খরচ করে এক্সিবিশন করতে পারে না। খরচের খাতগুলোই দেখুন না: ১। ছবি প্রিন্ট ২। ফ্রেম বাঁধাই ৩।

ব্যানার ৪। পোস্টার ৫। গ্যালারীর ভাড়া ৬। ইনভিটেশন কার্ড প্রিন্ট করা ৭। ছবি টাঙানো ৮।

লাইট সেটাপ ৯। প্রেস রিলিজের জন্য সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ এবং নাস্তা এছাড়াও একগাদা প্রিপারেশন তো আছেই...! এত ঝক্কি ঝামেলার পর যদি আপনার পর্তাটাও না ওঠে, তবে তো সর্বনাশ!! "আবোল-তাবোল" বিশ্বাস করে, "দশে মিলে করি কাজ..."। এই তত্ত্বে থেকেই আমাদের যাত্রা শুরু করি গত বছর ডিসেম্বর মাসের ৪ তারিখে। ঢাকা ভার্সিটির মল চত্বরে আমাদের প্রথম আবোল তাবোলে অংশ নেয় প্রায় ৫০ জন - কেউ স্কেচ, কেউ পেইন্টিং, কেউ কবিতা, কেউ ফটোগ্রাফ - শিল্পের বিভিন্ন মাধ্যমকে খোলা আকাশর নিচে সবার জন্য উন্মুক্ত প্রদর্শনীই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। এখানে ছবি ঝুলানো হয় গাছের সারিতে নাইলন স্ট্রিং ঝুলিয়ে দিয়ে।

একটা ভাল কাজ শুরু করলে কিভাবে যে এত সাপোর্ট চলে আসে, আজ পর্যন্ত আমি তা কোনও হিসাবে মিলাতে পারি নাই। তা না হলে, হুট করেই সুবর্না আর তাসরিনের মত ট্যালেন্টদের সাথে কেনই বা ঠিক সেই সময়েই পরিচয় হবে! অন্জনের ডাকে বুয়েটের এতজন চলে আসল, আমি টেরই পেলাম না কিভাবে সব ম্যানেজ হচ্ছে। শীতার্তদের জন্য যত টাকা মানুষ দান করেছিল তার পুরোটাই দিয়ে দেয়া হয় শীতবস্ত্র বিতরণে। এক্সিবিশনের পর আরও অনেকেই "আবোল তাবোল-এ যোগ দেয়। মানুষের মাঝে এই বিপূল উৎসাহ দেখেই আমরা দ্বিতীয়বার করার উদ্যোগ নেই।

সেবার কলাবাগান মাঠে যখন নানী-নাতি একসঙ্গেই ছবি আঁকতে বসল, তখন মনে হ'ল এর চেয়ে আর কি বেশী আমরা পেতে পারি। শিল্প দুই জেনারেশনকে এক টেবিলে বসাতে পেরেছে, এই তো প্রাপ্তি। কোটি টাকা দিয়েও কিনতে পারবে না কেউ এই আনন্দ। এর পর আমরা গুলশান লেডিস পার্কে (কেউ কেউ বলে ট্যান্ক পার্ক) তৃতীয়বারের মত প্রদর্শনী করি। এবার কিছু ছবি বিক্রিও হলো।

আমাদের মত আরও নতুন কিছু পাগলও পেলাম। এখন হাতে আমাদের প্রায় ২০০ ছবি চলে আসছে। এই শীতকাল আসলেই আবার নামব মাঠে। চাইলে আপনিও আসতে পারেন। যে কোনও রকম ছবি দিলেই চলবে।

আমরা ভাবছিলাম, বৃষ্টির ভেতর পলিথিনে ছবি এঁকে কোথাও পরবর্তী প্রদর্শনী করলে কেমন হয়? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।